প্রসেনজিৎ মালাকার: চলে গেল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সাড়ম্বরে উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান-৩। ভারতের মহাকাশপ্রযুক্তির দিক থেকে খুবই বড় ঘটনা। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণও, আরও এই কারণে যে, এর আগের মিশনটি, চন্দ্রযান-২, ল্যান্ডিংয়ের সময়ে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু কে জানত, এর সঙ্গে জড়িয়ে যাবে বীরভূমের লালমাটিও? চাঁদে যান পাঠানোর ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)-এর এই মহাকর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িয়ে গেল বীরভূমে, জড়িয়ে গেল বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামের এক তরুণ। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: North 24 Parganas: এবার মিষ্টির দোকানেও ব্যালট-খাওয়ার ছায়া! এসে গেল 'ব্যালট সন্দেশ'...


ইসরোর গবেষণাগারে বসে চন্দ্রযান থ্রি-র সফল উৎক্ষেপণে অংশ নিয়েছেন বীরভূমের মল্লারপুর থানার দক্ষিণগ্রামের দাইপাড়ার এই বিজয়কুমার দাই। তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের দরিদ্র চাষি পরিবারে জন্ম বিজয়ের। কিন্তু সমস্ত দারিদ্র্যকে জয় করে চাঁদে যান পাঠানোর কর্মে জড়িয়ে যেতে পারলেন তিনি। বিপুল এ কর্মকাণ্ডে ছেলের অংশগ্রহণে গর্বিত বিজয়ের বাবা-মা, উল্লসিত তাঁর গ্রামের মানুষজনও। চন্দ্রযান-২ সফল না হলেও চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে বলেই আশা বিজয়কুমারের।


কদিন আগেই, ১৪ জুলাই দুপুরবেলায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-৩ বহনকারী স্পেসক্র্যাফ্ট লঞ্চ করল ইসরো। এটিই ভারতের হেভিয়েস্ট জিএসএলভি। তৈরি হয়েছে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারেই। চাঁদে এর সফ্ট ল্যান্ডিং ঘটবে। তারপর এটি চাঁদ সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করবে। চাঁদে পাড়ি দেওয়ার আগে তাদের মহাকাশযান ধারণকারী পেলোড ফেয়ারিংকে জিওসিঙ্ক্রোনাস লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক থ্রি-র সঙ্গে সফল ভাবে জুড়ে দিতে পেরেছিল ইসরো। ভারতের সবচেয়ে ভারী রকেটের সঙ্গে পেলোড ফেয়ারিংয়ের জুড়ে দেওয়ার কাজটি শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারেই হয়েছিল। 'ইসরো' প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছিলেন, ১২ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই দিনগুলিই উৎক্ষেপণের কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, কারণ, অরবিটাল ডায়নামিকস অনুসারে, চাঁদে পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে যানটির এই সময়েই সবচেয়ে কম জ্বালানি (মিনিমাল ফুয়েল) লাগবে এবং এর কর্মক্ষমতাও থাকবে চূড়ান্ত (হায়ার এফিসিয়েন্সি)। দেখা গেল, সেই অনুযায়ীই কাজ হল।


আর ভারতের এই স্বপ্নের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেন বিজয়ও। ২০০০ সালে বীরভূমের মল্লারপুর থানার দক্ষিণগ্রাম জগত্তারিণী বিদ্যায়তন থেকে ৮৯ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন বিজয়কুমার। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন বেলুড় রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দির থেকে। তারপর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। এর পরেই চাকরি পেয়ে যান ইসরোতে। সেখানেই চন্দ্রযান-২ এবং চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণে অংশ গ্রহণ করেন। বিজয়ের এই সাফল্যে খুশি দক্ষিণগ্রামের মানুষজন, খুশি দক্ষিণগ্রাম জগত্তারিণী বিদ্যায়তনের শিক্ষকেরাও।


আরও পড়ুন: Hilsa: ক'দিন পরেই ইলিশময় বাজার! জেনে নিন কবে, কত দামে পাবেন মরসুমের প্রথম রুপোলি শস্য...


অতি উচ্চাকাঙ্ক্ষী এই প্রকল্প নিয়ে ইসরো স্বভাবতই খুব আত্মবিশ্বাসী ও উচ্ছ্বসিত। তারা জানিয়েছে, লুনার সারফেসে বা চাঁদের মাটিতে ঘোরার সময়ে চন্দ্রযান-৩ চাঁদের ভূ-প্রকৃতি ও তার পরিবেশ নিয়ে 'ইন-সিটু কেমিক্যাল অ্যানালিসিস' চালাবে। এটি চাঁদের দক্ষিণ মেরু-অঞ্চলে ঘোরাফেরা করবে। চন্দ্রযান-৩ -এর মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে যান নামিয়ে চাঁদ-চর্চা শুরু করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেকর্ড করে ফেলবে ভারত। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)