Durga Puja 2023: যা চাইবেন, তাই পাবেন এই বড় দুর্গা মার কাছে! দূর-দূরান্ত থেকে আসেন মানত করতে...
Durga Puja 2023 in Malda: ছ`পুরুষ ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে ঘট ভরে বোধনের মাধ্যমে পুজোর সূচনা। ১২ দিন ধরে মন্দির-প্রাঙ্গণে চলে চণ্ডী পুজোও, চণ্ডীপাঠ। ৫০টিরও বেশি পাঁঠাবলি হয়। নবমীর দিন মন্দির প্রাঙ্গণে মেলাও বসে।
রণজয় সিংহ: প্রায় আড়াইশো বছরের বেশি পুরনো মালদার মানিকচকের লালবাথানি গ্রামের জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজো। একেবারে প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই দুর্গাপুজো। জমিদারবাড়ির দুর্গাপুকুর থেকে ঘট ভরে জল নিয়ে আসা হয় মন্দির প্রাঙ্গণে। একেবারে সকালবেলা দুর্গাপুকুর পাড়ে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ঘট ভরা হয়ে থাকে। সেইদিন পাঁঠাবলিও হয়। এদিনের ঘট ভরা অনুষ্ঠানে বিশেষত গ্রামের পুরুষেরা অংশগ্রহণ করে থাকেন। ঘট ভরার দিন থেকে ষষ্ঠীর আগের দিন পর্যন্ত দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে সকাল-সন্ধ্যা চলে মা চণ্ডীর আরাধনা, চলে চণ্ডীপাঠও।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: এখানে দুর্গা পূজিতা হন রুদ্ররূপে! ব্রাহ্মণ নয়, বাড়ির মহিলারাই করেন কুমারীপুজো...
আবার ষষ্ঠীর সকালে নতুন করে ঘট ভরে রীতিনীতি মেনে মা দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। দশমী পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে চলে দেবীর আরাধনা। একসময় জমিদার ও বনেদি পরিবারে বোধনের মাধ্যমে সূচনা হত দুর্গোৎসবের ।তবে সময়ের সঙ্গে বদলেছে নিয়ম-কানুন। অধিকাংশ পুজোতেই এখন আর বোধন দেখা যায় না। জেলার একমাত্র বোধন এখানেই হয় বলে দাবি জমিদার পরিবারের সদস্যদের। এই পুজো বিশেষত চ্যাটার্জি,ব্যানার্জি,মুখার্জী ও রায়বাড়ির।
লালবাথানি গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত এই মন্দিরটি। তবে কবে থেকে এই পুজোর সূচনা, তা নিয়ে ভিন্ন মত আছে। ছ'পুরুষ ধরে এই পুজো হয়ে আসছে বলে সকলের দাবি। কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে ঘট ভরে বোধনের মাধ্যমে পুজোর সূচনা। বিশেষত ১২ দিন ধরে মন্দির প্রাঙ্গণে চলে চণ্ডী পুজো। যার দায়িত্বে থাকেন জমিদার পরিবারে সদস্য। পুরোহিতের আসনে বসেন এই সব পরিবারেরই ছেলেরা-- এ বছর থাকছেন দেবায়ন মুখার্জি ও জয়গোপাল চ্যাটার্জি।
অতি জাগ্রতা দেবী হিসেবে লালবাথানির এই বড় দুর্গা বহুকাল ধরে পূজিতা হয়ে আসছেন। কথিত আছে, বড় দুর্গার কাছে মানত করলে সেই মানত পূরণ হবেই। ফলে, মানত পূরণের আশায় ভিড় জমান হাজার-হাজার ভক্ত। শুধু হিন্দুরা নন, মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষজনও এখানে মায়ের কাছে মানত করতে হাজির হন।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: মহালয়াতেই আবাহন ও বিসর্জন! শুনেছেন এমন আশ্চর্য 'ওয়ান-ডে' দুর্গাপুজোর কথা?
পুজোর দায়িত্বে থাকা সৌমেন্দু রায় ও জয়গোপাল চ্যাটার্জিরা জানান, বড় দুর্গা মা খুব জাগ্রত। মায়ের কাছে মানত করলে মানত পূরণ হয় বলে হিন্দু-মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ভিড় জমান। ৫০টিরও বেশি পাঁঠাবলি হয়। জমিদার আমলে নবমীর দিন এই মন্দির-প্রাঙ্গণে পাত পেড়ে খেতেন সমস্ত গ্রামের মানুষ। জমিদারি না থাকলেও এবং কিছুটা ছাঁটকাট হলেও সেই প্রথা এখনও অব্যাহত। নবমীর দিন মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসে, যার আকর্ষণ সারা বছরই আমাদের তাড়া করে।