নিজস্ব প্রতিবেদন:  দীর্ঘদিনের পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা, প্রেম। কিন্তু সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি দুই পরিবারই। ভালোবাসার পরিণতি দিতে পালিয়ে গিয়েই বিয়ে করেছিল যুগল। কিন্তু তার বদলে নিয়ে তরুণীর পরিবার যুবকের বিরুদ্ধে দায়ের করল অপহরণের মামলা। আর সে কথা কানে আসতেই চরম পরিণতি বেছে নিলেন নবদম্পতি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: ম্যাট্রিমনিতে ৫ দিনের আলাপ, প্রবাসী হবু বরকে বিশ্বাস করে মর্মান্তিক পরিণতি তরুণীর‌!


হাতে শাখা পলা, কপালে লেপটে যাওয়া সিঁদুর, পরনে লাল শাড়ি আর পাত্রের পরনে পায়জামা পাঞ্জাবি। নবদম্পতি যে বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় এসেছেন, তা বুঝতে দেরি হয়নি হোটেল মালিকেরও। বেছে সবচেয়ে ভালো ঘরটিই ভাড়া দিয়েছিলেন তাঁদের। জানলা দিয়ে দেখে যাবে সমুদ্র সৈকত। সন্ধ্যায় চাঁদের আলো এসে পড়বে ব্যালকনিতে-এমন ঘরের চাবি যখন হাতে নিয়েছিলেন ২৪ বছরের প্রদীপ নিয়ক ও তাঁর সদ্য স্ত্রী সতেরো বছরের প্রমীলা রাউত, তখনও তাঁদের দেখে কেউ বোঝেননি ওই ঘর থেকেই বেরোবে তাঁদের নিথর দেহ।



প্রদীপ ও প্রমীলা-দুজনেই রামনগরের বাসিন্দা। পাড়ার ছেলে প্রদীপের প্রেমে বেশ কয়েক বছর ধরেই মজে ছিলেন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী প্রমীলা। লুকিয়ে দেখা করে, ঘোরাফেরা, ফোন, ম্যাসেজ-আর পাঁচটা সাধারণ প্রেমের মতোই জমাট বাঁধছিল তাঁদেরও গল্প। কিন্তু কিছুদিন আগেই প্রমীলার বাড়িতে জানাজানি হয়ে যায় তাঁদের সম্পর্কের কথা। প্রদীপকে কোনওভাবেই মেনে নেননি প্রমীলার বাবা-মা। এই নিয়ে বাড়িতে একাধিকবার ঝামেলাও হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভালোবাসার পরিণতি দিতে প্রদীপের হাত ধরেই ঘর ছেড়েছিলেন প্রমীলা। মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন। এরপর গিয়ে উঠেছিলেন নিউ দিঘার এই হোটেলের রুমে। এখান থেকে সংসার বাঁধার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন প্রদীপ-প্রমীলা। সব সম্পর্কের যেমন মধুরেণ সমাপয়েত হয় না, এক্ষেত্রেও সেটি হল না।


আরও পড়ুন: বিয়ের আসরে চার হাত এক না হয়েও বেঁচে থাকল প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসা!


মেয়ে প্রেম করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে, একথা বুঝতে পেরেই প্রমীলা বাবা-মা প্রদীপের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। প্রমীলা যেহেতু নাবালিকা, তাই সেক্ষেত্রে হয়তো এই অভিযোগের যৌক্তিকতাও রয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ প্রদীপের বাবা রাজকুমার নায়েককে গ্রেফতার করে শনিবার রাতে।


আরও পড়ুন: দরজা ভেজানো, ভিতরে মায়ের নিথর দেহ দেখলেন ছেলে


বাবার পদক্ষেপের কথা কানে আসতেই যেন মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে প্রমীলার। বিপদে পড়তে পারে তাঁর ভালোবাসা, একথা আঁচ করতে পেরেই চরম সিদ্ধান্তের পথ বেছে নিলেন প্রমীলা ও প্রদীপ।


নিয়মমাফিত প্রমীলা-প্রদীপের রুমে চা দিতে গিয়েছিলেন এক হোটেল কর্মী। বহু ডাকাডাকিতেও দরজা না খোলায় নিচে গিয়ে ম্যানেজারকে জানান হোটেলকর্মী। দরজা ভাঙতেই চোখে পড়ে, লাল শাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন প্রমীলা। সেই একই ফাঁসে ঝুলছেন প্রদীপও। প্রমীলার কপালে তখনও জ্বলজ্বল করছে সিঁদুর। বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখতে হয়তো এটাই ছিল তাঁদের চরম পদক্ষেপ।