Assamese boy In Jalpaiguri: চশমা হারিয়ে ফেলায় মারধর বাবা-মা-র, সোজা এক্সপ্রেসে ট্রেনে চড়ে বসল নাবালক
ট্রেন জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন ঢোকার ঠিক আগে মুহূর্তে জোয়াসকে লক্ষ্য করেন টিকিট পরীক্ষক। এর পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কথায় অসংগতি ধরা পড়ে
প্রদ্যুত্ দাস: চশমা হারিয়ে ফেলায় মারধর করেছিল বাবা-মা। তার পরেই অভিমানে এক্সপ্রেস ট্রেন চড়ে বেরিয়ে পড়ল অসমের চিরাং জেলার সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া জোয়াস বসুমাতারী। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারল না কিশোর। জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে আসার আগেই টিকিট পরীক্ষকের হাতে ধরা পড়ে গেল ওই কিশোর।
জোয়াস বসুমাতারী সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র। তার চোখে পাওয়ার বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি চিকিৎসক তাকে নতুন চশমা নিতে বলেন। বাবা প্রবেদ বসুমাতারী তাকে নামী কোম্পানির দামী লেন্স বসানো চশমা কিনে দেন। সেই চশমা পরে জোয়াস স্কুলে গিয়েছিল। কিন্তু স্কুলে সেই চশমা হারিয়ে আসে।
জোয়াস বাড়ি ফিরলে তার অভিভাবকেরা তাকে জিজ্ঞেস করে চশমা কোথায়। জোয়াস চশমা হারিয়ে যাওয়ার কথা বললে তাকে তার অভিভাবকেরা ঝাঁটা ও জুতো দিয়ে মারে বলে ছেলে জানায়। মার খেয়ে অভিমানে সুযোগ বুঝে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সে হাঁটতে থাকে। প্রায় পাঁচ ঘন্টা হাঁটার পর সে নিউ বঙ্গাইগাও স্টেশন দেখতে পায়। সেখানে গেলে তখন চোখে পড়ে নর্থইস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনেই চেপে বসে জোয়াস।
ট্রেন জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন ঢোকার ঠিক আগে মুহূর্তে জোয়াসকে লক্ষ্য করেন টিকিট পরীক্ষক। এর পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কথায় অসংগতি ধরা পড়ে। শেষপর্যন্ত টিকিট পরীক্ষককে সে সবকিছু খুলে বলে। এরপর জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন আসা মাত্রই ট্রেনে থাকা রেল পুলিসের সহযোগিতায় আরপিএফ এর হাতে ওই কিশোরকে তুলে দেন তিনি। এরপর চাইল্ড লাইনের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিস তার পরিবারকে খবর দেয়। পরিবার খবর পেয়ে সোমবার জলপাইগুড়ি এসে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ছেলেকে পেয়ে খুশি পরিবারের লোকেরা।
প্রবেদ বসুমাতারী জানান তিনি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। কয়েকদিন আগেই বেশ কিছু টাকা খরচ করে ছেলেকে দামী চশমা কিনে দিয়েছিলাম। ছেলে তা হারিয়ে ফেলায় রাগ হয়ে যায়। বাড়ে বাড়ে দামী চশমা কিনে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই রাগের বশে আমরা ওকে মারধর করি। এরপর ছেলে নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় আমরা থানায় মিসিং ডায়েরি করি। এরপর খবর পাই ছেলেকে পাওয়া গেছে। এরপর জলপাইগুড়ি এসে ছেলেকে নিয়ে গেলাম। রেল দপ্তর, পুলিশ, চাইল্ড লাইন সার্ভিস এবং সিডাব্লিউসিকে ধন্যবাদ।
ঘটনায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের মানসিক চিকিত্সক ডাক্তার আশীষ সরকার বলেন ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের এই মানসিক স্তরকে ইমপালসিভ ডিস অর্ডার বলা হয়। এই ধরনের ঘটনা গুলি সাধারণত বাবা মার স্নেহ ভালবাসা কম পেলে বাচ্চাদের হয়ে থাকে। যৌথ পরিবার ভেঙে যাওয়ার পর অনেকসময় দেখা যায় বাবা ও মা দুজনেই নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। তারা সন্তানকে সময় দেয় না। এইসব কারন থেকে বাচ্চাদের মধ্যে এই প্রবনতা দেখা যায়। তাই অভিভাবকদের উচিৎ সবসময় তাদের সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো মেশা। তাহলে এই অবস্থা হয় না।
আরও পড়ুন-ফের দুঃসংবাদ টলিউডে, প্রয়াত অভিনেতা শুভময় চট্টোপাধ্যায়