Howrah Murder: প্রথম পক্ষের সন্তানকে মানতে আপত্তি! ৪ বছরের ছেলেকে `খুন` সৎ বাবার
সিসিটিভি ফুটেজে সৎ বাবা উমেশ দুবেদীর সঙ্গে সাহিলকে দেখা যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রথম পক্ষের সন্তানকে মানতে পারেননি সৎ বাবা (Step Father)। আর তাই ৪ বছরের শিশু সন্তানকে খুনের (Murder) অভিযোগ উঠল সৎ বাবার বিরুদ্ধে। মৃতের নাম সাহিল শেখ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বাঁকড়া (Howrah) এলাকায়। খুনের ঘটনায় দ্বিতীয় পক্ষের বাবা উমেশ দুবেদীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
জানা গিয়েছে, রবিবার থেকেই নিখোঁজ ছিল ৪ বছরের সাহিল শেখ। হাওড়ার ডোমজুড়ের বাঁকরা এলাকায় থাকত সে। রবিবার বিকেল থেকেই তার কোনও খোঁজ মিলছিল না। ওই শিশুর ছবি দিয়ে 'সন্ধান চাই' বলে পোস্টারও তৈরি করা হয়। তবে সেই পোস্টার বিভিন্ন জায়গায় টাঙানোর আগেই সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ খোঁজ মেলে খুদে সাহিলের। বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে হাওড়া থানার অন্তর্গত টিকিয়াপাড়া বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় ৪ বছরের একরত্তি সাহিল শেখের নিথর দেহ (Howrah Murder) উদ্ধার হয়। টিকিয়াপাড়া এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের আন্ডারগ্রাউন্ড রিজারভারের জলে নিহত সাহিলের দেহ ভাসতে দেখা যায়।
খবর পেয়েই হাওড়া থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দেহ উদ্ধার করে। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে বাড়ির লোকজনও। কিন্তু বাড়ি থেকে এতদুরে কীভাবে সাহিল এল? কে তাকে খুন করল? তা নিয়েই ধোঁয়াশা ছড়ায়। ধন্দে পড়ে পুলিসও। তারপরই প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে যে ৪ বছরের সাহিলের খুনের পিছনে হাত রয়েছে সৎ বাবা (Step Father) উমেশ দুবেদীর। সূত্র মারফত পুলিস জানতে পারে যে, নিহত সাহিল শেখের মায়ের দুটি বিয়ে। প্রথম পক্ষের সন্তান ৪ বছরের সাহিল। তারপরই উমেশ দুবেদীকে বিয়ে করেন সাহিলের মা। কিন্তু প্রথম পক্ষের সন্তানকে মানতে চাননি উমেশ। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে বিবাদ চরমে পৌঁছেছিল।
এর পাশাপাশি, তদন্তে পুলিসের হাতে আসে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ। সেই ফুটেজে সৎ বাবা উমেশ দুবেদীর সঙ্গে সাহিলকে দেখা যায়। যা থেকেই আরও জোরালো হয় সন্দেহ। শুরু হয় সৎ বাবা উমেশ দুবেদীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ। জেরার পরই তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। জানা গিয়েছে, বাঁকড়ার বাসিন্দা আসমা খাতুন আগে একজনকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের একটি পুত্রসন্তান হয়। আসমা পেশায় নর্তকী। পূজা নামে বিহারে অনুষ্ঠান করতেন। সেখানেই আলাপ হয় উমেশ দুবেদীর সাথে। উমেশ দুবেদীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বছরখানেক আগে উমেশ দুবেদীকে বিয়ে করেন। কিন্তু অভিযোগ, উমেশের কাছে প্রথম বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রেখেছিলেন আসমা। পরে তা জানতে পেরেই অশান্তি শুরু হয়।
কিছুদিন আগে দিল্লিতে কাজে যান আসমা। তখনই তাঁর শিশুসন্তানকে খুনের পরিকল্পনা করে উমেশ। বাঁকড়ায় দিদার বাড়িতে ছিল সাহিল। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে উমেশ টিকিয়াপাড়ায় বাইপাস সংলগ্ন নির্মীয়মাণ বহুতলটি দেখতে পান। দীর্ঘদিন ধরেই সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। আসমার ৪ বছরের সন্তানকে সেখানে নিয়ে এসে নির্মীয়মাণ বহুতলের আন্ডারগ্রাউন্ড জলাধারে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় সৎ বাবা উমেশ। হত্যা করে স্ত্রীর প্রথম পক্ষের সন্তানকে। বাঁকড়া থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই রহস্যের কিনারা করেছে পুলিস।
আরও পড়ুন, এবারের বাজেটে কী কী সস্তা হল, কোনটা হল দামী? জেনে নিন