খাবার নেই, গালিগালাজ, মারধর! ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ মা বাবা
পেল্লায় তিনতলা বাড়ি পাল দম্পতির। দুই মেয়ে, এক ছেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ভরা সংসার। কিন্তু এই ভরা সংসারই ক্রমশ একা করে দিচ্ছে অশীতিপর বৃদ্ধ দম্পতিকে। ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চিত্তবিনোদ পাল ও ডলিরাণী দেবীর খাবার জোগাড়ের সামর্থ্যটুকুও নেই।
ব্যুরো: পেল্লায় তিনতলা বাড়ি পাল দম্পতির। দুই মেয়ে, এক ছেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ভরা সংসার। কিন্তু এই ভরা সংসারই ক্রমশ একা করে দিচ্ছে অশীতিপর বৃদ্ধ দম্পতিকে। ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চিত্তবিনোদ পাল ও ডলিরাণী দেবীর খাবার জোগাড়ের সামর্থ্যটুকুও নেই।
একজনের বয়স সাতাত্তর, অন্যজন আটষট্টি। একে অন্যকে অবলম্বন করে প্রাণপন চেষ্টা করছেন অস্তিত্ব রক্ষার, বেঁচে থাকার।
দীর্ঘদিন বিছানায় শয্যাশায়ী চিত্তবিনোদ পাল। বিছানা ছেড়ে ওঠবার ক্ষমতা নেই। একই অবস্থা ডলিরাণি দেবীরও। খিদের জ্বালায় কুঁকড়ে শীর্ণ হয়ে যাচ্ছেন ক্রমশ। সালকিয়ায় পেল্লায় তিনতলা বাড়ি পাল দম্পতির। দুই মেয়ে , এক ছেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ভরা সংসার। কিন্তু এই ভরা সংসারই ক্রমশ একা করে দিচ্ছে অশীতিপর বৃদ্ধ দম্পতিকে।
ওষুধ নেই। পথ্যি নেই। টাকা নেই। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী চিত্তবিনোদবাবুর এক একটা দিন যেন গোটা বছরের সমান। যে সন্তানকে লালন করেছেন পরম আদরে, বুকে জড়িয়ে সমস্ত বিপদ থেকে আগলেছেন, সেই সন্তানই বৃদ্ধ বাবা-মাকে ছুঁড়ে দিয়েছে সবথেকে বড় বিপদের মধ্যে। গালিগালাজ। মারধর। অশালীন ভাষার ব্যবহার। বাদ নেই কিছুই। ক্রমশ কুঁকড়ে যাওয়া পাল দম্পতির ঘরের কোণে ডুকরে কাঁদা ছাড়া আর কোনও উপায়ই নেই। বিষয়-আশয় গিয়েছে সবই। সম্বল বলতে বাড়িটুকু। তারই একটা ঘর ভাড়া দিয়ে যে টাকা , তাতেই দিন গুজরান হত। তাও এখন বন্ধ। কারণ সেই ঘরেও তালা দিয়েছেপাল দম্পতির ছেলে সুমন।
২০১২ সাল থেকে দফায় দফায় গোলাবাড়ি থানায় দরবার করেছেন। ছুটেছেন লালবাজারে। কড়া নেড়েছেন মানবাধিকার কমিশনেও। হাওড়া পুলিস কমিশনারেটে গিয়ে জুটেছে অপমান। আর ছেলের কাছ থেকে ঘটনা জানতে গিয়ে অন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম আমরাও। এখন শুধু প্রতীক্ষাই সম্বল পাল দম্পতির। স্মৃতি হাতড়ে ফিরে যান অতীতে...যেখানে স্বপ্নের মত একটা সংসার ছিল...সন্তান...স্নেহ...ভালবাসা...আর এখন....দীর্ঘশ্বাস...