প্রিয় বিয়োগে মিছিলের চোখে জল!
পিতার দেহ নিয়ে মিছিলের মুখ প্রিয়-পুত্র মিছিল দাশমুন্সি। বাবার দেহ কাঁধে নিয়ে মিছিলে মিলিয়ে গেলেন `মিছিল`।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বাড়ির দুর্গা পুজোয় ধুনুচি নাচতে নাচতেই হার্ট অ্যাটাক! চিকিৎসার জন্য সেই যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ফিরলেন প্রায় এক দশক পর। ৯ বছরেরও বেশি সময় পার করে কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে ফিরলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। নিথর দেহে, কফিনবন্দি 'প্রিয় দা'! সঙ্গে প্রিয়-জয়া দীপা এবং পুত্র মিছিল।
আরও পড়ুন- 'রাজনীতির কথা শুনেই মাথা নাড়াতেন প্রিয়'
খবরটা পৌঁছেছিল সোমবারই। তখন বেলা ১২.১০ মিনিট। তার পর থেকে কেবলই অতিকায় এক একটা অপেক্ষার মুহূ্র্ত অতিক্রম করা শুরু কালিয়াগঞ্জের। কখন আসবে 'প্রিয় দা'? কখন বাবাকে শেষ বার ভিটেয় নিয়ে আসবে মিছিল? অবশেষে অপেক্ষার অবসান। বরাবরের মতো আজও 'প্রিয় দা'র কালিয়াগঞ্জের বাড়ির দ্বার অবারিত। কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন, 'প্রিয় দা'কে দেখতে। 'দাদা' ঘুমচ্ছেন! চোখ বন্ধ। কাঁদছে লাখো মানুষের ভিড়। চোখের জলে বাঁধ দিতে পারল না কালিয়াগঞ্জের 'অতিথি' মিছিলও। বিদেশ বিভূঁইয়ে থাকা প্রিয় পুত্র মিছিলের চোখের জলও মিশে গেল সেই জনতার অশ্রুতে।
আরও পড়ুন- দ্বিতীয়বার পিতৃহারা হলাম : সুব্রত মুখোপাধ্যায়
তাঁর মতোই রাজনীতিতে আসুক ছেলে। মানুষের মিছিলের নেতৃত্ব দিক প্রিয় পুত্র। সেই বাসনাতেই একমাত্র ছেলের নাম দিয়েছিলেন 'মিছিল'। এখনও পর্যন্ত সেভাবে রাজনীতির মঞ্চে দেখা যায়নি মিছিলকে। নির্বাচনী প্রচারে মায়ের সঙ্গী হয়েছেন কয়েকবার। তবে এখনও সেভাবে মিছিলে নেই মিছিল দাশমুন্সি। কিন্তু হেমন্তের অন্য দিনগুলির থেকে আজকের দিনটা একেবারে আলাদা। পিতার শেষ যাত্রায় মানুষের ভিড়ে বাতিল হল পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। বাধ্য হয়েই প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের জন্য স্থান বদলও করতে হল। এসবই ঘটল 'মিছিল'-এর সামনে।
আরও পড়ুন- প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি
বাবা অসুস্থ হওয়ার পর বারেবারে হাসপাতালে গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বাপ-ঠাকুরদার ভিটেতে সেভাবে আসা হয়নি মিছিলের। এবার যখন এলেন তখন 'সব শেষ'। পিতার দেহ নিয়ে মিছিলের মুখ প্রিয়-পুত্র মিছিল দাশমুন্সি। বাবার দেহ কাঁধে নিয়ে মিছিলে মিলিয়ে গেলেন 'মিছিল'।