Migratory Birds: আপ্যায়নে ত্রুটি, বিরক্ত হয়ে মুখ ফেরাচ্ছে শীতের অতিথিরা!
Migratory Birds in Paschim Bardhaman: আগে এই জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিদের দেখার জন্য বহু মানুষ ভিড় জমাতেন। এখন জলাশয়টি কচুরিপনা আর আগাছায় শ্বাসরুদ্ধ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাছ চাষ। জলাশয়ের পাড়ের মাটিও ধসে যাচ্ছে। ক্রমশ ছোট হতে শুরু করেছে জলাশয়। অতিথি পাখিরা এসে থাকবে কোথায়?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উত্তরের শীতল হাওয়া দক্ষিণে প্রবেশ করলেই শীত শুরু। প্রকৃতির নিয়মে কী ভাবে যেন এই খবরটি সুদূর সাইবেরিয়া, ইউরোপের পাখিদের কাছে পৌঁছে যায়। আর তা যেতে-না-যেতেই ডানা মেলে তারা দল বেঁধে এ রাজ্যে প্রবেশ করে। চেনা জলাশয় এবং চেনা জঙ্গলে অতিথি হিসেবে পৌঁছে যায়। পরিযায়ী পাখিরা পশ্চিমবঙ্গে যেখানে-যেখানে আসে তার অন্যতম পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার রক্ষিতপুরের সরকারি জলাশয়। এটি এ অঞ্চলে পরিযায়ী পাখিদের প্রাণকেন্দ্রস্বরূপ।
আরও পড়ুন: Malbazar: ফের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের মিড ডে মিলের রান্না ঘরে হানা বুনো হাতির...
এবারেও শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী পাখিদের উড়ে আসা শুরু হয়েছে। পরিযায়ী পাখিরা চেনা জলাশয়গুলিতে ভিড় জমাতেও শুরু করছে। তবে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার রক্ষিতপুরের সরকারি জলাশয়ে অতিথি পাখিদের আপ্যায়নে ব্যাপক ত্রুটি ঘটছে। আর যথাযথ আপ্যায়ন না পেয়ে মুখ ফিরিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে পাখিরা।
২০০৭ সালে বাম আমলে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কাঁকসার এই রক্ষিতপুর-সংলগ্ন এলাকায় দশ বিঘের বেশি বড় এক জমিতে তৈরি হয় এই জলাশয়। তৈরি হয় ছাগল পালনের খামারও। এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করে জলাশয়ে মাছ চাষ এবং ছাগলের খামারে ছাগল চাষ শুরু হয়। প্রথম থেকেই জঙ্গল-লাগোয়া এই জলাশয় পরিযায়ী পাখিদের পছন্দের জায়গা হয়ে ওঠে। আগে-আগে কয়েক হাজার পরিযায়ী পাখি ভিড় জমাত এখানে। হঠাৎ এক সময় বন্ধ হয়ে যায় ছাগলের খামার। কচুরিপানা আর আগাছায় ঢাকতে শুরু করে জলাশয়।
তৃণমূল আমলে একবার জলাশয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরে আর হয়নি সংস্কার। তারপর বছর-বছর কমতে শুরু হয় পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। বছরপাঁচেক আগেও কয়েকশো পরিযায়ী পাখি দেখা গিয়েছিল ওই জলাশয়ে। গত বছরও কিছু পাখি এসেছিল। তবে এবার ধুঁকতে থাকা জলাশয় দেখে মুখ ফিরিয়েছে তারা।
এলাকার এক পক্ষীপ্রেমী অশোক রায় ও স্থানীয় এক বাসিন্দা সুকুমার সাহা কিছুটা ক্ষোভের সুরেই বলেন, আগে এই জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিদের দেখার জন্য বহু মানুষ ভিড় জমাতেন। বর্তমানে ওই জলাশয় কচুরিপনা আর আগাছায় শ্বাসরুদ্ধ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাছ চাষ। জলাশয়ের পাড়ের মাটি ধসে যাচ্ছে। তা জলাশয়ের জলেই পড়ছে। আর এর জেরে ক্রমশ ছোট হতে শুরু করেছে জলাশয়। অতিথি পাখিরা এসে থাকবেই-বা কোথায়? এজন্যই পরিযায়ী পাখিরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। দ্রুত ওই জলাশয় সংস্কার করা হোক বলে দাবি তুলেছেন তাঁরা। স্থানীয়দেরও দাবি, নতুন করে জলাশয় সংস্কারের পাশাপাশি খোলা হোক ছাগলের খামারও।
দুর্গাপুর রেঞ্জের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে জানান, ওই জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিরা আসছে তবে সংখ্যা অনেক কমেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে যাতে জলাশয়টি সংস্কার করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। পরিযায়ী পাখিদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকেও নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানান।
আরও পড়ুন: South 24 Parganas: গঙ্গাসাগরের ভারত সেবাশ্রম সংঘের ঘর থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার...
অতিথি পাখিরা যথাযথ আপ্যায়ন পেয়ে কবে আবার পুরনো ছন্দে ফিরবে ওই জলাশয়ে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসীরা।