নিজস্ব প্রতিবেদন : অসমে প্রকাশিত হয়েছে নাগরিকপঞ্জি। আর তারপরই পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি-র দাবিতে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল এর তীব্র বিরোধিতা করলেও, ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু করা হবেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। আর তারপরই রাজ্যজুড়ে নথিপত্র আপডেশনের হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। এনআরসি চালু হতে পারে এই গুজবে পোস্ট অফিস থেকে ব্যাঙ্ক, বিডিও অফিস থেকে পুরসভা সর্বত্র নথিপত্র আপডেশনের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


সকাল ৬ থেকেই সুদীর্ঘ লাইন পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বিডিও অফিসে। টানা ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা ধরে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা। রেশন কার্ডে কোনও ভুল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখে সংশোধনের জন্য এসেছেন সবাই। সামান্য ভুলের জন্য যাতে অহেতুক ভোগান্তি পোহাতে না হয়, তাই তটস্থ সবাই। ঝুঁকি নিতে নারাজ। তাই ভোর হতেই ভিড় উপছে পড়ছে বিডিও অফিসে। আর এর জেরে নাজেহাল অবস্থা বিডিও অফিসের কর্মীদের। ব্যারাকপুরের বিডিও তুষারকান্তি ঘোষ বলেন,অহেতুক গুজবে সবাই ভিড় জমাচ্ছেন এখন। এখন শুধুমাত্র খাদ্যসাথী প্রাপকদের  জন্য রেশন কার্ড তৈরি ও সংশোধন করা হচ্ছে। এরসঙ্গে এরআরসি-র কোনও যোগ নেই।


এনআরসি গুজবে মানুষের লম্বা লাইন পড়তে দেখা গিয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার ব্লক অফিসে খাদ্য দপ্তরের ঘরের সামনেও। কেউ এসেছেন ভোটার লিস্টে নাম তুলতে বা সংশোধন করতে, কেউ বা রেশনকার্ডে। ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১০টা বাজতেই লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে।  কেউ নিজের নাম তুলছেন তো কেউ বাবার নাম সংশোধন করছেন। এনআরসি গুজবেই যে এই হুড়োহুড়ি তা বলাই বাহুল্য। এনআরসি হতে পারে, এই গুজবে আগে থেকেই সবাই সবকিছু গুছিয়ে রাখতে চায়। এদিকে নথি সংশোধনের হুড়োহুড়ির জেরে অশান্তির খবরও মিলেছে কোথাও কোথাও। হুগলির কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ঝামেলার খবর পেয়ে গিয়েছে।


আরও পড়ুন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টেয় মোদী-মমতা বৈঠক, জানানো হল প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে


নথি সংশোধনের জন্য রাতভর লাইন দেওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণনগরেও। পোস্ট অফিস থেকে ব্যাঙ্ক, রাতভর মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেখানে। উদ্দেশ্য, হয় নতুন আধার কার্ড বানানো বা সংশোধন করা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় লাইনে নদিয়ার চাপড়া এলাকার মানুষের ভিড়-ই বেশি। তাঁদের বক্তব্য, পঞ্চায়েতের লোকজন প্রচার করেছে যে ভোটার কার্ড যাচাই করাতে হবে। সেইজন্য রেশন কার্ড ও আধার কার্ড প্রয়োজন। এখন আধার কার্ড না থাকলে অবিলম্বে তা করতে হবে বা ভুল থাকলে সংশোধন করে নিতে হবে। নইলে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়া হবে এমনও বলা হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।


স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন,  বিডিও অফিসে রেশন কার্ড সংশোধনের জন্য লাইন পড়ছে। আর ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসে মানুষ আধার কার্ডের জন্য লাইন দিচ্ছে। রোজ মাত্র ২০টা করে ফর্ম দেয়। তাই আগেভাগে ফর্ম তুলতে মানুষ আগেরদিন সন্ধ্যা থেকেই লাইন দিচ্ছে। কেউ কেউ শিশুদেরকে নিয়েই লাইন দিচ্ছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এনআরসি গুজবে একেই গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তারউপর যাদের একবার আধার কার্ড তৈরি করা হয়ে গিয়েছিল, সেখানেও দেখা যাচ্ছে ভুল রয়েছে। ফলে গাফিলতির অভাবে এখন মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।