Indian Student Killed | Durgapur : গবেষণা করতে সুইডেনে গিয়ে খুন দুর্গাপুরের কৃতী ছাত্রী, দেহ ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীকে কাতর অনুরোধ মায়ের
Indian Student Killed | Durgapur : বছর ৩২ এর রোশনি দাসের স্কুলের পড়াশোনা দুর্গাপুরেই। এরপর বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে জুলজিতে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করে ওড়িশার কলিঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োটেকলোজি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখান থেকে সুইডেনের উমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করছিলেন
চিত্তরঞ্জন দাস: গবেষণা করতে সুইডেনে গিয়ে খুন হলেন দুর্গাপুরের এক তরুণীর। মৃত গবেষকের নাম রোশনি দাস। দুর্গাপুরের ডিপিএল টাউনশিপের ইএন টাইপের বাসিন্দা ছিলেন রোশনি। তার ফ্ল্যাটের মধ্যেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিসের। কেন্দ্রের কাছে রোশনির পরিবারের এখন একটাই অনুরোধ তাদের মেয়ের মৃতদেহ যেন দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করে সরকার।
আরও পড়ুন-ফের তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত! বাংলায় কি এর প্রভাব পড়বে?
বছর ৩২ এর রোশনি দাসের স্কুলের পড়াশোনা দুর্গাপুরেই। এরপর বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে জুলজিতে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করে ওড়িশার কলিঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োটেকলোজি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখান থেকে সুইডেনের উমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করছিলেন। পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয় গত মাসে ২৯ তারিখে। এরপর ৩০ তারিখ থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু তখনো পর্যন্ত এই নির্মম পরিণতির কথা কিছু জানতে পারেনি পরিবার।
এদিকে, গত ১২ অক্টোবর সুইডেন দুতাবাস থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারতীয় দুতাবাসের সঙ্গে। সেখান থেকে দিল্লি। এরপর কলকাতার ভবানী ভবন থেকে দুর্গাপুর থানায় যোগাযোগ করা হয়। তেরো তারিখ পরিবারকে দেওয়া হয় মৃত্যুর খবর। জানানো হয় এক আপার্টমেন্ট এর ভেতর থেকে রোশনির দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয়েছে এক সুইডিশ নাগরিককে। তবে কী কারণে মৃত্যু সেটা নিয়ে ধন্দে গোটা পরিবার। এখন পরিবার চাইছে, রোশনির মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের কঠোর শাস্তি হোক। মেয়ের দেহ যেন খুব তাড়াতাড়ি দেশে আনা হয়।
রোশনির খুড়তুতো ভাই সুপ্রতিম দাস বলেন, দিদি সুইডেনে রিসার্চ করছিল। গত ১৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ খবর আসে ওকে ওখানে ওর ঘরের মধ্যেই নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে। শোনার পরই আমরা এখানকার সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমাদের কাছে যেটুকু খবর আছে তা হল ওর ঘরের মধ্যেই ওর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এর জেরে ওখানকার একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ওখানকার মেডিক্যাল কলেজে মৃতদেহ রাখা রয়েছে। পোস্ট মর্টেমের জন্য ওরা আমাদের মতামত জানতে চেয়েছিলেন। গোটা বিষয়টি আমরা ভারত সরকারের উপরেই ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের সাংসদ বিষয়টি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে জানিয়েছেন। কেন খুন সে বিষয়টি নিয়ে আমরা আপাতত অন্ধকারে। কিছুই জানতে পারছি না। দূতবাসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওরাও স্টকহোলমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছেন। কীভাবে কী হল তা কিছুই জানি না। শেষবার জেঠিমার সঙ্গে কথা হয়েছিল ২৭ কিম্বা ২৯ তারিখে। ৩০ তারিখের পর থেকে ওর ফোন সুইচড অফ ছিল। কেন্দ্রের কাছে আমাদের এখন একটাই আবেদন আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ওখানে ভারতীয় পড়ুয়াদের আর যেন এভাবে মরতে না হয়। বোনের মৃতদেহ যাতে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় তার ব্যবস্থা করুক সরকার।
মেয়ের মৃত্যুতে বাক্যহারা মা। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, রিসার্চ করতে ওখানে গিয়েছিল। রিসার্চ শেষ করতে পারেনি। তাই ওখানে থেকে গিয়েছিল। সম্প্রতি ও আমার কাছ থেকে কিছু টাকা চেয়েছিল। সেই টাকা পাঠিয়েছি অক্টোবরের ৬ তারিখে। টাকা ও পেয়েছিল তা ও জানিয়ে ছিল। তার পর থেকে আর ওর কোনও খবর পাইনি। শেষ কথা হয়েছিল ২৭ কিম্বা ২৮ সেপ্টেম্বর। তার পর থেকে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। গত ১৩ তারিখে একটা ফোন আসে। ফোন ধরার পর ওপান্ত থেকে একজন বললনে, লালবাজার থেকে বলছি। বলা হয় সুইডেন থেকে লালবাজারে ফোন এসেছিল সেখানকার মর্গে রোশনি দাস নামে একজনের লাশ রয়েছে। তাকে খুন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব আণাদের মেয়ের মৃতদেহ যেন সুইডেন থেকে আমাকে ফিরিয়ে এনে দেন। আমার সেরকম আর্থিক ক্ষমতা নেই যে আমি মৃতদেহ ফিরিয়ে আনব।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)