দেবব্রত ঘোষ: সরস্বতী পুজোর দিন সারা বাংলার ঘরে-ঘরে বিদ্যাদেবীর আরাধনা হয়। সরস্বতী পুজো হয় স্কুল-কলেজ-সহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ক্লাবে। তবে এসবের পাশাপাশি একটু ভিন্ন রকম মণ্ডপেও কখনও কখনও হয় বাগদেবীর আরাধনা। যেমন, আন্দুলে। প্রাচীন আন্দুল রাজবাড়ির সরস্বতী পুজো এ অঞ্চলের খুবই বিশিষ্ট। এবারও এ পুজো হচ্ছে সমস্ত রীতিনীতি মেনেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Saraswati Puja: বিদ্যাদেবীর যথাবিহিত আরাধনা বেলুড় মঠে, হল হাতেখড়ি দেওয়ার অনুষ্ঠানও...


আন্দুল রাজবাড়ি আর শোভাবাজার রাজবাড়িকে সমসাময়িক মনে করা হয়।  দুজনেরই বয়স কাছাকাছি। অথবা আন্দুল রাজবাড়ির ইতিহাস আর একটু কম প্রাচীন বলে কেউ কেউ উল্লেখ করেন। তবে মোটামুটি ২০০ বছর ছুঁই-ছুঁই হবেই আন্দুল রাজবাড়ির ইতিহাস। সেই হিসেবে এ রাজবাড়ির সরস্বতী পুজোও খুব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী।


এখন আন্দুল রাজবাড়ির সরস্বতী পুজোর দায়িত্ব এ বাড়ির নতুন প্রজন্মের হাতে। নতুন প্রজন্মেরা এ বাড়ির ১১ তম বংশধর বলে জানা গিয়েছে। তাঁরাই জানান, অনির্দিষ্ট কোনও কারণে এই বাড়ির সরস্বতী পুজো মাঝে একবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে ২০০৮ সালে রাজবাড়ির পুরনো ঐতিহ্য মেনে ফের এ পুজো শুরু হয়। রাজবাড়ির অতীতের পুজোর আচার এবং বিধান এখনও পালন করা হয়। যদিও তার মধ্যে কিছুটা পরিবর্তনসাধনও করা হয়েছে।


এ বাড়ির আদি প্রতিমার আদলে কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। সেই প্রাচীন ডাকের সাজেই আজও সজ্জিত হয় প্রতিমা। রাজবাড়ির বর্তমান সদস্যরা পুজোর দিনে যথারীতি একসঙ্গে মিলিত হন। সন্ধ্যাবেলায় সকল ভক্তদের এবং দর্শনার্থীদের জন্য খিচুড়ি ভোগ প্রসাদ দেওয়া হয়। পুরনো ঐতিহ্য মেনেই এ রাজবাড়ির সরস্বতী পুজো যেমন আগে হত, তেমন ভাবেই চালানো হচ্ছে এবং আগামী দিনেও এই ভাবেই চালানো হবে বলে জানান এ বাড়ির বর্তমান সদস্যরা। তাঁরাই এ পুজো চালিয়ে যাবেন বলে জানান।


রাজা রামনারায়ণ বাহাদুর ছিলেন লর্ড ক্লাইভের দেওয়ান। পরে তিনি ওয়ারেন হেস্টিংসের দেওয়ান হন। সেই সময় তিনি প্রভূত ধনসম্পত্তির অধিকারী হন। এই রামনারায়ণই ১৮৩০ সালে হাওড়ার সরস্বতীনদীতীরস্থ জমিতে এই বিশাল প্রাসাদটি তৈরি করান। কাজ শেষ হয় ১৮৩৪ সালে। রাজবাড়িটি গ্র্যানভিল ম্যাক্লিওড কোম্পানি নির্মাণ করেছিল।


আরও পড়ুন: Gota Seddho: কেন সরস্বতীপুজোর পরদিন খেতেই হয় গোটাসেদ্ধ? প্রকৃত কারণ জানলে বিস্মিত হবেন...


বাড়ির সামনে কেবল মাঝের অংশেই ১২টি স্তম্ভ, একেকটি প্রায় ৬০ ফুট উঁচু। এটি নাচঘর। এই অংশে ভিতরে এককালে ২০টি বাহারি স্তম্ভ ছিল। ঝুলত ঝাড়বাতিও। নাচগানের মজলিস লেগেই থাকত। এর দু’পাশে তিন তলা ভবনের দু’টি অংশ। প্রতিটি তল ২০ ফুট উঁচু। এই তিন তলের অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে নাচঘর ভেঙে পড়েছে। এখন বাড়িটির চারপাশে আগাছা। এ বাড়ির পাশেই অন্নপূর্ণামন্দির। প্রবেশমুখে কামান। দুর্গাপুজোয় মোষবলি দেওয়ার সময়ে কামান দাগা হত। মূল মন্দিরের দুপাশে শিবমন্দির। অবহেলায় প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন এই বাড়ির স্থাপত্যের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। তবে, এখনও এই পরিস্থিতির মধ্যেই পুজোর আয়োজন হয়ে চলেছে। 


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)