সুদেষ্ণা পাল


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সকালে অফিস যাওয়ার তাড়া। তারমধ্যে নিত্য যন্ত্রণার কারণ ট্রেন লেট। ১০ থেকে ২০ মিনিট লেট বাঁধা। এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না। আর সেই ভিড়ে ঠাসা ট্রেনেই নিত্যযাত্রীরা সাক্ষী রইলেন বৃহন্নলাদের তাণ্ডব ও হুমকির। ট্রেনের দরজার সামনেই এক মহিলা যাত্রীকে মারধর করা হল। শুধু তাই নয়। ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ারও হুমকি দিলেন বৃহন্নলারা। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল চলন্ত ট্রেন।  


কোন্নগর রেলস্টেশন। সকাল ৭টা ১৯। ট্রেনের সময়সূচি বলছে, ডাউন ব্যান্ডেল লোকালের সময় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রোজকার মতো এদিনও ঘড়ির কাঁটা ৭টা ১৯ পেরিয়ে গেল, অথচ ট্রেনের দেখা নেই। ট্রেন যখন এল, তখন ঘড়ির কাঁটা প্রায় সাড়ে ৭টা ছুঁই ছুঁই। আধঘণ্টার উপর ট্রেন না থাকায় স্টেশনে তখন থিক থিকে ভিড়। ট্রেন স্টেশনে থামতেই হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়লেন সবাই। আর ওঠার পরই শুরু হল চতুর্মুখী লড়াই।


আরও পড়ুন, প্রেমে হাবুডুবু! বিয়ে করতে ইউক্রেন থেকে আরামবাগ ছুটে এলেন রুশ তরুণী


একদিকে ভিতরে ঢোকার লড়াই। অন্যদিকে পরের স্টেশনে নামার তাড়া। এরমধ্যেই একদলের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বা বসে হাওয়া খাওয়ার লড়াই। অন্যদলের আবার বালিতে উল্টোদিকের প্ল্যাটফর্মে নামার লড়াই। ছবিটা মোটামুটি রোজ একই রকম। কিন্তু এদিন তাল কাটল হাওড়াযাত্রী এক ভদ্রমহিলার সঙ্গে বালিযাত্রী এক কলেজ পড়ুয়ার কথা কাটাকাটিতে। ওই মহিলা হাওড়া যাবেন। কিন্তু তিনি কামরার ভিতরে না ঢুকে দাঁড়িয়ে পড়েন দরজার এক পাশে। অন্যদিকে, তাঁকে কাটিয়ে বালিতে নামার জন্য উল্টোদিকের দরজার দিকে এগোতে পারছিলেন না ছাত্রীটি।


প্রসঙ্গত, নিত্যযাত্রীদের নিত্যদিন এই সমস্যা, বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়। কিন্তু কোনওভাবেই যেন এ সমস্যার কোনও সুরাহা হয় না। গন্তব্য দূরের স্টেশন হলেও, ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে অন্য যাত্রীদের স্টেশনে নামা-ট্রেনে ওঠায় সমস্যা তৈরি করেন তাঁরা। এদিনও কে কোথায় দাঁড়াবে, এই নিয়ে ওই মহিলা ও কলেজছাত্রীর মধ্যে এক কথা-দুকথা হওয়ার পরই শুরু হয়ে যায় তুমুল বচসা। ভিড়ে ঠাসা কামরায় উপস্থিত নিত্যযাত্রীরা দুজনের মধ্যে নিজেদের পছন্দসই পক্ষ বেছে নিয়ে তাঁরাও সেই ঝগড়ায় যোগদান করেন। কিন্তু তারপর চলন্ত ট্রেনের কামরায় যে ঘটনা ঘটল, তা এককথায় ভয়াবহ!


আরও পড়ুন, গলায় বরমাল্য, সিঁথি রাঙা সিঁদুরে, 'দেবদূত' বিষ্ণুর চোখে চোখ রেখে বিভোর মাম


সেই কামরায় ছিলেন ২ বৃহন্নলাও। তাঁরাও বালিতে নামবেন। হঠাত্ই ঝগড়ার মাঝে 'বিচারক'-এর ভূমিকায় দেখা গেল তাঁদের। শুরু হল অশ্রাব্য গালিগালাজ। শুধু মুখে গালি দিয়েও থামলেন না তাঁরা, শুরু হয়ে গেল হাতাহাতিও। ওই বৃহন্নলাদের মধ্যে একজন তেড়ে গিয়ে ওই ভদ্রমহিলার চুলের মুঠি ধরে মারার চেষ্টা করলেন। আরেকজন ওই মহিলাকে চড়-থাপ্পড় কষিয়ে দিলেন। এখানেই শেষ নয়। এরপরই ওই মহিলার উদ্দেশে উড়ে এল হুমকি। তাঁকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে, ছুড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন বৃহন্নলারা।


আরও পড়ুন, অনাথাশ্রমের 'লক্ষ্মী'কে বিয়ে করে নজির গড়লেন রাজীব


এরমধ্যেই কেউ কেউ আবার বাধা দিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশেও উড়ে আসে হুমকি। ফোন বের করে ছবি তোলার চেষ্টা করতে গেলে, ফোন কেড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়ারও হুমকি দেন বৃহন্নলারা। তাঁদের তাণ্ডবে কামরার ভিতরে ভয়ে সিঁটিয়ে যান নিত্যযাত্রীরা। মারাত্মক কিছু ঘটে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রমাদ গুনতে শুরু করেন তাঁরা।