Keshpur: তৃণমূলের কমিটিতে সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম, আদালতে যাওয়ার হুশিয়ারি বিজেপির
দিন কয়েক আগেই কেশপুর ব্লক তৃণমূল মাইনরিটি সেলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে ৪১ নম্বরে রয়েছে কমিটির সদস্য হিসাবে শেখ আফসার আলীর নাম। দলের অনুমোদিত যে লিস্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে সই রয়েছে কেশপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের। সই রয়েছে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজার এবং রয়েছে বিধায়ক শিউলি সাহার সই।
চম্পক দত্ত: সদ্য ঘোষিত কেশপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনোরিটি সেলের কমিটিতে রয়েছে সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম। আর তা নিয়েই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পাল্টা এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি।
দিন কয়েক আগেই কেশপুর ব্লক তৃণমূল মাইনরিটি সেলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে ৪১ নম্বরে রয়েছে কমিটির সদস্য হিসাবে শেখ আফসার আলীর নাম। দলের অনুমোদিত যে লিস্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে সই রয়েছে কেশপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের। সই রয়েছে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজার এবং রয়েছে বিধায়ক শিউলি সাহার সই। এরপরেই এই তালিকা নিয়ে আসরে নেমে পড়ে বিজেপি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই তালিকা ভাইরাল করে তারা লেখে, ‘যদি কোনওদিন দেখেন থানার ওসির নাম রয়েছে তৃণমূলের ব্লক বা জেলা কমিটিতে তাতে অবাক হবেন না। কারণ এটা সরকার নয় সার্কাস চলছে’। পাশাপাশি এটাও পোস্ট করা হয় যে, ‘সংগঠনের কর্মী নেই তাই পুলিস দিয়ে দল চালাচ্ছে এই গণতন্ত্র হত্যাকারী তোলামুলি দলনেত্রী। কিন্তু এভাবে আর কতদিন’।
বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, ‘আমরা জানি তৃণমূল কোনও সাংগঠনিক দল নয়, কোনও রাজনৈতিক দল নয়। তারা শুধুমাত্র সন্ত্রাস দুর্নীতি চুরি-চামারি এসবই করে বেড়ায়। পুলিসকে হাতিয়ার করে সংগঠনে থাকার চেষ্টা করছে, ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। তাই বিভিন্ন জায়গার মতো আমরা কেশপুরও দেখেছি যে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে তারা ব্লক কমিটির মধ্যে রেখেছে এটা গোটা পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে এবং আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে পুলিসকে দিয়ে রাজনীতি করতে হচ্ছে’।
আরও পড়ুন: Bengal Weather Today: দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা, রয়েছে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময়ই বলতাম যে তৃণমূল দলটা পুলিসই কন্ট্রোল করে, পুলিসকে দিয়েই চালায়। এসপি হচ্ছে ওদের জেলা সভাপতি এবং ওসি হচ্ছে ব্লক সভাপতি। তেমনই ব্লক কমিটির মধ্যে সিভিক পুলিসকে রেখেছে এবং পুলিসের জন্যই পুলিসের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পুলিসের ক্ষমতাকে নিয়ে ভয় দেখিয়ে পুলিসের ক্ষমতাকে অপপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। আমরা এর বিরুদ্ধে কোর্টে যাব এবং যেখানে যা আন্দোলন করা তা আমরা করব’।
এই তালিকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজা বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে সবাই ভালোবাসে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সর্বস্তরের মানুষ যুক্ত থাকতে চায়। সিভিক ভলেন্টিয়ার মানে সে তো ভলেন্টিয়ার সে তার ডিউটি করে যদি কেউ সমাজসেবা করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে থেকে কাজ করতে চায় এতে অসুবিধার কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন পেশার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে থেকে এই তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নমূলক কাজে যুক্ত হতে পারে এবং হচ্ছেও। এটা যারা দেখছে তারা আসলে লোকজন পাচ্ছে না তো, আর আমাদের দলের সর্বস্তরের মানুষ এই রাজনীতির আঙিনায় আসছে সেটাতে তারা হিংসে করছে। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখব নিশ্চিতভাবে সবারই নাম খতিয়ে দেখা হয়নি হয়তো বা একই নামে দুজন আছে কিনা সেটাও জানতে হবে যাচাই করে দেখে পরবর্তী সময়ে নিশ্চিত ভাবে জানাবো দলের কাছেও জানাবো যে থাকা যায় কিনা’।
আরও পড়ুন: Cyclone Mocha: 'মোচা'- র প্রভাব পড়বে বাংলায়? কন্ট্রোল রুম খুলেছে পট্টনায়েক সরকার
তিনি যোগ করেছেন, ‘বিজেপির এখন কাজ বলতে কিছু নেই যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মাঠে নেমে মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। ৬৪টা প্রকল্প যেভাবে উপভোক্তারা পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আপ্লুত। ২১-এর নির্বাচনে তার ফল পেয়েছি আবার ২০২৩ এর পঞ্চায়েত আর ২০২৪ এর লোকসভায় তার ব্যাপক সাফল্য আসবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিনব প্রচার কর্মসূচি যা মানুষকে নাড়িয়ে দিয়েছে এবং মানুষের যে উচ্ছ্বাস তা প্রমাণ করে দিয়েছে এই পশ্চিমবাংলার মাটিতে ভারতীয় জনতা পার্টির কোন স্থান নেই, বিজেপি পার্টির কোন স্থান নেই, সাম্প্রদায়িক শক্তি কোন স্থান নেই তার জন্য দিশাহারা হয়ে তারা বিভিন্ন বক্তব্য বলছে আর তারা মিডিয়াতে রয়েছে’।
তৃণমূলের মাইনোরিটি সেলের ব্লক কমিটিতে সিভিক ভলেন্টিয়ারের স্থান পাওয়া ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়াতে যখন ভাইরাল তখনই উল্টো সুর গাইলেন তৃণমূল ব্লক মাইনোরিটি সেলের সভাপতি হাবিবুর রহমান। তার বক্তব্য, ‘ওই গ্রামে শেখ আসরাফ আলী নামে দুজন রয়েছে। যে শেখ আশরাফ আলী নাম এবং ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে তা অঞ্চল সভাপতি ভুল করে দিয়েছে। ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই’।
তবে সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম তৃণমূলের ব্লক মাইনোরিটি সেলের কমিটিতে থাকায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল তা বলাই বাহুল্য।