রণজয় সিংহ: আরজি কর কাণ্ডের জেরে দিকে দিকে আন্দোলনরত অবস্থায় সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে শাসক দলের নেতারা একের পর এক নেতার বেফাঁস মন্ত্যব্য করেই চলেছেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে ফের বিতর্কিত মন্তব্য তৃণমূল নেতার। 'পিটিয়ে গায়ের চামড়া তুলে দেওয়ার' পর এবার 'মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়ার' নিদান মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্ত ফারাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজারকে সাথে নিয়ে গঙ্গাতে ঝাঁপ দিবেন বলেও হুঙ্কার দেন তিনি।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Physical Harassment: কাঠগড়ায় এবার ডাক্তার! চিকিত্‍সার নামে মহিলাকে আটকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ...


গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালদার বৈষ্ণবনগরে গঙ্গা ভাঙন রোধে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধর্না মঞ্চ প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের কর্মসূচী নেওয়া হয়। মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচী নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ধর্নামঞ্চের শেষদিনে মঞ্চ থেকেই তৃণমূল বিরোধী দলগুলিকে হুঁশিয়ারি দেন রহিম বক্সি। ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি বলেন, 'নদী ভাঙণে গরিব মানুষেরা বাস্তহারা হচ্ছে। গরিব মানুষ মৃত্যুর মুখে চলে যাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ দিনের পর দিন গঙ্গার ভাঙনের ফলে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে সিপিএম, বিজেপি বন্ধুদের, কংগ্রেস বন্ধুদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রত্যেকটা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে মানুষের হাতে কাজ তুলে দিচ্ছেন, সরাসরি মানুষের পাশে পৌঁছাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গটাকে শান্তি পরিবেশ তৈরি করেছেন, প্রত্যেকটা মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেই মমতা ব্যানার্জি সরকারকে ভেঙে ফেলার ঘৃন্ন চক্রান্ত করছেন।' এরপরেই বিরোধীদের উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, 'ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে যদি ফালতু মিছিল করেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। তবে মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেব মাটিতে।'


এরপর বিরোধী রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্ত ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকেও একহাত নেন তিনি। তিনি বলেন, নদীর ভাঙণ ইস্যু নিয়ে গত তিনবছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেস ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশন দিচ্ছে। গঙ্গা নদীর ১২০ কিলোমিটার ভাঙণ প্রতিরোধের কাজ করার জন্য দাবী জানাচ্ছে। কিন্তু ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কোনও কাজ করেনি। গঙ্গা ভাঙণ প্রতিরোধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অর্থ মঞ্চুরের জন্য আবেদনও করেনি। এরপরই তিনি বলেন, "আমার জীবনকে বিসর্জন করে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি জিএম কে সাথে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেব। তিনিও শেষ আমিও শেষ হব। এই প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করব মালদা মুর্শিদাবাদের মানুষের এই সভা থেকে। এইরকম চা খেয়ে আর জিএমের অফিস থেকে ফিরে আসব না।" 


আরও পড়ুন, Acid Attack: এগিয়ে বাংলা! অ্যাসিড হামলায় শীর্ষে থাকা রাজ্যে এবার পুড়ল পুরুলিয়ার নাবালিকা...


মালদা উত্তরের বিজেপি সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত পাল্টা বলেন, "তিনি যে বলছেন বিশেষ করে সাংসদ বাকি জনপ্রতিনিধিদের মাটিতে পুঁতে দেবেন। শুধু জনপ্রতিনিধি কেন তিনি যেকোন কর্মীদের গায়ে হাত দিয়ে দেখান, তারপর মানুষ কি করে সেটাও তিনি টের পাবেন। জিএম কে তাঁরা কি করবেন সেটা তাঁদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন। সেই আন্দোলন করুন। কিন্তু যে ধরনের হুমকি প্রদর্শন করছেন সেটা যেন মাথায় থাকে। ফারাক্কা ব্যারেজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে সিআইএসএফ। সিআইএসএফের লম্বা লম্বা লাঠি। সেই লাঠিগুলোর দিকে একবার চোখটা বুলিয়ে নিন।" উল্লেখ্য, এর আগেও আন্দোলনকারীদের গায়ের চামড়া তুলে দেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি রাস্তায় ফেলে পেটানোর পেটানোর হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)