তরুণীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত শ্বশুর, কুলতলিতে নিখোঁজ নির্যাতিতা, বিচার চেয়ে হাইকোর্টে মা
তাত্ক্ষণিক তিন তালাক বা তালাক-ই-বিদ্দত-কে অসাংবিধানিক হিসাবে ইতিমধ্যে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
নিজস্ব প্রতিবেদন: তাত্ক্ষণিক তিন তালাক নিষিদ্ধ বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাত্ক্ষণিক তিন তালাককে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে অর্ডিন্যান্সও এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্যের কুলতলিতে একেবারে ভিন্ন চিত্র। আইন ভেঙেই বধূকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। এমনকি শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও করেছেন ওই তরুণী। গোটা ঘটনায় পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই নিঁখোজ হয়ে যান অভিযোগকারিণী। তাঁকে খুঁজে পেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মা।
দেড় বছর আগে জয়নগরের তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় কুলতলির বাসিন্দা আমিরুল পুরকাইতের। অভিযোগ, বিয়ের পরই নববধূকে ধর্ষণ করে শ্বশুর মনসুর। বিষয়টি স্বামীকে জানালে তিনি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয় মৌলবির দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। তিনিই সালিশি সভা ডেকে তরুণীকে তিন তালাক দেওয়ার নিদান দেন। মায়ের সঙ্গে বাপের বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন ওই সংখ্যালঘু তরুণী। এরপর জয়নগর ও কুলতলি থানায় অভিযোগ করেন তরুণীর পরিজনরা। কিন্তু থানা ভ্রুক্ষেপই করেনি বলে অভিযোগ।
এরমধ্যেই হঠাত গত ২২ অক্টোবর নিখোঁজ হন নির্যাতিতা। পুলিস যাতে তদন্ত করে, সেই আর্জিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তরুণীর মা। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে পুলিসকে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। বলে রাখি, তরুণীর শ্বশুর বা স্বামীকে গ্রেফতার করেনি পুলিস।
প্রসঙ্গত, তাত্ক্ষণিক তিন তালাক বা তালাক-ই-বিদ্দত-কে অসাংবিধানিক হিসাবে ইতিমধ্যে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রকে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। এরপরই বিল তৈরি করে মোদী সরকার। সেই "মুসলিম উইমেন (প্রোটেকশন অফ রাইটস অ্যান্ড ম্যারেজ)বিল, ২০১৭" লোকসভায় পাশও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, রাজ্যসভায় মোদী সরকার সংখ্যা লঘু হওয়ায় বিলটি বিরোধীদের আপত্তিতে আটকে যায়। তারা বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানায়। এরপর বিলটিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করা হয়। বলা হয়, কেবলমাত্র আলাকপ্রাপ্ত মহিলা অথবা তাঁর নিকটাত্মীয়রাই অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। অভিযুক্তের জামিনের সংস্থানও রাখা হয় নয়া খসড়ায়। এক্ষেত্রে পুলিস জামিন দিতে পারবে না, জামিন দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটকে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বিলটি সংসদে পাশ না করিয়ে অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স আকারে নিয়ে আসে সরকার।
আরও পড়ুন- চা-দোকানি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে, আমার বেলায় হিংসে কেন? বিদ্রূপের জবাব আলমের