Waterbody Census: দুঃসময়েও রুপোলিরেখা, দেশে সবচেয়ে বেশি জলাশয় বাংলায়!
জলশক্তি মন্ত্রক থেকে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, জলাশয় সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে মোট জলাশয়ের সংখ্যা ৭,৪৭,৪৮০টি। সবচেয়ে কম জলাশয় রয়েছে সিকিমে যা মাত্র ১৩৪টি।
শতরূপা কর্মকার: বিগত কয়েকদিন ধরে একটানা চলা তাপপ্রবাহের জেরে নাজেহাল বঙ্গবাসী। একদিকে দাবদাহ, অন্যদিকে তীব্র জলকষ্ট। ফলে পানীয় জলের সংকটে পথ অবরোধও করেছেন মহিলারা। তবে এর মধ্যেই সামনে এসেছে জলাশয় শুমারির একটি রিপোর্ট। জলশক্তি মন্ত্রক থেকে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জলাশয় সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সমীক্ষা অনুসারে দেখা গিয়েছে, ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে সর্বাধিক জলাশয়ের সংখ্যা। যা মোট ৭,৪৭,৪৮০টি। এর পরই রয়েছে উত্তর প্রদেশ (২,৪৫,০৮৭), অন্ধ্র প্রদেশ (১,৯০,৭৭৭), ওড়িশা (১,৮১,৮৩৭), আসাম (১,৭২,৪৯২), ঝাড়খন্ড (১,০৭,৫৯৮) ও তামিলনাড়ু (১,০৬,৯৫৭)। সবচেয়ে কম জলাশয় রয়েছে সিকিমে যা মাত্র ১৩৪টি।
এই জলাশয় শুমারির লক্ষ্য দেশের সমস্ত জলাশয়ের আকার, অবস্থা, দখল বা বুজিয়ে ফেলা, সঞ্চয় ক্ষমতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির তথ্য সংগ্রহ করে একটি জাতীয় ডাটাবেস তৈরি করা। শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলই এই শুমারিটির অধীনে ছিল। একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে জলাশয়ের ছবিসহ অন্যান্য সকল তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Maoist Poster: দিনেদুপুরে এবার মাওবাদী পোস্টার বারাসতের হৃদয়পুরে....
জলাশয় শুমারির রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের ২৪.২৪ লক্ষ জলাশয়ের মধ্যে ৯৭.১ শতাংশ বা ২৩.৫৫ লক্ষ গ্রামীণ এলাকায় এবং মাত্র ২.৯ শতাংশ বা ৬৯,৪৮৫টি শহরাঞ্চলে রয়েছে। জলাশয়ের ৫৯.৫ শতাংশ পুকুর, তারপরে ট্যাঙ্ক (১৫.৭ শতাংশ), জলাধার (১২.১ শতাংশ), জল সংরক্ষণ প্রকল্প/পার্কোলেশন ট্যাঙ্ক/চেক ড্যাম (৯.৩ শতাংশ), হ্রদ (০.৯ শতাংশ), এবং অন্যান্য (২.৫ শতাংশ)। সর্বাধিক পুকুর এবং জলাশয়ের থাকার কারণে তালিকার শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, যেখানে অন্ধ্র প্রদেশে সর্বাধিক ট্যাঙ্ক রয়েছে এবং তামিলনাড়ুতে সর্বাধিক হ্রদ রয়েছে। এছাড়াও, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জল সংরক্ষণ প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র সারা দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় রাজ্য।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী আরও দেখা গিয়েছে যে মোট জলাশয়ের ৮৩.৭ শতাংশ জলাশয় মাছ চাষ, সেচের কাজ, গার্হস্থ্য প্রয়োজনে ও পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকি ১৬.৩ শতাংশ জলাশয় বিভিন্ন কারণে অব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠেছে। তার মধ্যে শুকিয়ে যাওয়া, পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণ কাজ, পলি, লবণাক্ততা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, শুধুমাত্র গ্রামীণ বা শহর এলাকাই নয়, মোট জলাশয়ের ৯.৬ শতাংশ জলাশয় উপজাতীয় এলাকায়, ৮.৮ শতাংশ বন্যাপ্রবণ এলাকায়, ৭.২ শতাংশ "খরা প্রবণ এলাকা কর্মসূচির" অধীনে এবং ২ শতাংশ নকশাল-প্রবণ এলাকায় অবস্থিত।
আরও পড়ুন: Frog Marriage | Rain: বৃষ্টিতে শান্ত হোক খরাক্লান্ত ধরা, শান্তিপুরে ব্যাঙের বিয়ে
এই শুমারিটি জলশক্তি মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় স্পনসরড স্কিম সেচ শুমারির অধীনে ষষ্ঠতম ক্ষুদ্র সেচ শুমারির সঙ্গে একত্রিত হয়েছে। তবে দেখা গিয়েছে যে, এই জলাশয়গুলির মধ্যে বেশীর ভাগটাই অবস্থিত গ্রামীণ এলাকাগুলিতে। ৯৫.৪ শতাংশ রয়েছে গ্রামগুলিতে এবং মাত্র ৪.৬ শতাংশ শহরে। এর মধ্যে ৫৫.২ শতাংশ জলাশয় ব্যক্তি মালিকানাধীন ও ৪৪.৮ শতাংশ সরকারি মালিকানার ডোমেনে রয়েছে।