টাকার জন্য কালিয়াচকে হত্যালীলা, সুড়ঙ্গ পথে চৌবাচ্চায় দেহ লুকিয়েছিল ছোট ছেলে
পুলিসি জেরায় অপরাধ স্বীকার অভিযুক্তের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অর্থের নেশাই অনর্থের মূল! কালিয়াচককাণ্ডে পুলিশি জেরায় অপরাধ স্বীকার করে নিল অভিযুক্ত মহঃ আসিফ। তদন্তে উঠল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা হারবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও!
দেহগুলির তখন আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। মালদহের কালিয়াচকে বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক থেকে চারটি কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিস। কয়েক মাস আগে যে পরিবারের ওই চার সদস্যকে খুন করে দেহ জলের ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কে? পুলিসের কাছে ছোট ভাইয়ের 'কীর্তি' ফাঁস করে দেন দাদা মহম্মদ আরিফ। গ্রেফতার করা হয় বাড়ির ছোট ছেলে, অভিযুক্ত মহঃ আসিফকে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে সে।
আরও পড়ুন:ধূপগুড়িতে কিশোরীকে মদ খাইয়ে অর্ধনগ্ন করার অভিযোগ, ভাইরাল ভিডিও
জেরায় কি জানা গেল? পুলিস সূত্রে খবর, ২৮ ফ্রেরুয়ারি দুপুরে ঠাণ্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘূমের ওষুধ মিশিয়ে বাবা, মা, দাদা, বোন ও দিদিকে খাওয়ায় আসিফ। সকলেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন। এরপর তাঁদের হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়, সেলোটেপ লাগিয়ে দেওয়া হয় মুখে। এদিকে এই হত্যাকাণ্ডে আগে থেকে বাড়ির গুদামঘরে একটি চৌবাচ্চা তৈরি করে রেখেছিল আসিফ। একটু একটু জলও জমিয়েছিল সেই চৌবাচ্চায়। যাতায়াতের জন্য বানিয়ে ফেলেছিল সুড়ঙ্গও! ঘটনার দিন সুড়ঙ্গ পথে একে একে পাঁচজনকেই আনা হয় গুদামঘরে। চৌবাচ্চায় ফেলে দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু আসিফের দাদা আরিফের জ্ঞান ফিরে আসে। কোনওমতে পালিয়ে যান তিনি। এরপর ওই চৌবাচ্চাটি সিমেন্ট ও বালি দিয়ে চাপা দেওয়া হয়। সেকারণেই বাড়িতে পাড়া-প্রতিবেশীদের ঢুকতে দিত না আসিফ।
আরও পড়ুন: টাকা না মেটালে সত্কার করতে দেব না, ব্যবসায়ীর মৃতদেহ ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ পাওনাদারদের
কেন এমন নৃশংস হত্যালীলা? তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিট কয়েন দিয়ে জুয়া খেলায় আসক্ত ছিল মহঃ আসিফ। হাত পাকিয়েছিল হ্যাকিং-র মতো সাইবার অপরাধেও। জুয়া খেলে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করত বছর উনিশের ওই যুবক। সম্প্রতি পরিবারের লোকেদের কাছে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা দাবি করে সে। কয়েক বিঘা লিচুবাগান ও দুটি লরি বিক্রি করে সেই টাকা ছেলেকে দিয়েছিলেন আসিফের বাবা। কিন্তু যখন আরও টাকা দাবি করতে শুরু করল আসিফ, তখন তা দিতে অস্বীকার করেন তিনি। তারজেরেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড।