নিজস্ব প্রতিবেদন : পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি করেছে কমিশন নিজে। প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা। হাইকোর্টে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চে এই ভাষাতেই তোপের মুখে পড়তে হল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। যদিও কমিশনের মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানো নিয়ে ২১ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করল না ডিভিশন বেঞ্চ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২১ এপ্রিল রাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ১ দিন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কমিশনের এই বিজ্ঞপ্তিকেই ভুল বলে দাবি করে এবং সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চে তাদের সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। এদিন বিশ্বনাথ সমাদ্দাদের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়।


আরও পড়ুন, কমিশনের বিজ্ঞপ্তি কি ত্রুটিপূর্ণ? ডিভিশন বেঞ্চে ঝুলছে পঞ্চায়েত ভোটের ভাগ্য


২১ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তি খারিজ না করলেও এদিন শুনানি পর্বে কার্যত কমিশনকে তুলোধোনা করেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। বলেন, আদালত ভোট প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে চায় না। কিন্তু কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কমিশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্থা। তাই কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত স্বচ্ছ হওয়া উচিত। সংবিধান প্রণেতা ড.আম্বেদকরের মন্তব্য উল্লেখ করে বিচারপতি সমাদ্দার এদিন বলেন, সংবিধানকে যাঁরা বাস্তবে প্রয়োগ করবেন, তাঁদের অনেক দায়িত্ব। তাঁদের কার্যকলাপ নিয়ে কেউ যেন ভ্রু কোঁচকাতে না পারে, সেবিষয়ে সজাগ থাকতে হবে তাঁদের। কিন্তু কমিশন নিজেই জটিলতা তৈরি করেছে। কমিশনের কাজের প্রক্রিয়াই তার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। কমিশনের এবার সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।


কমিশনের কাজের জন্যই আদালতকে এর আগে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই তিন দফার ভোট কমিয়ে একদফায় করা হয়েছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ১ দিন বাড়ানো হয়েছিল। প্রসঙ্গত, এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানির সময়ও বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেছিলেন, কমিশন কোনও হোমওয়ার্ক করেনি। তবে আদালত কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, কোনও রাজনৈতিক দল যে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নির্বাচনী প্রচারে আদালতের পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করতে পারবে না, সে ব্যাপারেও সতর্ক করে দিয়েছেন বিচারপতি সমাদ্দার।


আরও পড়ুন, কমিশন হোম ওয়ার্ক করেনি, পঞ্চায়েত ভোটের দিন চূড়ান্ত করবে ডিভিশন বেঞ্চ: সিঙ্গল বেঞ্চ


বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের রায়ের পর কংগ্রেসের আইনজীবী ঋজু ঘোষাল বলেন, আদালতের পর্যবেক্ষণে তাঁরা সন্তুষ্ট। নির্বাচন কমিশনের কার্যকলাপ নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, এই মামলায় হারজিতের কোনও প্রশ্ন নেই। আর কংগ্রেস কখনও নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করার পক্ষে নয়।  


এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের ভাগ্য ঝুলছে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির উপর। ফলে আপাতত কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ১৪ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তাবিত দিন হিসেবেই রইল।


আরও পড়ুন, মামলা শুনতে নারাজ প্রধান বিচারপতি, অনিশ্চিত পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যত্