সিঙ্গুরে এত কিছু করলাম, জমি ফেরত দিলাম, লজ্জা হওয়া উচিত, দলকে বার্তা মমতার
১০ বছর পর হুগলিতে রত্নাকে হারিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
কমলিকা সেনগুপ্ত
শ্রীরামপুর, আরামবাগ জিতলেও হাতছাড়া হয়েছে হুগলি। হুগলির সিঙ্গুরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনকে দিয়েছিল নয়া উচ্চতা। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল ৩৪ বছরের বাম সরকারের। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার ৮ বছর সেই সিঙ্গুরেই পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। হুগলি হাতছাড়া তো হয়েইছে, কিন্তু সিঙ্গুর বিধানসভায় এগিয়ে গিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার হুগলি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে সিঙ্গুরের হার নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করলেন তৃণমূল নেত্রী। বললেন, 'এটা তোমাদের লজ্জা'।
সিঙ্গুরের আন্দোলন অনুঘটক হয়েছিল ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতপ সাংসদ রূপচাঁদ পালকে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের রত্না দে নাগ। ১০ বছর পর রত্নাকে হারালেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। আর সিঙ্গুর বিধানসভায় তৃণমূলের চেয়ে ১০, ৪২৯ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে বিজেপি। এমনকি টাটাদের জমি যে মৌজাগুলিতে, সেগুলির অধিকাংশেই বিজেপির দাপাদাপি। এদিন বৈঠকে হুগলির জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তকে ভর্ৎসনা করেন মমতা। বলেন,''তপন দাশগুপ্ত নিজের বিধানসভাতে হারছো। কেমন জেলা সভাপতি তুমি নিজের বিধানসভাতেই হারছো! সিঙ্গুরে এত কিছু করলাম। জমি ফেরত দিলাম। কে বড় দাদা কে, ছোট দাদা হবে, তার জন্য হেরে গেলে? তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিত''।
অর্থাত্ তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফায়দা তুলেছে বিজেপি, তা স্পষ্ট করে দেন দলনেত্রী। এদিন বৈঠকে নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন কর্মীরা। সেই অভিযোগ ববি হাকিমকে সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীদের কথা শুনছেন। নেতামন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভাব-অভিযোগ সামনে এসেছে। সমস্ত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। নেতামন্ত্রীদের রূঢ় ব্যবহারের জন্য বহু কর্মী দলবদল করেছেন বলে মনে করেন নেত্রী। তাঁর বার্তা, নিজেদের মধ্যে মতানৈক্যের জন্য দল দুর্বল হয়েছে, সে কারণে এই অবস্থা। একসঙ্গে কাজ করো। নিজেদের ভুলত্রুটি শুধরে ফেলো। হারানো জায়গা ফিরে পেতে হবে। ওরা টাকার ভোট করেছে আমরা মানুষের কাছে যাব।
দলের ভরাডুবির জন্য নেতানেত্রীদের একাংশের দুর্নীতিও দায়ী বলে বুঝিয়ে দেন মমতা। তৃণমূল নেত্রী বলেন,''আমি তো সংগঠনের জন্য ত্যাগ করেছি। অন্যরা দুর্নীতি করলে আমার কী দোষ! এবার কাটমানি খেলেই গ্রেফতার করা হবে''। এদিন দিলীপ যাদবকে হুগলির ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- কড়ায় গণ্ডায় হিসেব নেবে কেন্দ্র, সেই ভয়ে নীতি আয়োগে নেই মমতা: দিলীপ