`রেশন নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে BJP-কংগ্রেস`! পাল্টা `টেন পার্সেন্ট মন্ত্রী` কটাক্ষ অধীরের
`সালারে উসকানি দেওয়া হয়েছে...বাদুড়িয়ার ঘটনার জন্য বিজেপি নেতা রাম দাস দায়ী। দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা থেকে শুরু সব বিজেপি নেতারা কিছু না জেনে ভুলভাল কথা বলছে।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যে রেশন নিয়ে অশান্তির ঘটনায় রাজনৈতিক মদতের অভিযোগ তুললেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর অভিযোগ, রেশন নিয়ে নোংরা রাজনীতি বিজেপি ও কংগ্রেস। তথ্য না জেনে বিজেপি নেতারা ভুল বকছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। একইসঙ্গে গরিবের খাবার নিয়ে এই ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ করার ডাক দিয়েছেন তিনি।
মুর্শিদাবাদে রেশন অশান্তি
প্রসঙ্গত, এদিন রেশন বণ্টন নিয়ে অশান্তি ছড়ায় মুর্শিদাবাদের সালারে। রেশন ডিলারের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ ,ইটবৃষ্টি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় সালারে। ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিস বাহিনী। সালারের পাশাপাশি লালগোলার যশইতলায় দিয়ার ফতেপুরেও রেশন বণ্টন নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাঁরা অভিযোগ করেন, ডিলার রেশনের চালের সঙ্গে গোডাউনে খারাপ মানের চাল মেশাচ্ছেন। রেশন সামগ্রী কম পরিমাণে দিচ্ছেন।
জ্যোতিপ্রিয়র তোপ, বিজেপি-কংগ্রেসের প্ল্যানড বিক্ষোভ
রেশন নিয়ে অশান্তির এই ঘটনায় খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সরাসরি বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেসের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, "রেশন দোকানের বাইরে একটা চার্ট দেওয়া আছে। সালারে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে প্ল্যানড বিক্ষোভ হয়ছে। দুটি রাজনৈতিক দল, বিজেপি ও কংগ্রেস, এই নোংরা রাজনীতি করল। মানুষের খাবার নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে তারা। দুজন ডিলারকে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু সালারে যে ঘটনা ঘটেছে তা রাজনীতি। সালারে উসকানি দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতি সপ্তাহে ৫ কেজি করে চাল চেয়েছেন। সব রাজনৈতিক দলকে বলব খাদ্য নিয়ে এই নোংরা রাজনীতি করবেন না। বাংলায় বিজেপি কেন এই নোংরা রাজনীতি করছে? আর তাতে মদত দিচ্ছে কংগ্রেস। শুভবুদ্ধির উদয় হোক।"
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আরও বলেন, "বাদুড়িয়ার ঘটনার জন্য বিজেপি নেতা রাম দাস দায়ী। এটা ওদের দলের সংস্কৃতি। ৯ কোটি ৯৬ লাখ মানুষ-ই তো আর তৃণমূল নয়। ওখানে সিপিআইএম, কংগ্রেস, বিজেপি সবাই আছে। জয়প্রকাশ মজুমদার তো এখন ভলেন্টিয়ার হয়ে কাজ করতে পারেন। না জেনে কথা বলছে। তথ্য না জেনে কথা বলছে। দিল্লির কোনও নেতা ওদের পাত্তা দেন না। দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা থেকে শুরু সব বিজেপি নেতারা কিছু না জেনে ভুলভাল কথা বলছে।"
একদিকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যখন রেশন নিয়ে অশান্তির জন্য বিজেপি ও কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, তখন চুপ থাকেননি দিলীপ ঘোষ ও অধীর চৌধুরীও। খাদ্যমন্ত্রীর অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে, তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তীব্র সমালোচনায় রাজ্য সরকার ও খাদ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারি
"খাদ্যের ব্যাপক কেলেঙ্কারি হচ্ছে। এমন অযোগ্য খাদ্যমন্ত্রী এর আগে দেখিনি। ওর বিরুদ্ধে সবাই অভিযোগ করবে। কী করে করুক। ওকে কোর্টে টেনে নিয়ে যাব। বিরোধীরা বললে উনি বলছেন, সব একজোট হয়েছে। মানুষ খাবার না পেলে বিরোধীরা কি চুপ করে বসে থাকবে নাকি? মুখ্যমন্ত্রী আগেই পালিয়েছেন। এও বাজে বকছে। রাজ্যপালকে সব পরিস্থিতি নিয়েই জানানো হবে। কেন্দ্রের সামগ্রী থেকে কাটমানি খেতে পারবে না। তাই ওদের আগ্রহ নেই। তৃণমূলের সব নেতাদের ঘরে রেশন মজুত হয়েছে।"
'টেন পার্সেন্ট মন্ত্রী', কটাক্ষ অধীর চৌধুরীর
"বাংলার মানুষ কেন খাদ্য পাচ্ছে না? সেই প্রশ্ন তুলেছি। গত ৪০ দিন ধরে এই প্রতিবাদ করছি। রেশনের নিয়ে দুর্নীতি চলছে। কেন্দ্র স্বর্ণ চাল পাঠিয়েছে। কিন্তু মাঝ রাস্তায় চাল পাল্টাপাল্টি হয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দফতর খাদ্য দফতর। আপনার দফতরের অক্ষমতা আপনি স্বীকার করুন। রেশন দোকান আপনার বাবার নয়। কংগ্রেসকে দোষ না দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী নিজের চুরি করা সামলান। ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে চুরি আটকান। সরকারি দলের চাল চুরি করার অধিকার আছে আর বিরোধী দলের সাধারণ মানুষের হয়ে প্রতিবাদ করার অধিকার নেই? রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দফতরের দুর্নীতি সবাই জানে। সেজন্যই অফিসার বদল। খাদ্যমন্ত্রী সবেতেই ১০% কাটমানি খান। খাদ্যমন্ত্রীর আরেক নাম টেন পার্সেন্ট মন্ত্রী।"
আরও পড়ুন, 'রাজনীতি করা হচ্ছে', রেশন দেওয়া বন্ধ করতে পারে রাজ্য সরকার!