নিজস্ব প্রতিবেদন : কেন্দ্রের জমিতে থাকা উদ্বাস্তুদের সার্টিফিকেট দেবে রাজ্য সরকার। আজ রাজ্য মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা থাকবে যে তাঁরা কত বছর ধরে ওই জমিতে আছেন। এই সার্টিফিকেট তাঁদের কাছে ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় নথি হিসেবে থাকবে। বৈধ নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে এই সার্টিফিকেট। যদি কখনও কেন্দ্র তাদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে, তবে এই সার্টিফিকেট দেখিয়ে তাঁরা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, শুধু কেন্দ্রের জমি নয়, বেশকিছু ব্যক্তিগত জমিতেও দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে এমন বহু মানুষ, যাদের জমির কোনও অধিকার নেই, তাঁদেরকেও সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজনৈতিক মহলের মতে, এভাবেই এক ঢিলে দুই পাখি মারল মমতা সরকার। একদিকে উদ্বাস্তুদের মন জয় করাও হল, অন্যদিকে একুশে বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে নির্বাচনী প্রচারের ইট পাতাও হয়ে গেল। উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বৈরথ তথা বিজেপি-তৃণমূল লড়াইয়ের অন্যতম ইস্যু হচ্ছে এনআরসি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন সারা দেশে এনআরসি লাগু হবে। পাল্টা সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রীও। কোনওভাবেই বাংলায় এনআরসি হতে দেবেন না বলে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন মমতা।



এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের জমিতে বসবাসকারী উদ্বাস্তুদের রাজ্য সরকারের সার্টিফিকেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কাউকে দেশের বাইরে যেতে হবে না। রাজ্যের মানুষকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করাই এখন মুখ্যমন্ত্রীর মূল লক্ষ্য। বলে রাখি, লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, রাজ্যের যেসব জমিতে উদ্বাস্তুরা আছেন, তাঁদের সেই জমির পাট্টা তাদের দেওয়া হবে। সেই কাজ শুরুও হয়েছে। সেই সময় কেন্দ্রকেও চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। চিঠিতে কেন্দ্রের জমিতে বসবাসকারীদের কেন্দ্রকে পাট্টা দেওয়ার জন্য বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চিঠির উত্তর দেয়নি কেন্দ্র।



এবার নিজেই উদ্যোগী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের জমিতে রাজ্য সরকারের পাট্টা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এই বিকল্প ব্যবস্থা মমতা সরকারের। এমনইটাই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। পাশাপাশি কেন্দ্রকে ফের চিঠি দেবে রাজ্য সরকার। তারপরেও কেন্দ্র জমি না দিলে পাল্টা প্রচারে যাবে তৃণমূল।


আরও পড়ুন, রাজ্যের সব কৃষককে শস্যবিমা দেবে সরকার, বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর


উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে কেন্দ্রের বিভিন্ন দফতরের মোট ২৩৭টি জমি (যার বেশিরভাগই রেলের জমি)-তে সবমিলিয়ে ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরিবার বাস করে। এদিকে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, "নাগরিক বিল আর এনআরসি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই ভয় পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন উদ্বাস্তুদের জমি দেবেন। এই সবই নাটক। ফাঁকা আওয়াজ মারছেন। এসবে কিছু লাভ হবে না।"