পার্থ চৌধুরী


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজা নেই, রাজত্ব নেই। তবু রাজ পরিবারের ঐতিহ্য আছে। আছে রাজ-ঐতিহ্যের শেষ চিহ্ন-- ভগ্নদশাপ্রাপ্ত এক মন্দির। মন্দিরের দেওয়ালের টেরাকোটার কারুকার্য, পলেস্তারা খসে পড়ছে। রাজ পরিবারের মন্দিরের মূল ফটকও ভেঙে পড়ছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজ পরিবারের পটেশ্বরী দুর্গাপুজোর জৌলুসও কমেছে। তবে কমেনি রীতি-আচারের রাজ-ঐতিহ্য।


রাজ আমলে ধুমধাম করে পটেশ্বরী দুর্গাপুজো হত। বহু মানুষের আগমন হত বর্ধমান মহারাজের তৈরি লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ঠাকুরবাড়িতে। নদীর ওপার থেকেও অনেকে হেঁটে বা গরুর গাড়ি করে আসতেন এই পুজো দেখতে। প্রত্যেকদিনই ভিড় লেগে থাকত মন্দিরপ্রাঙ্গণে। প্রথা অনুযায়ী, রাজ পরিবারের মহিলারা সকলের সামনে আসতেন না। রাজবাড়ি থেকে গোপন রাস্তা দিয়ে তাঁরা এই মন্দির-চত্বরে প্রবেশ করতেন এবং মন্দিরের দোতলায় আড়াল থেকে পুজো ও অনুষ্ঠান দেখতেন।


আরও পড়ুন:  Puja 2021: দত্ত-মুন্সিদের এই পুজো দেখতে আসতেন কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রও!


এখনও দুর্গাপুজোর সময়ে ভিড় হয় এখানে। একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে এখন দেখাশোনা করা হয় মন্দিরের। রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। করোনার প্রকোপে গতবার থেকে পুজোর আয়োজনও কমেছে। এবারেও শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার পুজো হবে বলে জানালেন সেবায়েত। তবে জৌলুস কমলেও পুজোর আচার আচরণে বা রীতিনীতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। এখনও আগের মতোই পুরনো রীতি মেনেই রাজ পরিবারে মা পটেশ্বরী দুর্গার পুজো হয়। মহালয়ার পরের দিন থেকে বর্ধমানের মহারাজার মন্দিরে দুর্গাপুজো শুরু হয়। এখানে বলির প্রথা আছে। তবে মেষ-মহিষ বা ছাগ বলি হয় না। রাজাদের আমলে সুপারি বলি হত। এখন অবশ্য চালকুমড়ো বলি হয়। অষ্টমীর দিন মা পটেশ্বরীর সামনে নবকুমারী পুজো হয়। 


পুজোর সময় রাজপরিবারের একমাত্র বংশধর প্রণয়চাঁদ মহাতাব ন'দিন সস্ত্রীক বর্ধমানে থাকেন এবং নিজে পুজোয় বসেন। তবে করোনা আবহে গতবছর তিনি আসেননি। এবারও আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই জানালেন বর্তমানে এই মন্দিরের সেবায়েত উওম মিশ্র।


পটেশ্বরী দুর্গাপুজো শুরু করেন তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজ  মহাতাব চাঁদ। আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে। দেবী দুর্গা এখানে শালকাঠের কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত। কাঠের কাঠামোর উপর নানা রং দিয়ে নিপুণ তুলির টানে তৈরি দশভুজার পরিবার। একমাত্র গণেশ ছাড়া দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং অসুরের মুখ এক পাশে ফিরিয়ে আঁকা। দশ বছর অন্তর একবার পটেশ্বরী দুর্গা রঙ করা হয়। শোনা যায়, এই মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে পাশের একটি মন্দিরে দেবী পূজিতা হতেন। পরে মহারাজ মহাতাব চাঁদ এই মন্দির স্থাপন করে দেবীকে এখানে নিয়ে আসেন। 


(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: Puja 2021: এ গ্রামে দুর্গাপুজো হয় না, তার বদলে চারদিন ধরে হয় মা মনসার পুজো