Purulia: প্রতিশ্রুতিই সার, আজও তীব্র জল সংকটে ভুগছে কোটলুই!
এখনও গ্রীষ্মকালে জলকষ্টে ভোগে পুরুলিয়ার বহু গ্রাম। প্রায় ২ কিমি পায়ে হেঁটে সেই জল বাড়িতে নিয়ে যান তাঁরা। আন্দোলনের পথেও হেঁটেছেন তারা। কিন্তু কোনও কিছুতেই লাভ হয়নি।
মনোরঞ্জন মিশ্র: প্রতিশ্রুতিই সার। আজও তীব্র জল সংকটে ভুগছে কোটলুই। কংসাবতী নদীর বালি খুঁড়ে পানীয় জল সংগ্রহ করেন গ্রামবাসীরা। ভোট আসে, ভোট যায়। নির্বাচন এলেই পুরুলিয়া জেলার প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় জল সমস্যার সমাধান। মেলে একের পর এক প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি কেউই। বাম জমানা পেরিয়ে তৃণমূলের তৃতীয় রাউন্ড। তবুও জঙ্গলমহলের প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়া জল কষ্টের সমস্যার সমাধান হয়নি।
এখনও গ্রীষ্মকালে জলকষ্টে ভোগে পুরুলিয়ার বহু গ্রাম। এমনই একটি গ্রাম পুরুলিয়া শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের সোনাইজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কোটলুই গ্রাম। প্রায় ছয় হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে কংসাবতী নদী। তবুও গ্রামে প্রায় সারা বছরই জলকষ্ট লেগেই থাকে। জল সংকট এমনই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে গ্রীষ্মের শুরুতেই শুকিয়েছে কংসাবতী নদী। বাধ্য হয়ে কংসাবতী নদীর বালি খুঁড়ে চোহা (গর্ত) তৈরী করে পানীয় জল সংগ্রহ করেন মহিলারা।
আরও পড়ুন: Heat Wave in West Bengal: কলকাতা ও রাজ্যে তাপপ্রবাহের সতর্কতা, কতদিন চলবে ড্রাই গরমের স্পেল?
প্রায় ২ কিমি পায়ে হেঁটে সেই জল বাড়িতে নিয়ে যান তাঁরা। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই নিজেদের তৃষ্ণা নিবারণ করেন কোটলুই গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামে পুকুর থাকলেও গ্রীষ্মের শুরুতেই শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে সেটা। তাই নদীর বালি খুঁড়েই চান করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ সারেন গ্রামবাসীরা। ভৌগোলিক কারণে সারা বছরই এই গ্রামের জলস্তর থাকে মাটির অনেকটা নিচে। তাই গ্রামে নলকূপ থাকলেও পর্যাপ্ত জল পড়ে না। কুয়ো থাকলেও, সেই জল পানের অযোগ্য। তাই গ্রামবাসীরা পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্রামে জল সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। বার বার দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের।
আন্দোলনের পথেও হেঁটেছেন তারা। কিন্তু কোনও কিছুতেই লাভ হয়নি। তাই এবার দাবি পূরণ না হলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট বয়কটের হুশিয়ারি দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
কোটলুই গ্রামে তীব্র জলকষ্টের বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দল সদস্য গুহিরাম মাঝির।
আরও পড়ুন: West Bengal Summer Vacation 2023: প্রবল দাবদাহে রাজ্যে বন্ধ হল স্কুল, ছুটি শেষে অতিরিক্ত ক্লাস
গ্রামের জলকষ্টের কথা মেনে নিয়েছেন সোনাইজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএমের প্রধান সুনীল কুমার সহিস। তিনি বলেন, জল জীবন মিশন প্রকল্পে এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের কাজ চলছে। ওই গ্রামেও তা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি ।
বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃনমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার বলেন, বিগত দিনের তুলনায় পুরুলিয়ার জল কষ্টের অনেকটাই সমাধান হয়েছে। তবে ভৌগলিক কারণে পুরুলিয়াতে জল সমস্যার পূর্ন সমাধান হয়নি। আগামীদিনে সেই সমস্যার সমাধান করা হবে।