লক্ষ্য লোকসভা, মতুয়া সঙ্ঘে ভাঙন রুখতে ঐক্যের ডাক মমতার
মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বিভেদ নয়। ঐক্যই মতুয়ার সঙ্ঘের শক্তি। ঠাকুরনগরে বড়মা বীণাপাণি দেবীর শততম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানিদেবীর জন্মশতবর্ষ উদযাপিত হচ্ছে আজ। বড়মার জন্মজয়ন্তীতে সেজে উঠেছে ঠাকুরনগর। অনুষ্ঠানে হাজির মুখ্যমন্ত্রীও। রাজ্য ছাড়াও মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেও মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষ যোগ দিয়েছেন এই অনুষ্ঠানে। এসেছেন বাংলাদেশের অনেক ভক্তও।
বড়মার শততম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মতুয়া সঙ্ঘ বিকাশ পরিষদ তৈরি হয়েছে। মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চাঁদপাড়ায় জমি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ৮.৮ একর জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হবে। এদিনের অনুষ্ঠান থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকারে আমলে ১০ লাখ ৫৭ হাজার জাতি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, 'শুভেন্দু অধিকারীর মাথা চাই', রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে মাওবাদী পোস্টার
উল্লেখ্য, অসমের মতো পশ্চিমবঙ্গেও যদি নাগরিকপঞ্জি তৈরি হয়, তাহলে এরাজ্য়ে মতুয়াদের ভবিষ্যত কী হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল রাজনৈতিক মহলে। এদিন বড়মার জন্মশতবর্ষের মঞ্চ থেকে এনআরসি ইস্যুতে নাম না করে বিজেপিকে একহাত নেন মমতা। বলেন, "এনআরসি-র নামে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এনআরসি-র নাম করে জঘন্য রাজনীতি হচ্ছে। এই রাজনীতি সমর্থন করে না তৃণমূল কংগ্রেস।"
বরবারই ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে সুসম্পর্ক শাসক দলের। বড় বউমা মমতাবালা ঠাকুর তৃণমূলের সাংসদ। বীণাপানিদেবীর ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকেও মন্ত্রী করেছিলেন তিনি। যদিও সেই সম্পর্কে পরবর্তীকালে চিড় ধরেছে। মঞ্জুলকৃষ্ণের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান। ভোটে যদিও হেরে যান সুব্রত ঠাকুর, কিন্তু মতুয়াদের একাংশের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন, ‘দিদির দিল্লি যাওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করুন’, কর্মী সম্মেলনে বার্তা সাংসদ শুভাশিসের
প্রসঙ্গত, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে শান্তনুর সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের। লোকসভা ভোটের আগে মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ককে নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া সব শিবিরই। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বড়মার শতবর্ষের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর যোগদান ও ঐক্যের বার্তা নিঃসন্দেহে তাত্পর্যপূর্ণ।