নিজস্ব  প্রতিবেদন: ঘর থেকে বেরোচ্ছিল কুণ্ডলীকৃত  কালো ধোঁয়া। সঙ্গে চামড়া পোড়া বিকট  গন্ধ। বিপদ আঁচ করতে পেরেই  স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে  গিয়েছিলেন প্রতিবেশী শিক্ষকের বাড়িতে।  বন্ধ দরজায় কড়া নাড়িয়েও লাভ হয়নি।  জানলার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই আশঙ্কা সত্যি হল তাঁদের। প্রতিবেশীরা দেখলেন, ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে শিক্ষকের অগ্নিদগ্ধ দেহ, পাশে পড়ে রয়েছে তাঁরই দুই বোন। মুখ দিয়ে গোঙানির শব্দ বেরোচ্ছে। দৃশ্য দেখে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন প্রতিবেশীরাই।  দেখেন, দুই বোনের হাতের শিরা কাটা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে এলাকা।  খবর দেওয়া হয় পুলিসকে।  পুলিস গিয়ে দেহ উদ্ধার করে, আহত দুই বোনকে হাসপাতালে পাঠায়। রবিবার রাতে নারকীয়  ঘটনা ঘটল বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের ব্রাহ্মণ বহড়া গ্রামে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গ্রামেরই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন বৃন্দাবন মণ্ডল।  দুই বোনকে নিয়ে থাকেন তিনি। দুই বোনই অবিবাহিত।  রবিবার রাতেই  বাড়ির শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয় বৃন্দাবন মণ্ডলের অগ্নিদগ্ধ দেহ।  পাশেই তাঁর দুই বোন হাতের শিরা কাটা অবস্থায় পড়ে ছিলেন। ঘটনার নেপথ্যে উঠে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।


আরও পড়ুন: পর্দাফাঁস! মোমোকাণ্ডে রাজ্যে প্রথম গ্রেফতারি, ধৃত সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র! জানেন কেন তিনি করেছেন এমন কাজ?


প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃন্দাবন মণ্ডলের দুই বোনের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গিয়েছিল। দাদা কেন বিয়ে দিচ্ছিল না, তা নিয়ে দুই বোনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। বিয়ে না হওয়ায় কিছুটা মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন তাঁরা। দাদা-বোনের মধ্যে বিয়ে নিয়ে অশান্তির বিষয়টি প্রতিবেশীদের অজানা ছিল না। মাঝেমধ্যেই মণ্ডল বাড়ি থেকে চিত্কার চেঁচামেচির শব্দ ভেসে আসত। রবিবার সকালেও তাই হয়েছে। কিন্তু নিত্য দিনের অশান্তি ভেবে প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি প্রতিবেশীরা।


রবিবার রাতে যখন মণ্ডল বাড়ি থেকে ধোঁয়া ও গন্ধ বেরোতে শুরু করে, তখনই তাঁরা ছুটে আসেন। মনে করা হচ্ছে, বিয়ে নিয়েই দাদা-বোনের মধ্যে অশান্তির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও জমি জমা নিয়েও তিন ভাইবোনের মধ্যে বিবাদ ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের হাতে উঠে এসেছে এই তথ্যও।


আরও পড়ুন: শ্বশুরের ঔরসেই স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান! নিজের মায়ের সঙ্গে রাত কাটালেন ব্যক্তি, পরিণতি মর্মান্তিক...


পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, দাদাকে খুন করে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন দুই বোন। বর্তমানে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। পুলিসি জেরায় তাঁরা জানিয়েছেন, দাদা কিছুদিন ধরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যেই তাঁদের মারধর করতেন বলে অভিযোগ। তবে কীভাবে দাদা অগ্নিদগ্ধ হলেন, সে বিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট করে বলেননি তাঁরা।  মৃত বৃন্দাবন মণ্ডলের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।