Gota Seddho: কেন সরস্বতীপুজোর পরদিন খেতেই হয় গোটাসেদ্ধ? প্রকৃত কারণ জানলে বিস্মিত হবেন...
Gota Seddho on the occasion of Saraswati Puja: শীত বিদায় নিচ্ছে। আসছে বসন্ত। এই আবহে প্রতি বছরই পড়ে সরস্বতীপুজো। আর এই পুজোর অনুষ্ঠানের সঙ্গেই জুড়ে থাকে গোটা সেদ্ধর পার্বণ। কেন এই প্রথা?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শীত বিদায় নিচ্ছে। আসছে বসন্ত। এই আবহে প্রতি বছরই পড়ে সরস্বতীপুজো। আর এই পুজোর অনুষ্ঠানের সঙ্গেই জুড়ে থাকে গোটা সেদ্ধর পার্বণ।
আরও পড়ুন: এবছর কবে সরস্বতী পুজো, ১৪ না ১৫ ফেব্রুয়ারি? কতক্ষণ থাকবে তিথি? জেনে নিন পুজোর শুভ মুহূর্ত...
সরস্বতী পুজোর দিনে বিকেলে প্রায় প্রতি বাড়িতেই (এ দেশীয়দের) গোটা সেদ্ধ'র পালা থাকে। সরস্বতী পুজো হয় পঞ্চমী তিথিতে, পরদিন ষষ্ঠী। এই ষষ্ঠী 'শীতল ষষ্ঠী' হিসেবেই পরিচিত। এদিন মা ষষ্ঠীর পুজো দেওয়া নিয়ম। আর পুজোর পরে খাওয়া। তবে, এদিন সবই শীতল মানে, ঠান্ডা খেতে হয়। নিয়ম এতদূর কড়া যে, যিনি ব্রতধারিণী তিনি এই শীত-শীত পরিবেশে সকালের গরম চা-টাও খান না! চা খেলে খেতে হয় ঠান্ডা করে!
কী হয় গোটা সেদ্ধয়?
এটি একটি বিশেষ পদ। এবং নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এই পদটি রান্না হয় সব গোটা সবজি দিয়ে। সরস্বতী পুজোর দিন বিকেলে সমস্ত সবজি গোটা-গোটা সেদ্ধ করা হয়। হাঁড়িতে জল দিয়ে সেদ্ধ করা হয় এই সব সবজি। তেল, নুন বা হলুদ সাধারণত দেওয়া হয় বা দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট পরিবারের নিজস্ব নিয়মমাফিক। এদিন এই রান্নায় থাকে গোটা বেগুন, গোটা সিম, গোটা নতুন আলু, গোটা কড়াইশুটি, গোটা রাঙালু, সজনে ফুল এবং গোটা ছোলা-মটর সহ পাঁচরকম কড়াই, যাকে আমরা পাঁচকড়াই বলে থাকি; আর থাকে শিষওয়ালা পালং এবং পুঁই ডাল। কেউ কেউ গোটা গোটা কাঁচালঙ্কাও দেয়। এই পদটির সঙ্গে কুলের টক খাওয়ার রীতি। আর থাকে জল দিয়ে রাখা ঠান্ডা ভাত। পঞ্চমীর বিকেলে এসব রেঁধে রেখে পরদিন ষষ্ঠীর সকালে গরম না করে এগুলি খাওয়া হয়।
কেন এমন অদ্ভুত রান্নার রীতি, কেন খাওয়া হয় এটি?
এমনিতে খুবই সুস্বাদু এই গোটা সেদ্ধ পদটি। তবে নিছক স্বাদের জন্য যে, এটি খাওয়া হয়, তা কিন্তু নয়। এই সময়ে এই পদটির রীতিমতো শারীরিক উপকারিতা রয়েছে। ঋতুবদলের সময়ে সাধারণত যেসব রোগ-ভোগগুলি লেগেই থাকে এটি তাদের নাছোড় জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার প্রয়োজনীয় প্রতিরোধশক্তি সরবরাহ করে শরীরকে। এ সময়ে হঠা। করে ঠান্ডা থেকে গরম পড়তে শুরু করে, বসন্ত বা চিকেন পক্স হয় ঘরে-ঘরে। এ সময়টা খুব সাবধানে থাকতে হয়। খাওয়া-দাওয়ারও কিছু বিধিনিষেধ থাকে।
তবে, মানুষকে তো আর বললেই এরকম একটি ডিশ তারা রেঁধে খাবে না! এমনি-এমনি এই সেদ্ধ ঠান্ডা খাবার খেতে তাঁদের বয়েই গিয়েছে! তাই মনে করা হয়, যাঁরা একদা এই সব নিয়ম-কানুন তৈরি করেছিলেন, তাঁরা ইচ্ছে করেই এটি শীতল ষষ্ঠী ব্রতের সঙ্গে বেঁধে দিয়েছেন। যাতে মানুষ বাধ্যতামূলক ভাবে এটি মেনে চলে। আর সেই পরিকল্পনামতোই এটি আসে সরস্বতীপুজোর সময়ে, যেটি আবার বসন্তের শুরুরই এক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপ ও উচ্চচাপের জোড়া ফলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা রাজ্যে...
তাই আজও সরস্বতী পুজোর পরের দিন গোটা সেদ্ধ খাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। ইদানীং কর্মব্যস্ত বাঙালির একাংশ হয়তো এই রীতি পালন করতে ভুলে যায়, বা করে না। তবে, একথা ঠিক, বাড়ির মা-ঠাকুমাদের হাতে তৈরি এই গোটা সেদ্ধ এতই সুস্বাদু যে, এত কিছু না ভেবে, শুধু খাওয়ার জন্যই খাওয়া যেতে পারে পদটি। লাভ বই ক্ষতি নেই!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)