Malda: ২ আদিবাসী মহিলাকে বিবস্ত্র করে মার! বামনগোলাকাণ্ডে পুলিসের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা পুলিসেরই
সোশ্যাল মিডিয়া মারফত ভিডিয়োটি পুলিসের নজরে আসে। তারপর পুলিস নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় মামলা দায়ের করে। ছবি দেখে শনাক্ত করে বামনগোলার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়।
রণজয় সিংহ : বামনগোলাকাণ্ডে ৪ পুলিস অফিসারকে ক্লোজ। আইসি সহ ৪ পুলিস অফিসারকে ক্লোজ করা হল পুলিস লাইনে। বাকিদের মধ্য়ে রয়েছেন ২ জন সাব-ইনসপেকটর ও একজন এএসআই পদমর্যাদার অফিসার। ক্লোজ করা হয়েছে আইসি জয়দীপ চক্রবর্তী, নালাগোলা পুলিস ফাঁড়ির ওসি মৃণাল সরকার,পাকুয়াহাট পুলিস ফাঁড়ির ওসি রাকেশ বিশ্বাস এবং পাকুয়াহাট পুলিস ফাঁড়ির এএসআই সঞ্জয় সরকারকে। ঘটনার ৯ দিন পর ব্যবস্থা নিলেন জেলা পুলিস সুপার। বামনগোলার থানার নতুন আইসি করা হয়েছে শংকর সরকারকে। আর পাকুয়াহাট ফাঁড়ির দায়িত্ব দেওয়া হল অনিমেষ সমাজপতিকে।
একদিকে তৃণমূল যখন মণিপুরের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে নিশানা করে একের পর এক তোপ দেগে চলেছে, তখন পশ্চিমবঙ্গের মালদার বামনগোলায় ২ আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে মারধর ও অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগ তোলে বিজেপি। যে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নেয় পুলিসও। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়, বামনগোলার পাকুয়া হাটে ২ আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছে তাঁদের উপর। গত ১৯ জুলাই ঘটনাটি ঘটে। পুলিসের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে। কিন্তু পুলিস কোনও ভূমিকা পালন করেনি। পুলিস নীরব দর্শকের মত হাত গুটিয়ে বসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হৃদয় এই ঘটনায় কাঁদছে না বা তিনি এখনও পর্যন্ত এই বর্বরতার বিরুদ্ধে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। এই অভিযোগ তুলে একটি ভিডিয়ো টুইট করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপি নেতা অমিত মালব্য।
অমিত মালব্য ও সুকান্ত মজুমদারের এই টুইট সামনে আসতেই বিতর্ক দানা বাঁধে। তোলপাড় শুরু হয়। যে প্রসঙ্গে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পুলিস জানায় যে, 'হাটে চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে মারধর ও জামাকাপড় ছিঁড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এরপর কোনও পক্ষ-ই পুলিসে কোনও রিপোর্ট করেনি। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত ভিডিয়োটি পুলিসের নজরে আসে। তারপর পুলিস নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিস।' ছবি দেখে শনাক্ত করে বামনগোলার ঘটনায় ৫ জনকে আটকও করে পুলিস। এবার এই ঘটনায় ক্লোজ করা হল ৪ পুলিস অফিসারকে। ব্যবস্থা নিলেন জেলা পুলিস সুপার।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লেবু বিক্রি করতে বামনগোলার পাকুয়াহাটে গিয়েছিলেন ওই দুই আদিবাসী মহিলা। হাটেই তাঁদের চোর সন্দেহে মারধর করা হয়। পরে সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়ে জি ২৪ ঘণ্টাকে সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন ২ নির্যাতিতা। তাঁরা বলেন, 'হাটে শুঁটকি মাছ বিক্রি করতে গিয়েছিলাম। সেখানেই আমাদের চোর বলে ধরে মারধর করে। বলে আমরা নাকি পয়সা চুরি করেছি! আমাদের তল্লাশি করে। তল্লাশির পর মারতে শুরু করে। পায়ের চটি দিয়ে মারা হয়। কাপড় খুলে নেয়। বিবস্ত্র করে আমাদের মারে।' এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান ২ নির্যাতিতা।