Dakshin Dinajpur: মাছের সঙ্গে একই পুকুরে পদ্মচাষ করে সাড়া ফেলে দিলেন বালুরঘাটের সুরজিৎ...
Dakshin Dinajpur: শহরের ফুলের দোকানে ১০৮টি পদ্ম ফুলের বরাত নেওয়া হয় পুজো শুরুর দু-এক মাস আগে থেকেই। কারণ, পদ্মফুল সে সময়ে বাজারে টাকা দিলেও মেলে না। ১০৮টি পদ্মফুলের দাম পড়ে ২০০০ টাকাও! ফুল একটু টাটকা হলেই দাম দিতে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা! কখনও কখনও তার থেকেও বেশি!
শ্রীকান্ত ঠাকুর: বাঙালির উৎসব ক্যালেন্ডার শুরু হয়ে যায় আষাঢ় মাসের রথযাত্রা থেকেই। চলে জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত। প্রায় সব পুজোতেই পদ্মফুলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। বিশেষত দুর্গাপুজোয় ১০৮টি পদ্ম দিয়ে পুজোই রেওয়াজ। অন্য দিকে, পদ্মালয়া লক্ষ্মীর আসনে ও পুজোয় বিশেষ উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় পদ্মফুল। যে কারণেই এই সময়ে পদ্মফুলের বিপুল চাহিদা থাকে। শহরের ফুলের দোকানে ১০৮টি পদ্ম ফুলের বরাত নেওয়া হয় পুজো শুরুর দু-এক মাস আগে থেকেই। কারণ, পদ্মফুল সে সময়ে বাজারে টাকা দিলেও মেলে না। ১০৮টি পদ্মফুলের দাম পড়ে ২০০০ টাকাও! ফুল একটু টাটকা হলেই দাম দিতে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা! কখনও কখনও তার থেকেও বেশি!
আরও পড়ুন; Mpox in India: ক্রমশ ভয়াল হচ্ছে মাঙ্কি পক্স আতঙ্ক! ফের ধরা পড়ল সংক্রমণ, ভারতে দ্বিতীয়...
দক্ষিণ দিনাজপুরের বাজারেও পদ্মফুলের চাহিদা প্রতিবছরই থাকে আকাশছোঁয়া। এবারও আছে। সেই বাজার ধরতেই নিজের মাছের পুকুরে পদ্ম চাষ করতে শুরু করেছেন বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পেশায় মাছচাষি সুরজিৎ সরকার। তিনি সাফল্যের মুখও দেখেছেন। তাঁর এই পদ্মচাষ পরীক্ষামূলক। এবং এই পরীক্ষামূলক চাষে তিনি সাফল্যের মুখও দেখেছেন। তাঁর উপার্জনও বেড়েছে কয়েকগুণ।
পরীক্ষামূলক ভাবে মাছ চাষের পুকুরে পদ্ম চাষ করেছিলেন সুরজিৎ। তাঁর লক্ষ্য ছিল মাছ চাষ করার পুকুরে পদ্ম ফুলের চাষ করা যায় কি না, তা পরখ করে দেখা। সাধারণত একটা পুকুরে পদ্ম ও মাছ এক সঙ্গে চাষ করা কঠিন। কারণ পদ্মের পাতা পুরো পুকুর জুড়ে ছেয়ে গেলে অক্সিজেনের ঘাটতি হতে পারে এবং কিছু কিছু মাছের বৃদ্ধিকে তা ব্যাহত করতে পারে। তবুও স্রেফ পরীক্ষামূলক ভাবে সুরজিৎ সরকার বোয়ালদার অঞ্চলের একটি বড় পুকুরের অর্ধেক অংশে পদ্ম চাষ করেছেন। ওই পুকুরে আবার মাছচাষও করেছেন। শুধু খেয়াল রেখেছেন, যাতে সমস্ত পুকুরের অংশ পদ্মপাতায় ভর্তি না হয়ে যায়। এজন্য প্রতিদিন পরিচর্যা করতে হয়েছে। আর এতেই এসেছে সাফল্য।
মনসা পুজোয় পদ্মফুল বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা প্রতি পিস। দুর্গাপুজোর জন্য ইতিমধ্যেই ২০টি ক্লাবের ও বাড়ির পুজো উদ্যোক্তারা তাঁর কাছ থেকে পদ্ম ফুল নেওয়ার জন্য বায়না করে গিয়েছে। বিপুল পরিমাণ পদ্মের জোগান দিতেই এখন তোড়জোড় শুরু করেছেন সুরজিৎ। ইতিমধ্যেই পদ্মের কুঁড়ি এসে গিয়েছে। অনেক কুঁড়ি ফুটে পদ্মও ফুটেছে। এ বিষয়ে সুরজিৎ বলেন, প্রতিবছর দুর্গাপুজায় পদ্মের ব্যাপক চাহিদা থাকে। চাহিদা অনুযায়ী জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই এ বছর পুকুরের অর্ধেক অংশেই পদ্মের চাষ করেছি। এখনও পর্যন্ত ২০টি পুজো উদ্যোক্তাকে পদ্মফুল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আরও বহু পুজো উদ্যোক্তাকে পদ্ম দেওয়া যাবে। সাধারণত মাছের পুকুরে পদ্মের চাষ হয় না। তবে আমি এই পুকুরেই পদ্মচাষ করেছি। এতে পচা পদ্মের পাতা মাছের খাবার হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে, আমার মাছের খাবার কম লাগছে, তাই খরচও কমেছে। অন্য দিক দিয়ে উপার্জন বেড়েছে অনেকটাই। স্থানীয় মাছ চাষিরা সুরজিতের এই সাফল্যে উৎসাহী। তাঁরাও এগিয়ে আসছেন পদ্মফুলের চাষ করতে।