কমলাক্ষ ভট্টাচার্য​:  সুন্দরবনে বিঘার পর বিঘা ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনিভাবে তৈরি করা হচ্ছে মাছ চাষের ভেড়ি ৷ দিনের পর দিন এই ভাবে জঙ্গল কেটে সাফ করা হলেও প্রশাসন নির্বিকার বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের৷ রাজনৈতিক মদতে একদল অসাধু এই কাজ করে চলছে বলে অভিযোগ ৷ সুন্দরবন অঞ্চলের কুলতুলি,  ক্যানিং থানা এলাকায় পিয়ালী, মাতলা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে অবাধে কাটা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ।  প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ ৷ ফলে বারবার বিভিন্ন জায়গায় এমনকি বনদফতরকেও জানিয়ে কোনও সুরাহা হচ্ছে না ৷


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কীভাবে চলছে এই ম্যানগ্রোভ ধ্বংস? কারা জড়িয়ে? সুন্দরবনের বাঘের ডেরায় এবার অন্য আতঙ্ক। ঘটনাস্থল ঘুরে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ম্যানগ্রোভের জঙ্গল কাটা চলছে সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক। খালি চোখে সুন্দরবন চষে ফেললেও এই দুষ্কর্ম ধরা সম্ভব নয়। নদী আর যাতায়াতের পথের ধারে জঙ্গলে হাত পড়েনি। চারদিকে ঘেরা জঙ্গলের মাঝে এমন ভাবে বিস্তীর্ণ অংশে গাছ কাটা হয়েছে যা গভীর জঙ্গলে না ঢুকলে বোঝা যায়না। স্থানীয় বাসিন্দা মহাদেব বিশ্বাসের সঙ্গে যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার হাঁটু কাদা ভেঙে গরাণকাটির গভীর জঙ্গলে পৌঁছে যা দেখা গেল, উদ্বেগ কয়েক গুণ বেড়ে গেল।



বিঘা খানেক জমিতে একেবারেই গোড়া থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে কয়েকশো গাছ। মহাদেব বলেন, “এই গাছগুলো তিনমাস আগে কাটা হয়েছে। একেবারে দিনেদুপুরেই। খানিক তফাতে আরও বিঘা খানেক জমির গাছ কাটা হয়েছে মাত্র চারদিন আগেই।” বাস্তবিকই তাই, ঘুরে দেখা গেল সদ্য করাতকাটা কয়েকশো মৃতগাছের সারি।


জল-জঙ্গল, বাস্তুতন্ত্রকে বিপন্ন করে কীভাবে চলছে এই বেপরোয়া কারবার? দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা পরিষদ সদস্য গণেশ মন্ডল জানালেন, “আমরা খবর পেয়েছি এই কারবার চলছে। সমস্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয় এনে লাগাতার অভিযান শুরু করা হয়েছে।” পরিস্থিতি যে যথেষ্ট গুরুতর তার প্রমাণ মেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি ও প্রযুক্তি বিভাগের ডিন অধ্যাপক সাধন কুমার ঘোষের কথায়।  “ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর লক্ষ্যে আর সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষের সুফলের কথা ভেবে আমরা ১৯৮২ সালে প্রায় ১৫ হাজার চারাগাছ পুতে ছিলাম মাতলার চরে। কয়েক বছর আগে দেখতে গিয়ে দেখি যার তিনভাগই আর নেই!”