নিজস্ব প্রতিবেদন: ভোটের মুখে (WB Assembly Election 2021) ফের রাজ্য পুলিসে বড়সড় রদবদল। এবার DG বীরেন্দ্রকে সরিয়ে দিল কমিশন।  নির্দেশিকা জারি করে মুখ্যসচিবকে জানিয়ে দেওয়া হল, নির্বাচন পরিচালনার কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত,  এমন কোনও পদে রাখা যাবে না তাঁকে। যা কার্যত নজিরবিহীন। ভোটের মুখে পুলিসের শীর্ষপদে এলেন পি নীরজনয়ন (P. Nirajnayan)। 'অন্যায় সিদ্ধান্ত', প্রতিক্রিয়া তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Sougata Roy)।


এমন কিছু যে ঘটতে পারে, তার ইঙ্গিত ছিলই। রাজ্য পুলিসের DG বীরেন্দ্রের কার্যকলাপে খুশি ছিল না বিরোধীরা। এদিন সকালে নবান্নে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় (Mukul Roy), স্বপন দাশগুপ্ত (Swapan Dasgupta), সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta) ও শিশির বাজোরিয়া। কেন? গেরুয়াশিবিরের অভিযোগ, এবারের বিধানসভা ভোটের পোস্টাল ব্যালটেও কারচুরি করা হতে পারে। ছাপ্পা ভোট দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে রাজ্যের শাসকদল। তাঁদের দাবি, পোস্টাল ব্যালট দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েকজন পুলিসকর্মীর ভোটার ও আধার কার্ড নেওয়া হচ্ছে। ওইসব পুলিসকর্মীদের প্রক্সি ভোট দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। উল্লেখ্য, এই পোস্টাল ব্যালট বিতরণে অনিয়মে রুখতে কিন্তু ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে পুলিস। ঘটনাচক্রে, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কয়েক ঘণ্টার পরেই DG বীরেন্দ্রকে সরিয়ে দিল কমিশন।

 


 

এই দুটি ঘটনার মধ্যে কি কোনও যোগসূত্র আছে? সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ বাবলু সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। Zee ২৪ ঘণ্টাকে ফোন তিনি বললেন, 'এটা কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত কাজ। যা ভালো মনে করেছে, তাই করেছে। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি এর সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়। ওটা নেহাতই কাকতালীয় ব্যাপার'। যদিও উল্টো সুর তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Sougata Roy) গলায়। তাঁর সোজাসাপ্টা প্রতিক্রিয়া, 'এটা অন্যায় সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। এই ২ মাস কমিশন পালোয়ান। তবে এসব করে বিজেপি আমাদের কিছুই করতে পারবে না। আমরা আমাদের কাজ করব'।

 


 

উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদ থেকে জাভেদ শামিমকে সরিয়ে দেয় কমিশন। তাঁকে বদলি করা হয় দমকলের ডিজি পদে। আর যিনি ওই পদে ছিলেন, সেই জগমোহনকে নিয়ে আসা হয় এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদে। রাজনৈতিক মহলে মতে, এভাবে ভোটের রাজ্য পুলিসের শীর্ষ পদাধিকারী DG বীরেন্দ্রকে সরিয়ে দিয়ে পুলিসকে কড়া বার্তা দিল কমিশন। এর আগে কমিশনের ফুলবেঞ্চ যখন রাজ্যে এসেছিল, তখন স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয় একুশের ভোটের কোনওরকমের পক্ষপাত বরদাস্ত করা হবে না। সাধারণ মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে এবার ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে কমিশন।