জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আমফানের চার বছর পর ক্ষতিপূরণের টাকা রিফান্ড চেয়ে নোটিস ব্লক প্রশাসনের। ২০২০ সালের ২০ মে মাসে সুপার সাইক্লোন আমফানের তান্ডবে রাজ্যে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন বহু মানুষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কেন্দ্রের তরফ থেকে এই রাজ্যের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩,৭০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়।


ক্ষতির পরিমাণ পরিমাপ করে ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদান বন্টন করে রাজ্য সরকার। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা। মাঝারি ক্ষতিগ্রস্তদের দশ হাজার টাকা এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত দের জন্য ২০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়।


তবে সেই সময় আমফানে ক্ষতিপূরণের নামে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। সেই সময় হাই কোর্টের নির্দেশে সিএজি ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকা যাচাই করে। সিএজি-র রিপোর্ট অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একই ব্যক্তিকে দুবার করে ক্ষতি পূরণ দেওয়া হয়েছে বলে একটি তালিকা প্রকাশ করে এবং প্রতিটি জেলায় সেই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনের কাছে। সেই মত টাকা ফেরতের জন্য সেই সময় ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল সমস্ত জেলায়।


আরও পড়ুন: Jalpaiuri: অত্যাচারের প্রতিবাদ! কান কামড়ে নিল আক্রমণকারী


এবার চার বছর পর ক্ষতি পুরণের অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারকেশ্বর ব্লকের বেশ কয়েক জন আমফানে অনুদান প্রাপককে।


তার মধ্যে নোটিস প্রাপক তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙ্গা পঞ্চায়েতের গনাদপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়ে যা ছবি ধরা পড়লো তা প্রায় আতঁকে ওঠার মত। চার বছর পরও আমফানের চিন্হ এখনও বর্তমান। ছিটে বেড়া দেওয়া ঘরের দেওয়াল, ভাঙা এসবেস্টারের চাল। কোনওরকমে মা, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন প্রশান্ত চক্রবর্তী।


১৬ সালে একটি দুর্ঘটনায় ভেঙেছিল কোমড়। তার পর থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। বর্তমানে মায়ের বার্ধক্যভাতা, স্ত্রীর লক্ষী ভান্ডার এবং নিজে পূজা-অর্চনা ও ভিক্ষা করে কোনও রকমে দু’বেলা আধপেটা খেয়ে জীবন যাপন করছেন তার গোটা পরিবার। তার উপর দুই মেয়ের লেখা পড়ার খরচ জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশান্ত বাবুকে।


সেই সময় আমফানের তান্ডবে বাড়িতে গাছ পরে ভেঙেছিল। সেই ভাঙা বাড়িতেই আজও বসবাস করছেন তিনি ও তার পরিবার। সেই সময় ক্ষতিপূরণের আবেদন করে দশ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণও পেয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর।


আরও পড়ুন: Sandeshkhali Violence: অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি, 'পুলিস ছিল না, পরে এসেছে', ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা!


তবে ২০ সালের অগস্ট মাসে ক্ষতিপূরণ পাবার পর ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে অতিরিক্ত টাকা ফেরত চেয়ে ২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইস্যু হওয়া একটি নোটিশ পান ২২ সালের জানুয়ারি মাসে। দেড় বছর পর কেন নোটিশ এই নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন।


তবে সেই সময় প্রশান্ত বাবু একবারে শয্যাশায়ী ছিলেন তাই ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি বলে দাবি তার।


তবে আবার একই নোটিশ পেয়ে দিশাহারা প্রশান্ত বাবুর দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়। কীভাবে দেবেন এতগুলো টাকা যেখানে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত অবস্থা।


যদিও তারকেশ্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণা অধিকারী বলেন আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে গাফিলতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে। তবে যাদের টাকা ফেরত দেওয়ার মত অবস্থা নেই তাদের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে এবং প্রশান্ত চক্রবর্তীর বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখা হবে।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp)