সিনেমার মতো `উত্থান, বর্ণময় জীবন` ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত শকুন্তলার
গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই ওঠাবসা করতে দেখা যায় শকুন্তলাকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম খুনে উঠে এসেছে স্থানীয় মহিলা প্রোমোটার শকুন্তলা যাদবের নাম। খুনের ষড়যন্ত্রে মূল অভিযুক্ত শকুন্তলা যাদব ও বিজু পাসোয়ান। পুলিসি তদন্তে জানা গিয়েছে, একটি ১০ কাটা জমি নিয়ে দিলীপ রামের সঙ্গে বিবাদ চলছিল শকুন্তলার। প্রায় কয়েক কোটি টাকা বাজার দরের এই জমিটি হাতানোর তালে ছিল শকুন্তলা। যাতে বাধা দেন দিলীপ রাম। তিনি মধ্যস্থতা করে ভাওয়াল কোম্পানিকে জমিটি কেনার ব্যবস্থা করে দেন। যা নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত। পথের কাঁটা দিলীপ রামকে সরাতে এরপরই খুনের ছক কষে শকুন্তলা যাদব ও তার ছেলে মঙ্গল যাদব। দিলীপ রামকে খুনের জন্য ৩ লাখ টাকা সুপারিও দেওয়া হয়। কিন্তু কে এই শকুন্তলা যাদব?
শকুন্তলার 'বর্ণময়' জীবন
শকুন্তলা যাদব ওরফে সমুন্দ্রির জন্ম ব্যান্ডেলেই। প্রাথমিক জীবনে এলাকার বিভিন্ন কারখানা, জুট মিল ও গ্যারেজ কর্মীদের পুরনো জামা সরবরাহ করত। পাশাপশি রেললাইন থেকে লোহা চুরি, ওয়াগন থেকে কয়লা চুরির কাজেও রপ্ত ছিল শকুন্তলা। এলাকার সুদের ব্যবসায়ী মুন্না লালের সঙ্গে বিয়ে হয় শকুন্তলা ওরফে সমুন্দ্রির। স্বামীর সঙ্গে সেই ব্যবসাতেও হাত পাকায় শকুন্তলা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যান্ডেল, চুঁচুঁড়া, নৈহাটি থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে শকুন্তলার নামে।
স্বামীর হাত ধরেই এরপর প্রোমোটিং লাইনে নামে শকুন্তলা। ধীরে ধীরে সেখানেও 'উন্নতিলাভ' করে সমুন্দ্রি। প্রোমোটিংয়ের ব্যবসায় তাকে সাহায্য করত দুই ছেলে, মঙ্গল ও আজাদ। কিন্তু সম্প্রতি ছোট ছেলে আজাদের ক্যান্সার ধরা পড়ে। ফলে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে ব্যবসা সামলাত বড়ো ছেলে মঙ্গল। অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে এলাকার মানুষজনের কাছ থেকে জমি হাতিয়ে নিত শকুন্তলা ও মঙ্গল। এই জমি নিয়েই দিলীপ রামের সঙ্গে গন্ডগোলের সূত্রপাত। শেষমেশ সুপারি কিলার দিয়ে তাঁকে খুন করে শকুন্তলা। তবে এটাই প্রথম নয়। বছর দুয়েক আগে মগরার তৃণমূল নেতা দেবব্রত বিশ্বাসের উপর গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছিল শকুন্তলার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন, ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা খুনে জড়িত স্থানীয় মহিলা প্রোমোটার, ধৃত ২ সুপারি কিলার
উল্লেখ্য, ২০১১-র পর তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে শকুন্তলাকে দেখা যেত। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই ওঠাবসা করতে দেখা যায় শকুন্তলাকে। এমনকি শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে শকুন্তলার ভাইপো রঘুবীর যাদব মগরার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড মানসপুর থেকে বিজেপির হয়ে ভোটেও দাঁড়িয়েছিল। যদিও ভোটে হেরে যায়।