মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে অশান্তি; টাকা চাওয়ায় অভিযুক্ত মর্গের কর্মী, আয়া
মর্গ ছাড়াও মেদিনীপুর মেডিকেলের মাতৃমা ভবনে আয়াদের ক্ষেত্রেও একই রকম তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ময়নাতদন্তের পর দেহ ফেরত দেওয়ার সময়ে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মর্গে কর্মরত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। টাকা না দেওয়ায় দেহ আটকে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে ওই কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে এই নিয়েই শুরু হয় উত্তেজনা। অবস্থা সামলাতে এলাকায় আসতে হয় মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিসকে।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পরিষেবা এবং আয়াদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগের মাঝেই এবার নতুন অভিযোগ। অভিযোগে বলা হয়েছে যে মর্গ থেকে ময়না তদন্ত শেষ করে পরিবারকে দেহ ফেরত দেওয়ার সময় মোটা টাকা দাবি করে মর্গে কর্মরত কর্মীরা। সেই টাকা না মেটাতে পারায় দেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয় বুধবার রাতে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার দুপুর থেকে ৭টি দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। সন্ধ্যে নাগাদ বেশ কয়েকটি পরিবার যখন দেহ আনতে যায় তখন মর্গে কর্মরত কর্মীরা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার পর দেড় হাজার টাকা দাবি করেন। কী কারণে ওই টাকা তা জানতে গেলে মর্গের ডোমেরা এরা জানায় কর্মীদের মদ খাওয়ার জন্য ওই টাকা দিতে হবে। তা না হলে দেহ ফেরত দেওয়া হবে না।
এই কথা শুনে পরিবারের লোকেরা খুব একটা প্রতিবাদ করার সাহস না পেলেও সবং এলাকার এক তৃণমূল নেতার পরিবার এই ঘটনার বিরোধিতা করে। সবং এলাকার তৃণমূলের নেতা সুবল মাঝি-র পরিবারের লোকেরা একটি দেহ আনতে এলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়।
সুবল মাঝি বলেন," মৃত্যুর পরে পরিবারের লোকের মানসিক অবস্থা এমনিতেই খারাপ থাকে। তার পরেও গরিব মানুষগুলোর কাছে মোটা টাকা তোলা আদায় করছে এই লোকগুলো। হাসপাতালে একদল লোকজন সব জানলেও কিছু বলে না। আমাদের সরকারের বদনাম করছে এই সমস্ত লোকগুলো। বিষয়টি আমরা দলে জানাচ্ছি। প্রশাসনকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৎপর হতে বলবো।" অপর এক বাসিন্দা চন্দন রায়ও তার কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করার অভিযোগ তোলেন।
আরও পড়ুন: Konnagar: ভাড়াটিয়ার সঙ্গে বিবাদের জের? আত্মঘাতী প্রৌঢ়
মর্গ ছাড়াও মেদিনীপুর মেডিকেলের মাতৃমা ভবনে আয়াদের ক্ষেত্রেও একই রকম তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসা করতে আসা জেলার মুকসুদপুর এলাকার বাসিন্দা গোপাল মন্ডল বলেন তার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরে আয়ারা মোটা টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ার পর হঠাৎ জানা যায় যে তার স্ত্রীর চিকিৎসার কোন কাগজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে চিকিৎসা হচ্ছে তার কোন ঠিক নেই। রোগী ভর্তি করলেই মোটা টাকা দাবি করছে আয়ারা। তা না হলে কোন চিকিৎসা হবেনা বলে তারাই জানিয়ে দিচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন তিনি।
এই ধরনের অভিযোগ এড়িয়ে গিয়েছেন হাসপাতালের বিভিন্ন আধিকারিক। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেসিলিটি ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, " এমন ঘটনা কোথায় ঘটল জানা নেই। অন্য কারণে সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। কেউ টাকা চাইলে কখনোই দেবেন না। তবে কেউ অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।"