কিরণ মান্না: ফের কৌশিকী অম্যাবস্যায় সমুদ্র স্নানে গিয়ে বিপত্তি। এবার মন্দারমণি। কৌশিকী অমাবস্যায় মন্দারমণিতে সমুদ্র স্নানে নেমে ঢেউয়ে তলিয়ে মৃত্যু এক পর্যটকের। নিখোঁজ আরও ২ পর্যটক। নিখোঁজ পর্যটকদের খোঁজে পুলিস তল্লাশি চালাচ্ছে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কলকাতা থেকে আজ ৫ জনের দল বেড়াতে এসেছিলেন মন্দারমণিতে। ধর্মতলা থেকে এসেছিলেন তাঁরা। দুপুরবেলা সমুদ্র স্নানে নেমেই বিপত্তি। কৌশিকী অমাবস্যার টানে আজও সমুদ্র উত্তাল। সেই উত্তাল সমুদ্রে স্নান করতে নেমেই বিপত্তি বাধে। সমুদ্রের ঢেউয়ের ধাক্কায় তলিয়ে যান ৫ জন-ই। তাঁদের মধ্যে ৩ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিস। তার মধ্যে একজন মৃত। মৃতের নাম নবীন আক্তার। বয়স ৪০-এর ঘরে। আহত বাকি ২ জন। আহতদের উদ্ধার করে রামনগরের বড়রাংকুয়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আরও ২ জন নিখোঁজ। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।


প্রসঙ্গত, কৌশিকী অমাবস্যায় গতকাল দিঘায় বিপত্তি ঘটে। কৌশিকী অমাবস্যার টানে উত্তাল দিঘার সমুদ্র। আর সেই উত্তাল সমুদ্রে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাচ্ছিলেন এক পর্যটক। কোনওরকমে সেই পর্যটককে উদ্ধার করেন নুলিয়ারা। সুব্রত সর্দার নামে ওই পর্যটক উত্তর ২৪ পরগনার পলতার বাসিন্দা। বয়স ২৮ বছর। বুধবার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে যান সুব্রত। গতকাল সকালে স্ত্রী, কন্যাকে এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে ওল্ড দিঘার সি-হক গোলার ঘাটে স্নান করতে যান। স্নান করতে করতে সময় কিছুটা মাঝ সমুদ্রে চলে যান তিনি। আর সেখানেই তলিয়ে যান। তখনই কর্তব্যরত নুলিয়ারা তাঁকে উদ্ধার করেন। 


এখন জানার বিষয় হচ্ছে কী এই কৌশিকী অমাবস্যা? কেন এ তিথির এত মাহাত্ম্য? দিনটির পশ্চাতে যে পুরাণ কাহিনি রয়েছে, সেটাও বিষয়টি অনেকটা ব্যাখ্যা করে দেয়। একদিন দৈত্যপীড়িত দেবতারা কৈলাসে শিবের কাছে এসে তাঁদের উপর অসুরদের অত্যাচারের বিহিত চাইলেন। শিব তখন দেবতাদের রক্ষার মানসে দেবতাদের সামনেই পার্বতীকে ডেকে বলেন, 'কালিকা, তুমিই ওঁদের উদ্ধার করো।' দেবতার সামনে পার্বতীকে 'কালী' বলে ডাকায় দেবী ক্ষুব্ধ হলেন। বলা ভালো, তিনি শিবের উপর কিছুটা রেগেও উঠলেন। সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি তাঁর গাত্রবর্ণ পরিবর্তনের সংকল্প করলেন। 


দেবী তাঁর গাত্রবর্ণ পরিবর্তনের লক্ষ্যে মানস সরোবরের ধারে কঠিন তপস্যায় বসলেন। তপস্যা শেষে মানস সরোবরের জলে স্নান করলেন। স্নানের পরে তাঁর ত্বকের সব কালো-কোষ খসে গেল। পূর্ণিমা চাঁদের মতো গাত্রবর্ণ ধারণ করলেন দেবী। তাঁর পরিত্যাগ করা কালো কোষগুলি থেকে অপূর্ব সুন্দরী কৃষ্ণবর্ণা এক দেবীর জন্ম নিলেন। সেই দেবীই কৌশিকী দেবী। যেদিন কালো দেহকোষ থেকে কৃষ্ণবর্ণা দেবীর সৃষ্টি হল, সেই দিনটিই কৌশিকী অমাবস্যা বলে খ্যাত। কথিত আছে, এই তিথিতেই একদা দেবী শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধও করেন। আবার এই দিনেই দশমহাবিদ্যার অন্যতমা দেবী তারা মর্ত্যধামে আবির্ভূতা হন। এদিন তাই বীরভূমের তারাপীঠে  বিশাল আড়ম্বরে মা তারার পুজো ও উৎসব হয়। 


তন্ত্রে কৌশিকী অমাবস্যার রাতকে 'তারা রাত্রি' বলা হয়৷ বলা হয়। আসলে এদিন রাতে মা তারার কৃপায় এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক উভয়ের দরজাই কিছুক্ষণের জন্য খুলে যায়। আর সাধক বিশেষ শক্তিসাধনার মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছেমতো সিদ্ধিলাভ করেন ও বাঞ্ছিত ধামে চলে যান। অতি মাহাত্ম্যপূর্ণ সেই কৌশিকী অমাবস্যা আজ, ১৪ সেপ্টেম্বর। কৌশিকী অমাবস্যার তিথি শেষ হবে আগামিকাল ১৫ সেপ্টেম্বর। 


আরও পড়ুন, Supreme Court: স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি সুপ্রিম কোর্টের,৩ পক্ষকেই কড়া নির্দেশ!



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)