WB Assembly Election 2021: Mamata Live: এই নির্বাচন বাংলার সম্মান বাঁচানোর লড়াই
ঘোষণা করেছিলেন আগেই তবে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার জন্য যেতে পারেননি। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বুধবার মাথাভাঙায় গিয়ে শিতলকুচি গুলিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ঘোষণা করেছিলেন আগেই তবে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার জন্য যেতে পারেননি। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বুধবার মাথাভাঙায় গিয়ে শিতলকুচি গুলিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ সকালেই কপ্টারে চড়ে মাথাভাঙায় নিহতদের স্মরণসভায় পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী।
Latest Updates
বিজেপি এক এক জায়গা এক একরকম কথা বলে। শাহ কাল লেবংয়ে গিয়ে বলেছে, আমিতো এনআরসির কথা বলিনি! এখনও ওই আইন পড়ে রয়েছে। বলছে, মমতাদি চা পছন্দ করেন না। চাওয়ালাকেও পছন্দ করে না। আমি বলি, আমরা বাঙালিরা চা পছন্দ করি। আর আমি চায়ের দোকানে গিয়ে চা তৈরিও করেছি। ঘর থেকে খাবার এমে কোনও গরিব মানুষের ঘরে গিয়ে খান। বলেন গরিব মানুষের ঘরে খাচ্ছি। গরিব দরদি? গ্যাসের দাম কত! ১৫ লাখ টাকা দেবে বলেছিল, ২ কোটি লোকের চাকরি হবে বলেছিল। কিছু হয়েছে? সব কোম্পানি বেচে দিয়ে দুহাতে টাকা লুটছে আর তা ভোটে খরচ করছে।
কী করে চিনবেন বিজেপি? একহাতে ঝান্ডা, অন্যহাতে ডান্ডা। পান বাহার খাবে। তা গাল দিয়ে ঝড়ে পড়বে। সঙ্গে থাকবে গোলি চালাদো গুন্ডা।
শীতলকুচিতে দেখলাম এক কমবয়সী গর্ভবতী মহিলা। তার স্বামীকে গুলি করে মেরে দিয়েছে। একজনকে দেখলাম তার সন্তানের বয়স মাত্র কয়েক মাস। তার স্বামীকেও মেরে দিয়েছে। আনন্দ বর্মনের পরিবারের সঙ্গেও কথা হল। আমার মনে করে এনপিআর যেমন লজ্জা তেমনি গুলি চালানোও লজ্জার। যারা মানবিক নয়, রাজনীতি তাদের জন্য নয়।
দল থেকে দুএকটা গদ্দার গিয়েছে। ভালোই হয়েছে। ভাবছে ভোটে জিতব আরও টাকা লুটব। দেখবেন মোদী, ভোটের দিন ভাষণ দেবে।এইতো দেখছেন কোভিড শুরু হয়েছে। আমরা বহুদিন ধরে বলছি, আমরা টাকা দিচ্ছি আমাদের ভ্যাকসিন দাও। ওরা দিচ্ছে না। কেন্দ্র বলেছে, তোমরা ডাইরেক্ট টিকা কিনতে পারবে না। আমাদের মাধ্যমে কিনতে হবে। আমরা টাকা নিয়ে বসে আছি। কিন্তু টিকা ওরা দিচ্ছে না। এক বছর আগে গোটা দেশজুড়ে তাণ্ডব হল। এত লোক মারা গেল। এক বছর সময় পেয়েছে নরেন্দ্র মোদীও কিছু করল না অমিত শাহও কিছু করল না। কোভিডের সময় একবারও আসেনি। এখন বাইরে থেকে লোক এনে কোভিড বাড়িয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে। মাস্কটা পরে থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।
বুঝতে পারি না, অশোক ভট্টাচার্য কোনও কাজই করে না। অথচ প্রতিবার ভোট পেয়ে যায়। এবার যদি মনে করেন, উন্নয়ন প্রয়োজন তাহলে ওমপ্রকাশ মিশ্রকে শিলিগুড়ি ও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে গৌতম দেবকে জেতান।
যদি বাংলায় শান্তিতে থাকতে চান তাহলে তৃণমূলকেই বেছে নিতে হবে। এই নির্বাচন বাংলার সম্মান বাঁচানোর নির্বাচন।
চোখ চেয়ে দেখুন আগে শিলিগুড়ি কেমন ছিল, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি, জলপাগুড়ি কেমন ছিল আর এখন কেমন হয়েছে।
কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, সবুজ সাথী করা হয়েছে। আইসিডিএস, আশাকর্মীরা কাজ পেয়েছে। রাজ্যের সব প্রকল্প চলবে। চা বাগান শ্রমিকদের জন্য ৩ লাখ বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। আগে চা বাগান শ্রমিকদের মজুরি ছিল ৬৭ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২০২ টাকা।
আপনাদের সামনে এখন একটাই কাজ, তৃণমূলকে একটা ভোট দেওয়া। এই সরকারকে ফের ক্ষমতায় আনা আর বিজেপিকে বাংলা থেকে দূর করে দেওয়া।
সব উদ্বাস্তু কলোনিকে আইনি স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছি। কেউ উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করতে পারবে না। যারা জমির পাট্টা পাননি তারা জমি পেয়ে পাবেন।
বিজেপি কাউকে একসঙ্গে থাকতে দেবে না। এইতো অসমে ৩ দিন আগে ভোট হয়েছে। আর কাল থেকে ডি নোটিস দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অর্থাত্ ডিটেনশন ক্যাম্পে যাও। ১৪ লাখ বাঙালির নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। আমার হিন্দি ভাষী ভইয়েরা, আপানাদেরও বাদ দিয়ে দিয়েছে। বাংলায় এমনটা হয় না। নিশ্চিন্তে থাকুন। মনে রাখবেন বাংলায় এনআরসি হবে না। এখানে এনআরসি করতে দেব না। মনে রাখবেন বাংলায় এনআরসি, এনপিআর করতে দেব না। আপনারা সবাই দেশের নাগরিক। সবাই পড়াশোনা করেন, স্কুল-কলেজে যান, চাকরি করেন, ব্যবসা করেন। সবাই আপনারা নাগরিক, কিন্তু লক্ষ্য রাখবেন ভোটার লিস্টে যেন নামটা থাকে।
ভোটের সময় হয়তো দেখলেন ইভিএম খারাপ। বাড়ি চলে যাবেন না। তাতে আপনার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। ভোটটা দিয়ে যাবেন। কারণ তা না করলে হয়তো ভোটার লিস্ট থেকে নামটা কেটে দেব। তখন বলবে ডিটেনশন ক্যাম্পে চলে যাও। ভোটটা দিতে হবে আপনাদের। বাংলা বাঁচানোর স্বার্থে আপনারা ভোট দিন। বাংলাকে বাঁচান।
আগামী দিন বাংলা গুজরাট হয়ে যাবে নাকি চেনা বাংলাই থাকবে তা আপনাদের ঠিক করতে হবে। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে দলের প্রচারে গিয়ে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি কী রকম ছদ্মবেশী ধর্ম করে জানেন? রাজবংশী এলাকায় গিয়ে বলবে, আমরা উদ্বাস্তুদের পছন্দ করি না। উদ্বাস্তু এলাকায় উল্টো কথা বলবে। জেনে রাখুন সব উদ্বাস্তুদের আইনি স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছি। ওরা হিন্দু-মুসলমানে গন্ডগোল লাগায় তা শুধু নয়, ওরা রাজবংশীদের সঙ্গে কামতাপুরীদের লড়াই লাগিয়ে দেয়, হিন্দুদের সঙ্গে খ্রিষ্টানদের লাগায়। জলপাইগুড়ির সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের লড়াই লাগিয়ে দেয়। আমরা এরকম দল দেখিনি। আমরা বলি হরেকৃষ্ণ হরি হরি আসুন সবার ভালো করি। আর ওরা বলে, হরে কৃষ্ণ হরি হরি দাঙ্গা লাগিয়ে লোক মারি। হরে কৃষ্ণ হরি হরি গুলি করে লোক মারি।
জেনে রাখুন মানুষ সঙ্গে থাকলে কেউ কিছুই করতে পারবে না। গুন্ডা দিয়েও কিছু করতে পারবে না। আমি ওদের এনপিআর করে দিয়েছি। আপনারাও করে দিন। ওরা চায় সম্প্রীতি নষ্ট করে দিতে। আমি তা করে দেব না। আমি বাংলাকে গুজরাট হতে দেব না।
কোভিডে লোক মারা যাচ্ছে। আর বিজেপির পার্টি অফিস থেকে ইঞ্জেকশন দিচ্ছে। পার্টির ইঞ্জেকশন। লোককে বাঁচাতে গিয়ে মেরে দিচ্ছে। এসব আমরা করি না। ইঞ্জেকশন দিতে গেলেও জানতে হবে ওটা আসল কিনা। ওটা ডাক্তারদের কাজ।
যারা লডা়ই করতে পারবে তাদের বুথে এজেন্ট হিসেবে বসান।
বিজেপি কী রকম ছদ্মবেশী ধর্ম করে জানেন? রাজবংশী এলাকায় গিয়ে বলবে, আমরা উদ্বাস্তুদের পছন্দ করি না। উদ্বাস্তু এলাকায় উল্টো কথা বলবে। জেনে রাখুন সব উদ্বাস্তুদের আইনি স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছি। ওরা হিন্দু-মুসলমানে গন্ডগোল লাগায় তা শুধু নয়, ওরা রাজবংশীদের সঙ্গে কামতাপুরীদের লড়াই লাগিয়ে দেয়, হিন্দুদের সঙ্গে খ্রিষ্টানদের লাগায়। জলপাইগুড়ির সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের লড়াই লাগিয়ে দেয়। আমরা এরকম দল দেখিনি। আমরা বলি হরেকৃষ্ণ হরি হরি আসুন সবার ভালো করি। আর ওরা বলে, হরে কৃষ্ণ হরি হরি দাঙ্গা লাগিয়ে লোক মারি। হরে কৃষ্ণ হরি হরি গুলি করে লোক মারি।
কেন ভোট চাইছি? কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, শিক্ষাশ্রী করে দিয়েচি, পড়ুয়াদের সাইকেল দিয়েছি, পড়ুয়াদে স্মার্টফোন কিনতে টাকা দিয়েছি। স্বাস্ত্যসাথী কার্ড দিয়েছি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড মানে ৫ লাখ টাকা। এখন বিনা পয়সার রেশন করে দিয়েছি। এবার ক্ষমতায় আসলে রেশন দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেব।
রাজ্যে আবার কোভিড ছড়িয়ে দিয়েছে ওরা। সব ভালো করে দিয়েছিলাম আমরা। সময়মতো যদি টিকা দিয়ে দিত তাহলে আর কোভিড হতো না। ভোটের প্রচারের নামে এবার বাইরে থেকে বিস্তর লোক এনেছে। আর আমাদের এখানে রোগ ছড়িয়ে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। এখন বলে ভোট দাও? আগের বার কোভিড যখন হয়েছিল তখন এরা কেউ আসেনি। এখন এসেছে ভোট প্রচারের জন্য।
অসমে ভোট হয়ে গিয়েছে। অসমে ভোট হয়ে গিয়েছে ৬ তারিখে। তার পরই লোকজনকে ডি নোটিস দিয়ে বলছে ডিটেনশন ক্যাম্পে যাও। যেই ভোট হয়ে গেল তেমনি বলছে তোমাকে এনআরসি করে তাড়ানো হবে না কেন জবাব দাও। আমি বলি ওদের এনআরসি করে দিন।
প্রচুর মিথ্যে কথা বলে অমিত শাহ,মোদী। জলপাইগুড়িতে এক কথা বলে, লেবংয়ে অন্য কথা বলে। কাল লেবংয়ে বলেছে, আমিতো এনআরসির কথা কখনও বলিনি। অমিত শাহ কাল ধুপগুড়িতে বলেছে, মমতা দিদি চাওয়ালা আর চা শ্রমিকদের পছন্দ করেন না। আমি বলি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চা-ও খায়, চাওয়ালার দোকানে গিয়ে তা বানিয়েও দেয়। মমতা ভোটের সময় মিথ্যে বলতে আসে না।
বিজেপি রাত্রে গ্রামে গিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। ভয় পাবেন না। নির্বিঘ্নে ভোট দেবেন। জলপাইগুড়ির সভা থেকে বললেন মমতা।
প্রত্যেকে ভোট দেবেন এই কারণে যাতে ভোটার লিস্টে নামটা থাকে। মনে নেই এনআরসি করেছিল এই সরকার। এনআরসি, এনপিআর বিল এনও প্রত্যাহার করেনি। যখন তখন তা ফের আনবে।
আজ আমার অনেকগুলো সভা রয়েছে। তাই আপনাদের কাছে অল্পক্ষণ থাকার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী। আর নিহতদের পরিবারগুলোকে বলতে চাই আপনারা আমাকে নিজের ঘরের ময়ে বলে মনে করবেন। তা সে হিন্দু হোক বা মুসলিম। আমার দিক থেকে যতটা পারব তা করব। ভোটের পর প্রথম আপনাদের কাছেই আসব। তখন যা যা করার করব। সবাইকে অনুরোধ শহিদের জন্য প্রার্থনা করবেন। তাদের পরিবারগুলো যাতে ভালো থাকে তা দেখবেন। নিহতদের প্রতি আমি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। দলের কর্মীদের বলছি। আনন্দ সহ নিহতদের পরিবারদের বাড়িতে পৌঁছে দিন। আবার দেখা হবে। গণতন্ত্রের জয় হোক।
আজ আমার প্রচারের শেষ দিন। তা সত্বেও এসেছি। কারণ ৭২ ঘণ্টা আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি। আমরা ছেড়ে কথা বলব না। দোষী ব্যক্তি যত বড়ই হোক না কেন তার শাস্তি হবে। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন।
সবাইকে আবেদন, শান্তি রক্ষা করুন। বুলেটের বদলে ব্যালটে তার জবাব দেবে। নিহত আনন্দ বর্মণ ও আমরা এক রাজবংশী ভাই। নিহতরা সবাই রাজবংশী। কেউ হিন্দু, কেউ মুসলিম। আমাদের দলের সদস্যদের বলব নিহতদের একটা করে শহিদ বেদী তৈরি করে দিতে। এর দায়িত্ব রবিকে নিতে বলছি। নির্বাচনের পর তার করা হবে। আমি আসব উদ্বোধন করতে।
নিহতদের স্মরণসভায় মমতা বলেন, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছি। ছোট ছোট ছেলেরা মারা গিয়েছে। দেখলাম একজনের স্ত্রী গর্ভবতী। একজনের বাচ্চা একেবারে শিশু। আমি মনে করি এই ঘটনার বিচার হওয়ার প্রয়োজন। যারা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা আমরা করবই। ভোটটা মিটে যাক। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যা যা তদন্ত করা যায় তা আমরা করব। আপনারা জানেন ঘটনার পরদিনই আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি। আপনারা শান্ত থাকুন। উত্তেজিত হবেন না। দোষী ব্যক্তিরা শাস্তি পাবে। মৃত্যুর বিকল্প অর্থ হয় না। তবে নিহতদের পরিবারকে রাজ্য সরকার সাহায্য করবে। রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে অন্য যারা নিহত হয়েছে তাদেরও সাহায্য করা হবে।
এদিকে গত শনিবার চতু্র্থদফার ভোটে রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত হন আনন্দ বর্মন নামে এক যুবক। তাদের সঙ্গেও দেখা করেতে চেয়েছিলেন মমতা। তবে তারা রাজী নয়। কিন্তু আনন্দ বর্মনের দাদু মমতার সঙ্গে দেখা করেন।
মৃতদের স্মরণে একটি সভা হচ্ছে মাথাভাঙায়। সেখানেই এসেছেন নিহতদের পারিবারের সদস্যরা। স্মরণসভায় বক্তব্য রাখার আগে মমতা নিহতদের আত্মীয়দের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন মমতা।