চম্পক দত্ত: ছেলের হাতে বাবা খুন। অবাক হচ্ছেন!এমনই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে। ১২ই জুলাই বাড়ির পাশে পুকুর পাড় থেকে ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় সুদাম ভূঁইয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায়  উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য  ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় দাসপুর থানার পুলিস। শুরু হয় তদন্ত,পরিবারের পক্ষ থেকে  অভিযোগ করা হয় সুদাম ভূইয়াকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে। ১৪ ই জুলাই সুদাম ভূঁইয়া মারা যান।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-ভয়ংকর পরিস্থিত; কেউ নিরাপদ নয়, বাংলাদেশ থেকে ফিরে বলছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা


স্থানীয় মানুষজন ও পরিবারের লোকজন দাবি তেলেন খুনিকে ধরতেই হবে। গ্রামের মধ্যে এভাবে একজনকে মেরে দিয়ে চলে যাবে তা কখনোই মেনে নিতে পারছিল না গ্রামের মানুষজন।পুলিস তদন্তে নামে। পুলিসের হাতে উঠে আসে একাধিক তথ্য। অবশেষে সেই খুনের মামলায় গ্রেফতার হয় সুদাম ভুঁইয়ার ছোট ছেলে চিরঞ্জিত ভূঁইয়া ওরফে সনুকে।


ঠিক কী হয়েছিল যে ছেলের হাতে বাবাকে খুন হতে হল? পুলিস জানিয়েছে,সনু এলাকার একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল যার পরিমাণ অনেকই। টাকা শোধ করতে না পারায় সনু তার পরিবার নিয়ে ভীনরাজ্যে চলে গিয়েছিল। সনুর বাবা সুদাম ভূঁইয়া সনুকে জানায় বাড়ি আসার জন্য তার ঋণ পরিশোধ করে দিবে সনুর বাবা। সেই মতো সনু বাড়ি আসে বেশ কিছুটা ঋণ পরিশোধও করে দেয় সনুর বাবা। কিন্তু তারপরেও অনেকটা ঋণ বাকি রয়ে যায়। রাস্তাঘাটে বেরোলে সনুকে পাওনাদাররা ঘিরে ধরে তাদের পাওনা টাকা চাইতে শুরু করে। এতে অপমানিত করে সনু। আর তা নিয়েই সনুর সঙ্গে সনুর বাবার বাদে চরম অশান্তি। সনুর বাবা সুদাম ভূঁইয়া জানিয়ে দেয় আর টাকা দিতে পারবে না। এতেই ঘটল অঘটন।


গত ১২ জুলাই সকাল থেকে সনু মদ্যপান করে থাকে। বারেবারে ভাবতে থাকে আজ কিছু একটা করতেই হবে। সন্ধ্যার পর বাড়ি লাগোয়া পুকুরপাড়ে রাস্তার উপরে বসে সনু এবং সনুর বাবা সুদাম ভুঁইয়া। সনু বাবাকে বলতে থাকে তার টাকা লাগবে। সনুর বাবা সুদাম ভূঁইয়া বারে বারেই বলে সে আর টাকা দিতে পারবে না। শুরু হয় তর্কবিতর্ক তারপরেই মুহূর্তের মধ্যেই সবশেষ। নিজের বাবাকে  লোহার রড দিয়ে মারতে মারতে রাস্তা থেকে পুকুরে ফেলে দেয়। বাবার মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত ভেবেই  শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সনু।


এদিকে, পথ চলতি মানুষ দেখতে পায় সুদাম ভুঁইয়া পুকুরের পাড়ে জলে পড়ে আছে এবং গোঁগানির শব্দ আসছে। এলাকার মানুষজন ও পরিবারের লোকজন সুদাম ভুঁইয়াকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষপর্যন্ত সুদাম ভূঁইয়ার খুনি ধরা পড়লো। খুনি নিজেকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিল। অনেক বুদ্ধিও খাটিয়েছিল।কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি,অবশেষে দাসপুর থানার পুলিস গ্রেফতার করল মৃত সুদাম ভূঁইয়ার গুণধর ছোটো ছেলেকে। পুলিশের জেরায় সমস্ত কিছু স্বীকার করেছে অভিযুক্ত।



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)