বিস্ফোরণ হতেই `পালায়` পুলিস! `নিয়ম মানেনি`, নৈহাটিকাণ্ডে অভিযোগ প্রাক্তন কর্তাদের
`কোনও পুলিস যে মারা যায়নি, মানুষ যে মারা যায়নি, সেটাই সৌভাগ্যের।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : কোনও নিয়ম মানেনি পুলিস। নিয়ম না মেনে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ করতে গিয়েই বিপত্তি বেঁধেছে। নৈহাটি বিস্ফোরণকাণ্ডে এই অভিযোগে সরব হলেন প্রাক্তন পুলিসকর্তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায় পুলিস।
আজ নৈহাটিতে বাজি নিষ্ক্রিয়করণের সময় বিপত্তি বাঁধে। ফেটে যায় বিস্ফোরক। ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে ওঠে নৈহাটির বিস্তীর্ণ এলাকা। আগুন ধরে যায় পুলিসের গাড়িতে। কেঁপে ওঠে গঙ্গার উল্টোপাড়ে অবস্থিত চুঁচুড়াও। বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিসের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিসের দিকে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন পুলিস কর্তারাও।
প্রাক্তন পুলিস কর্তা পঙ্কজ দত্ত কড়া ভাষায় এই ঘটনার নিন্দা করেন। তিনি স্পষ্ট অভিযোগ করেন, "পুলিস কোনও নিয়মকানুন মানছে না। পুলিস যেভাবে নিষ্ক্রিয়করণের কাজ চালাচ্ছিল তা একেবারেই অবৈজ্ঞানিক ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।" আরেক প্রাক্তন পুলিস কর্তা অনিল জানা তোপ দাগেন, "কোনও পুলিস যে মারা যায়নি, মানুষ যে মারা যায়নি, সেটাই সৌভাগ্যের।" দুই পুলিস কর্তাই একযোগে জানান, এধরনের বোমা বা বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। আগে থেকে জেলাশাসকের থেকে অনুমতি নিতে হয়। তারপর জায়গা নির্বাচন করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী জনবসতি নেই, এমন জায়গা-ই নিষ্ক্রিয়করণের জন্য বেছে নেওয়া দস্তুর। সেখানে জনবহুল এলাকার কাছে এমন কাজ কেন? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
নৈহাটিকাণ্ডে পুলিস কোনও নিয়ম মানেনি বলেই দাবি করেছেন স্থানীয়রা। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, দমকল ও পুলিস কোনও অনুমতি না নিয়েই নিষ্ক্রিয়করণ করাচ্ছে। নিষ্ক্রিয়করণ নিয়ে আগে থেকে সতর্ক করা হয়নি বাসিন্দাদের। পুলিস পর পর ৩ দিন ধরে এভাবে বোমা নিষ্ক্রিয় করে চলেছে। এর থেকে গঙ্গায় দূষণ, এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। এরপর এদিন যখন বিপত্তি বাধে, তারপরই পুলিস এলাকা ছেড়ে 'পালিয়ে যায়' বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন, গঙ্গাপাড়ে যেন 'পরমাণু বিস্ফোরণ'! কেঁপে উঠল নৈহাটি, চুঁচুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা
উল্লেখ্য, যে জায়গায় নিষ্ক্রিয়করণ চলছিল তার ২০০ মিটার মধ্যেই রয়েছে বসতি। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ভেঙে পড়ে বাড়ির কাচ। উড়ে গিয়েছে বাড়ির ছাদও। শুধু নৈহাটি নয়, বিস্ফোরণের তীব্র অভিঘাতে 'তছনছ' দশা চুঁচুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকারও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণস্থলে ৭ থেকে ৮টি গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। যার প্রত্যেকটিই প্রায় ১০ ফিট ব্যাসার্ধের। বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে RAF।