Galsi: মাকে `সুস্থ` করতে গিয়ে তান্ত্রিকের সঙ্গে সমপ্রেম! জমিতে মিলল যুবকের উলঙ্গ দেহ...
শনিবার রাত থেকে জিতের কোনও খোঁজ ছিল না। ঝোপে একটা কালীর মূর্তি রয়েছে। বছরে একবার পুজো হয় সেখানে। আমরা ছুটে গিয়ে প্রথম পোশাকগুলি দেখতে পাই।
অরূপ লাহা: তান্ত্রিককের হাতে খুন হল এক যুবক। নিহত যুবকের নাম জিত দানা (১৯)। বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গলসির খেতুড়া গ্রামে। অভিযুক্ত তান্ত্রিক মিলন নাইয়াকে গলসি থানার পুলিস গ্রেফতার করেছে। সোমবার তাকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। ধৃত মিলন নাইয়ার বাড়ি গলসি বাজারের ল্যাওলাপুল এলাকায়। জেলা পুলিস সুপার আমন দীপ জানান, ধৃত সাধু মিলন নাইয়ার সঙ্গে নিহত যুবক জিত দানার সমপ্রেম সম্পর্ক ছিল। শনিবার রাত থেকে জিত নিখোঁজ ছিলেন। রবিবার সকালে বাড়ির লোকজন সাধুকে জেরা করে জানতে পারে জমিতে জিত পড়ে আছে। রাতে দু'জনের মধ্যে কোনও বিষয়ে অশান্তি হয়। তারপরই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় জিতকে।
ধৃত তান্ত্রিক নিজেকে কালীর সাধক বলে দাবি করেন স্থানীয়দের কাছে। নানা রকম তন্ত্রসাধনার কাজও করতেন। ঝাড়ফুঁক করতেন তান্ত্রিক । মৃতের পরিজনদের দাবি, শনিবার রাত থেকে জিতের কোনও খোঁজ ছিল না। রবিবার সকালে তান্ত্রিককে জিজ্ঞাসা করে জিতের নিথর দেহের খোঁজ মেলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ডিভিসি সেচখালের পাশে গলসির দয়ালপুর ও সারুলের মাঠে একটা ঝোপের পাশে জমিতে জিতের উলঙ্গ দেহ পড়েছিল। কপালে, বুকে ও পেটে একাধিক জায়গাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে দাবি মৃতের আত্মীয়দের। দেহ উদ্ধার করে পুলিস ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পাশাপাশি জিতের পোশাকগুলিও উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, ওই ঝোপে একটা কালীর মূর্তি রয়েছে। বছরে একবার পুজো হয় সেখানে।
মৃতের বাবা সমীর দানা পুরুলিয়া একটি চালকলের কর্মী। জিত রাজমিস্ত্রির যোগানদার ছিলেন। জিতের বাবা বলেন, “আমার স্ত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। বছরখানেক আগে ওই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম তন্ত্রসাধনার জন্য। সেই থেকে পরিচয়। তারপর থেকে আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করত ওই তান্ত্রিক।” সমীরবাবুর স্ত্রী মিতা বলেন, “ওই তান্ত্রিকের চালচলন ঠিক মনে হয়নি। তাই বাড়িতে আসাতে নিষেধ করেছিলাম। ছেলেকেও মেলামেশা করতে মানা করা হয়েছিল। আমরা ছেলেকে ওই তান্ত্রিক খুন করে দিতে পারে স্বপ্নেও ভাবিনি।” রবিবার সকাল পর্যন্ত জিত বাড়িতে ফিরে না আসায় সন্দেহ হয়।
মৃতার মাসি রূপা গড়াই বলেন, “ওই তান্ত্রিকের কাছেই আমরা গোনাতে গিয়েছিলাম। তখনই ওর কথায় সন্দেহ হয়। সেখানেই ওর সঙ্গে যে মহিলা ছিলেন, তাঁর মোবাইল যাচাই করে জানতে পারি জিতকে ওই মহিলা ঘটনার দিন রাতে ছ’বার ফোন করেছিল। তারপরেই তাদের চেপে ধরাতে খুনের ঘটনা জানতে পারি।” স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ পালিত বলেন, “সবাই চাপ দিতেই তান্ত্রিক জানিয়ে দেয় জিতের দেহ কোথায় পড়ে রয়েছে। আমরা ছুটে গিয়ে প্রথম পোশাকগুলি দেখতে পাই। খোঁজাখুঁজি করে দেহ মেলে।” পুলিসের দাবি, গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে তাদের প্রাথমিক অনুমান। গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খুনের পরে দেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দেহে আঘাত লেগেছে।
আরও পড়ুন, Tarakeshwar: মায়ের কাকুতিকেও উপেক্ষা, মিথ্যে চোর অপবাদে গণপিটুনি! তারকেশ্বরেও যুবকের মৃত্যু...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)