দেবারতি ঘোষ: কিছু বছর আগে পর্যন্ত ভোট আসা মানেই গমগম করত কালিয়াগঞ্জের মনিবাগ এলাকার এই বাড়িটি। ভোটের আগে থেকে ভোটের পর পর্যন্ত গোটা এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকত। এখন চারদিক জুড়ে শুধুই নিস্তব্ধতা। শুনশান এলাকা। ওই বাড়ির দেওয়ালে অন্য কোনও দল এখনও পর্যন্ত লিখতে সাহস করে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের হাত চিহ্নের দেওয়াল লিখন এখনও জ্বলজ্বল করছে। তবে এখন এলাকার দখল নিয়েছে ঘাসফুল আর পদ্ম ফুল। বিরাট দুর্গা দালানওয়ালা সবুজ রঙের বাড়িটির একদা মালিকের নাম প্রিয় রঞ্জন দাশমুন্সি। রায়গঞ্জের ভোট বললেই যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কথা প্রথমেই মাথায় আসে সেই প্রিয় রঞ্জন দাশমুন্সি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বাড়ি লাগোয়া ষাটোর্ধ্ব মুদির দোকানের মালিক গল্প করতে করতে জানাচ্ছিলেন, একটা সময় ছিল যখন ভোট আসার বহুদিন আগে থেকে ভোট চলে যাওয়ার পর পর্যন্ত গমগম করত গোটা এলাকা। গাড়ি রাখার জায়গা থাকত না। উনি মারা যাওয়ার পর থেকেই ও বাড়িতে দুর্গাপুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনুষ্ঠা-পার্বণ থেকে ভোটের দিন, এখন সবসময়ই এমন সুনসান থাকে গোটা বাড়ি। একজন কেয়ারটেকার যিনি বেশ পুরনো, তিনিও কিছুদিন হল মারা গিয়েছেন। কলকাতার বাড়ি থেকে কেয়ারটেকার নিয়ে এসে সেখানে রাখা হয়েছে। তিনি ছাড়া আর তেমন কেউ থাকেন না এই বাড়িতে। গোটা বাড়ি জুড়ে অযত্নের ছাপ স্পষ্ট।


প্রত্যেক ভোটেই আগের দিন রাতে বাড়িতে আসেন প্রিয় রঞ্জন দাশমুন্সির স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। সকাল সকাল ভোট দিয়েই তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান। এবারের ভোটেও তার অন্যথা হয়নি। সকাল ৭টায় ভোট দিয়ে তিনি এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। একদা যে রায়গঞ্জ থেকে ভোটে জিতে দেশের রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন রায়গঞ্জের 'প্রিয় দা' (এখনও এলাকার মানুষ ওই নামেই ডাকেন), যার জন্য রায়গঞ্জের নাম জেনেছিল লোকসভার সবাই, আজ সেই দাশমুন্সি পরিবারের নাম-অস্তিত্ব অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে রায়গঞ্জের রাজনৈতিক ময়দান থেকে। প্রতিবেশীরা বলছিলেন, মাঝেমধ্যে আসলেও তো পারে, এলাকার সঙ্গে একেবারেই যোগাযোগ ছিন্ন করেছে দাশমুন্সি পরিবার।


রায়গঞ্জের এবারের বিজেপি প্রার্থী কার্তিক চন্দ্র পাল। রাজনৈতিক ময়দানে কার্তিকের হাতেখড়ি প্রিয় রঞ্জন দাশমুন্সির হাত ধরেই। তিনি বলেন, "তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন আমি-ই প্রিয় দার আবক্ষ মূর্তি ওই অঞ্চলে স্থাপন করেছি। প্রিয় দার মায়ের নামে দুর্গা মন্দিরও আছে। যে যাই বলুক, প্রিয় দা-ই আমার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু। ওনার হাত ধরেই আমার রাজনীতিতে আসা। ওনাকে আমি অন্য চোখে দেখি। অন্যভাবে সম্মান করি। তাতে কেউ কিছু মনে করলে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।"


 


আরও পড়ুন, Siliguri Vote: 'কার ভোট যে দিলাম কে জানে, আমারটা তো আগেই হয়ে গেছে!'



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)