নিজস্ব প্রতিবেদন:   “অনেক হয়েছে বাজে কথা। সরিয়ে দেওয়ার হলে, সরিয়ে দিন।” যখন  প্রশাসনিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে সেই ভিডিও,যখন বিতর্ক-আলোচনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই নিজের স্বামীর পক্ষে দাঁড়িয়ে ও তাঁর কাজকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করলেন আলিপুরদুয়ারের বিতর্কিত জেলাশাসক নিখিল নির্মলের স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণণ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

নন্দিনী লিখেছেন, “অনেক বাজে কথা হয়েছে। সরানোর হলে সরিয়ে দিন। কিন্তু কোনও সংসারী মানুষকে তাঁর বউ-বাচ্চা নিয়ে উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করুন। সব কিছু কি তোমাদের জানা আছে? ভিডিও কী দেখানো হচ্ছে? যা দেখানো হচ্ছে, তা বুঝেশুনেই দেখানো হচ্ছে। যেটা আসলে হয়েছে, তা পুরো দেখানো হয়নি। হ্যাঁ, আমি চড় মেরেছি, লাথি মেরেছি। আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকতো তো এমন মানুষকে মেরেই ফেলত। আমার স্বামী আমাকে বিয়ে করার সময়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘আমি তোমার দেখভাল করব। তোমাকে রক্ষা করব। তোমার জন্য দাঁড়াব, সে কোনও পরিস্থিতিই আসুক না কেন।’  আমি আমার স্বামীর জন্য গর্ব বোধ করি। উনি সত্যিকারের নায়ক।  কেউ আপনার স্ত্রী, বোন, মেয়েকে বাজে কথা বললে, আপনারা কী করতেন? নিখিলের প্রতি আপনাদের ব্যবহার দেখে মনে হচ্ছে, ‘কী হয়েছে ধর্ষণ তো করে দেয়নি, শুধু বাজে মন্তব্যই তো করেছে। থাপ্পড় মারা উচিত হয়নি।’ তাই তো? আরে গোল্লায় যাক এমন সমাজ, যা তাঁর প্রতিশ্রুতি মর্যাদা দিতে ভুলিয়ে দেয়।”


আরও পড়ুন: ফেসবুকে স্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য, থানায় ডেকে যুবককে বেধড়ক মার জেলাশাসকের


তিনি আরও বলেন, “চাকরি নেই, তো নেই। সব চলবে। কিন্তু ভালোবাসা সঙ্গে রয়েছে, এটাই অনেক বড় কথা। আমি তোমাকে ভালোবাসি নিখিল। আমি তোমার জন্য গর্বিত। আমি ভাগ্যবতী যে তোমার মতো একজনের স্ত্রী, প্রিয় বন্ধু, তোমার সন্তানের মা হতে পেরেছি।”


শেষে নন্দিনী বলেন, “আমার মৃত্যুর পরও তোমার দিকে কারোর আঙুল তুলতে দেব না। তাতে আমাকে মরতে হলেও হবে, তোমার সামনে দেওয়ালের মতো দাঁড়াব। যেমনটা সবসময় দাঁড়িয়েছি।”   


 



নন্দিনী কৃষ্ণণ তাঁর এই ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে অভিযুক্ত যুবক বিনোদ সরকারের করা একটি মন্তব্যের ‘স্ক্রিন শট’ও শেয়ার করেছেন। ইতিমধ্যেই এই ভিডিও নিয়ে নবান্নে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।  নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে ১০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই ভিডিওটির সত্যতা খতিয়ে দেখা হবে। এরপর পদ্ধতি মেনে তাঁকে শোকজ করা হতে পারে। ফের তদন্ত হবে। সবকিছু বিবেচনা করে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে। কীভাবে থানার মধ্যেই আইসির উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আইসির ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।


জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে প্রশাসনিক মহলে। যাঁরা আইনের রক্ষক, তাঁরাই কীভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন? তাহলে সাধারণ মানুষ কী করবে? এইভাবে কি থানার মধ্যেই জেলাশাসক একজনকে বেধড়ক মারধর করতে পারেন? তার উপর তাঁর স্ত্রী-ও! যেখানে ভিডিও দেখা যাচ্ছে, আইসি বারবার অভিযোগ দায়ের করার জন্য বলছেন তাঁদের।   বিষয়টি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠছে।


প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে,  থানার মধ্যেই এক যুবককে বেধড়ক মারধর করছেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক তথা আইএএস অফিসার নিখিল নির্মল। চলছে বেপরোয়া কিল, চড়, ঘুষি, লাথি।  দাপট দেখাতে বাদ যাননি তাঁর স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণণ । ফেসবুকে একটি গ্রুপে তাঁকে এড করেছিলেন অভিযুক্ত যুবক বিনোদ সরকার। তারপর তাঁর উদ্দেশে একাধিক নোংরা, অশ্লীল কথা বলছিলেন তিনি। তারপরের ঘটনা দেখুন ভিডিওতে-...