নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনার জন্য আগামী ১০ জুন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ। রাজ্যের বোর্ডের  স্কুলগুলোর ষাণ্মাসিক পরীক্ষা হয় গরমের ছুটির পর। ১০ জুনের পর স্কুল খুললেই  পরীক্ষা করাতে হবে। এই কথা মাথায় রেখে অনলাইন ক্লাস করার উদ্যোগ নিয়েছেন কাঁকিনাড়া রাজলক্ষী স্কুল কর্তৃপক্ষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

করোনা আতঙ্কে লকডাউন দেশজুড়ে। স্কুল-কলেজ বন্ধ। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের পড়শুনা চালু রাখতেই কার্যত নিজেদের উদ্যোগেই অনলাইনে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করল কাঁকিনাড়ার রাজলক্ষ্মী স্কুল।


স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অভিভাবকদের সঙ্গে  কথা বলেই কয়েকদিন হল শুরু হয়েছে অনলাইনে পড়াশোনা। রীতিমতো স্কুলের সময়  ধরে  বাড়িতে বসেই প্রতিটি ক্লাসের  ক্লাস চলছে। রাজলক্ষ্মী স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা  কেউ ভিডিয়ো কল করে, কেউবা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন । ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে এই ধরনে প্রযুক্তি ব্যবহার করে পড়াশোনার রেওয়াজ আছে। এমনকি লকডাউনের জেরে কোনও কোনও স্কুল অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু বাংলা মিডিয়ামে এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্কুলের মত ক্লাস করানো একদম অভিনবত্ব।



আড়াই মাসের বেশি স্কুল বন্ধ। কোনও ক্লাসের সিলেবাস শেষ করা যাবে না। এই লকডাউনে     বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নবম এবং দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা। সে কথা মাথায় রেখেই রাজলক্ষ্মী স্কুলের পরিচালন সমিতি শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি রানা দেবদাস বলেন, "অনলাইনে পড়াশোনার জন্য স্মার্ট ফোন জরুরি। আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার পর দেখেছি ৭০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে স্মার্ট ফোন আছে। তারা অনলাইনে পড়াশোনার সরাসরি সুযোগ পাচ্ছে। বাকি ত্রিশ শতাংশ ছাত্রছাত্রীদের মোবাইলে  পড়াশোনার বিস্তারিত বিষয়  এসএমএস করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।"


স্কুলে অনলাইনে পড়াশোনা চালু হওয়ার পর শিক্ষকরা বাড়িতে বসে ঠিকমতো ক্লাস করাচ্ছেন কিনা সেটা পরিচালন সমিতির সভাপতি নিজে বাড়িতে বসে সমস্ত বিষয়টি মনিটর করছেন।


অভিনব পদ্ধতিতে এমন পড়াশোনা দারুনভাবে সাড়া ফেলেছে রাজলক্ষ্মী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই। বাড়িতে বসে অনলাইনে পড়াশোনাতে মনোযোগী হয়েছে অনেক স্কুলছুট এবং অমনোযোগী ছাত্রছাত্রীরা । এতে আরও  উৎসাহিত হচ্ছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারও। শিক্ষিকা  সুহিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "খুব ভাল সাড়া পাচ্ছি। তাতে পড়িয়ে ভীষণ আনন্দও হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো হাতে অনেক সময়। স্কুলের টাইম ছাড়া অনেক ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয় জানবার কিংবা জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পাচ্ছে। সবার মধ্যে পড়াশোনার চেষ্টা এসেছে। আর এই অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে আন্তরিকতা আরও বাড়ছে । আরেকটা বিষয় হল এরপর যখন ক্লাস শুরু হবে ছাত্রছাত্রীদের কাছে সব বিষয়টি জানা থাকবে। সময় কম থাকবে। তাই অল্পসময়ের মধ্যে বিষয়গুলো   তারা ধরতে পারব।"


আরও পড়ুন- করোনা আক্রান্ত চিকিৎসককে নিয়ে বিভ্রান্তিকর পোস্ট, গ্রেফতার কোন্নগরের শিক্ষিকা


এই অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হওয়াতে ভীষণ খুশি তানিশা গুহ , ঈশিতা বিশ্বাসরা । তারা জানায়,  "এই অনলাইনে পড়াশোনা তাদের অনেক সময়  বাঁচিয়ে দিয়েছে । সেই সঙ্গে শিক্ষিকাদের অনেক বেশি সময় ধরে পাওয়াতে পড়াশোনা যেমন ভাল হচ্ছে,  তেমনি ব্যক্তিগত সম্পর্ক আরও  সুন্দর হচ্ছে।" একই মত অভিভাবকদেরও । তারা জানান,  প্রাইভেট টিউটর বন্ধ। ফলে স্কুলের এই অনলাইন পড়াশোনাতে সুবিধা হয়েছে। বুঝতে না পারলে শিক্ষিকাদের পাঠানো ভিডিয়ো বারবার দেখে পড়া বুঝে নিতে পারছে।" সব কাঁকিনাড়া রথতলার রাজলক্ষ্মী স্কুল  লকডাউনের সময় অনলাইনে পড়াশোনা চালপ করে পথ দেখালো অন্য বাংলা মিডিয়ামের স্কুলগুলোকে। যদি কোন স্কুল এই লকডাউনের সময় এই পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালাতে চায় তাহলে তাঁরা সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে জানিয়েছেন রাজলক্ষ্মী স্কুলের কর্তৃপক্ষ।