বিধান সরকার: শুধু বাংলাদেশ নয়, যে কোনো দেশ ভারতের দিকে হাত বাড়ালে, আঙুল তুললে সেই হাত বা আঙুল কেটে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন হুগলির ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি। যদি পাকিস্তান-বাংলাদেশ হাত মিলিয়ে আমাদের দেশকে চমকাবে বলে মনে করে, তবে সেদিন চলে গিয়েছে। দু'দেশেরই সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুরা সুখে শান্তিতে বসবাস করুক-- এটাই চাই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Bangladesh: 'বাংলাদেশের বর্বরদের যোগ্য জবাব দেওয়াটা নস্যি! ৪৫ লক্ষ মুর্শিদাবাদবাসীই ওদের জন্য যথেষ্ট'! কে বললেন?


আমাদের সুখ শান্তি ও ঐক্য আছে তা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন কিছু অসৎ চরিত্রের রাজনৈতিক নেতা। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হবে। দুই দেশের মধ্যে যাঁরা উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন, তাঁরা কখনও দেশের ভালো চাইছেন না। যাঁরা উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, তাঁদের আমরা পাত্তা দিচ্ছি না। আমরা দেশের ও বাংলার সরকারের দিকে তাকিয়ে আছি। বাংলার মানুষের কাছে একটাই বার্তা, আগে ধর্মের পরিচয় না দেখে অসৎ চরিত্রের রাজনৈতিক নেতাদের পাল্লায় পড়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে সম্পর্ক নষ্ট যেন না করি, করজোড়ে এটাই দেশের ও বাংলার মানুষের কাছে আবেদন।


কেন সহসা ত্বহা এসব কথা বললেন? আচমকা বললেন না। প্রেক্ষিত আছে। ক'দিন আগেই ঘটেছিল ঘটনাটি। বাংলাদেশে ভারত-বিরোধিতার সুরের মধ্যেই শোনা গিয়েছিল এক ভয়ংকর হুমকি। কলকাতা দখলের ডাক উঠেছিল ঢাকার এক মিছিল থেকে। শুধু ডাক নয়, চার দিনের মধ্যে কলকাতা দখল করে নেওয়ার হুংকারও দেওয়া হয়েছিল সেই মিছিল থেকে। দিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক প্রাক্তন সেনাকর্তা। ঢাকার রাওয়া কমপ্লেক্সের নীচে একটি সমাবেশ করেন বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সদস্যরা। সেই মিছিল থেকেই ওই অদ্ভূত মন্তব্য করা হয়েছিল।


এ কথা শুনে কেউ হেসেছে, কেউ বিরক্ত হয়েছে, কেউ বিষয়টি নিয়ে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে অন্য ব্য়াপারে মনোনিবেশ করেছে, কেউ আবার নিজের মনের শান্তি বিঘ্নিত না করে বিষয়টিকে পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু কোনও কোনও মহলে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ। অনেকেই বাংলাদেশের উপর ভয়ংকর ক্ষুব্ধ হন। 


ঠিক কী বলেছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন ওই সেনাকর্তা? ওই মিছিল থেকে ওই সেনাকর্তা বলেছিলেন, ৪ দিনের মধ্যে আমরা কলকাতা দখল করে নেব। আমাদের সামরিকবাহিনী ছাত্র-জনতার সঙ্গেই আছে। আমাদের ৫ হাজার সদস্যের অর্ধেকই নবীন। এঁদের মধ্যে আড়াই হাজারই যুদ্ধের ময়দানে যেতে পারেন। সঙ্গে ৩০ লাখ ছাত্র-জনতা যদি যোগ দেয়, তা হলে ভারত তো দূরের কথা, আমেরিকাও আমাদের সামনে টিকবে না।


কেন সহসা প্রাক্তন সেনাকর্তা এসব বললেন? সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিভিন্ন ইস্যুতে ইউনূস সরকারের উপরে ক্ষোভ বাড়ছে বাংলাদেশিদের। এর উপরে দেশের সংখ্য়ালঘুদের উপরে নির্যাতন, ইসকনের সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে নাজেহাল বাংলাদেশ। এরকম পরিস্থিতিতে ভারতবিদ্বেষ ছাড়া অন্য উপায় নেই বাংলাদেশিদের হাতে। 


বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তার ওই মন্তব্য নিয়ে প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার প্রবীর সান্যাল তখনই বলেছিলেন, আশ্চর্য লাগছে, একজন সিনিয়র অফিসার এতটা কাঁচা কথা বললেন কী করে! বাংলাদেশের আর্মড ফোর্সের কত ক্ষমতা রয়েছে, হিসেব নিলেই তা বোঝা যাবে। ভারতের যে সামরিক শক্তি রয়েছে, তা দুনিয়ার ৫ নম্বর। বাংলাদেশ হয়তো ৩৭ নম্বরে। আমরা কী করতে পারি, তা বাংলাদেশ ভালো করেই বোঝে।


আরও পড়ুন: Royal Bengal Tiger: ভয়ংকর! সুন্দরী 'জিনাত' কি ঢুকে পড়েছে ঝাড়গ্রামে? বেলপাহাড়িতে? শহরের জঙ্গলে? শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত...


তবে শুধু ত্বহার হুগলি নয়, পশ্চিমবঙ্গের অন্য দুই জেলা থেকেও উঠেছে প্রতিবাদের সুরই। আজ, বুধবারই শোনা গিয়েছে সেই সুর। মালদা ও মুর্শিদাবাদ থেকে। বাংলাদেশের হুমকি বিষয়ে মালদা জেলার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস বুধবার বলেন, ১৫ মিনিটের জন্য সীমান্ত খুলে দিলে বাংলার সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশ দখল করে নেবেন! ওদিকে এক সুর মুর্শিদাবাদেও। বুধবারই মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বাংলাদেশ নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মাঠে নেমে যোগ্য জবাব দেব। বাংলাদেশের মোকাবিলা করা আমাদের কাছে নস্যিস্বরূপ। বাংলাদেশে বর্বরের মতো আচরণ যাঁরা করছেন, তাঁদের আমরা, ৪৫ লক্ষ মুর্শিদাবাদবাসীই যোগ্য জবাব দেব।'


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)