প্রসেনজিৎ মালাকার: কাউন্সিলরের হাত ঘুরে মুখবন্ধ খামে টাকা পৌঁছাত বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের কাছে? 'জীবন'-চরিত ঘাঁটতে ঘাঁটতে এবার সামনে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। জীবনকৃষ্ণ সাহার দুর্নীতির সঙ্গে এবার নাম জড়াল সাঁইথিয়া পুরসভার এক কাউন্সিলরের। অভিযোগ, কাউন্সিলরের কাছ থেকে প্রতি মাসেই জীবনকৃষ্ণের কাছে যেত মুখবন্ধ খাম! যে খাম নিয়ে যেত, সে-ও স্বীকার করে নিয়েছে খাম নিয়ে যাওয়ার কথা। বিরোধীদের অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে এই কাউন্সিলরই ছিলেন জীবনের লিংকম্যান।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বীরভূমের সাঁইথিয়ার সঙ্গে আগেই নাম জড়িয়েছে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার। সাঁইথিয়ায় যেমন তাঁর আসা যাওয়া ছিল, তেমনই তাঁর বিপুল সম্পত্তিরও হদিস পাওয়া গিয়েছে সাঁইথিয়াতে। অন্যদিকে, তাঁর চাকরি দুর্নীতির জাল যে বীরভূমেও ছড়িয়ে রয়েছে তাও প্রমাণিত। আর সেই চাকরি দুর্নীতির জালে এবার নাম জড়াল সাঁইথিয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু রায়ের নাম।। সাঁইথিয়া শহরের আনাচ-কানাচে কান পাতলেই শোনা যায়, এই কাউন্সিলরের সাথে জীবনকৃষ্ণ সাহার সুসম্পর্কের কথা। আর এই কাউন্সিলরই ছিলেন সাঁইথিয়া শহরে জীবনের লিংকম্যান। যাঁর হাত ধরে জীবনের কাছে পৌঁছে যেত মুখবন্ধ খাম।


কাউন্সিলরের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ গৌর হালদার বলেন, তিনি শান্তনু রায়ের কথায় প্রায়ই মুখবন্ধ খাম পৌঁছে দিতেন জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে। প্রায় ৪-৫ বার গিয়েছেন। গৌরবাবুর মতো কাউন্সিলরের অনেক লোকই খাম নিয়ে যেতেন বলে খবর। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তনু রায়। তাঁর পালটা দাবি, তাঁদের একটি ট্রাস্ট আছে। সেই ট্রাস্টের সদস্য জীবনবাবু। সেই  মতোই তিনি মাঝে মধ্যেই আমন্ত্রণ  কার্ড বা অন্যান্য অনুষ্ঠান সূচি পাঠাতেন। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে, আমন্ত্রণ কার্ড কি মুখবন্ধ খামে পাঠাতে হয়? মুখবন্ধ খামে পাঠানোর দরকারটাই বা কী? 


এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি। বিজেপি নেতা শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'দুর্নীতি আগেই সামনে এসেছে। তদন্তে আরও অনেক কিছু সামনে আসবে। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরবে।' প্রসঙ্গত, বর্তমানে ৪ দিনের সিবিআই হেফাজতে আছেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ওদিকে জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারের পর এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে তৃণমূল বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রী টগরী সাহার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারি মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১২টি অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। এর মধ্যে বিধায়কের নামে ৪টি ও তাঁর স্ত্রীর নামে ৩টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। 


এই অ্যাকাউন্টগুলিতে কত টাকা রয়েছে এবং লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ব্যাঙ্কের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বীরভূমেও জীবনকৃষ্ণের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সূত্রের খবর, বীরভূমের সাঁইথিয়া, তালতোড়, তাতারপুর, বাঁধগোড়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদের আন্দিতে বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৮-১০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে সিবিআইয়ের নজরে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের সম্পত্তি। 


আরও পড়ুন, Jiban Krishna Saha: ৬৫ ঘণ্টার রেকর্ড জেরা! দুর্নীতির 'জীবন'চরিতে গরুপাচার কারনামাও



 (Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)