নিজস্ব প্রতিবেদন: শীতলকুচির ঘটনার কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালনার নিন্দার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে সরব হলেন রাজ্যে বিরোধী নেতারা। কোচবিহারের ওই ঘটনা দুই দানব শক্তির লড়াইয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেন অধীর চৌধুরী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভোটবঙ্গের চতুর্থপর্বে শীতলকুচির জোড়পাটকি এলাকায় ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ৪ জন। এনিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জি ২৪ ঘণ্টার এক অনুষ্টানে বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এর তীব্র নিন্দা করছি। যদি এমন হয় যে কেউ আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাচ্ছে তাহলে তাদের ছত্রভঙ্গ করা উচিত। লাঠি ব্যবহার করাটা কাজ। যদি গুলি চালাতেও হয় তাহলে তার তো একটা নিয়ম আছে! শরীরের নীচের অংশে গুলি চাললে তো বুঝতে পারি। এটাতো কার্যত খুন করার মনোভাব থেকে গুলি চালানো। এই মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। গণতন্ত্রের এই উত্সবে রক্তের হোলি খেলার যে প্রচেষ্টা চলছে তা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলার কোনও ভোটে পুলিস বা সিআরপিএফের(CRPF) গুলিতে এভাবে মৃত্যু হয়নি। এর বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কি বুঝতে পারছেন তাঁর প্ররোচনার ফল কী হচ্ছে?


আরও পড়ুন-চুঁচুড়ায় আক্রান্ত Locket ; 'নিজেই গাড়ির কাঁচ ভেঙেছেন', ফুটেজ-সহ কমিশনে TMC


কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিচালনার ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করলেন বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ(Bharati Ghosh)। আজ টালিগঞ্জ বিধানসভার আনন্দ আশ্রম বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দিয়ে বেরিয়ে শীতলকুচির ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, সেদিন যে ধরনের উস্কানিমূলক কথা উনি বলেছেন তার জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। আমার মনে হয় নির্বাচন কমিশনের ওনাকে নজরবন্দি করা উচিত। ওঁর গতিবিধির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত যাতে এধরনের উস্কানি তিনি দিতে না পারেন। তিনিই রাজ্যের মূল উস্কানিদাতা।


মর্মান্তিক এই ঘটনাকে দুই দানব শক্তির লড়াইয়ের ফল বলে বর্ণনা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। দুটো দল গুন্ডামি করছে।  ৮ দফার নির্বাচন সত্বেও কেন হিংসা হচ্ছে তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। কেন গুলি চলল তা খতিয়ে দেখতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো মানে এই নয় যে গুলি চালাতে হবে। পুলিস যেন সরকারে দ্বারা প্রভাবিত হয় সেটা দেখা দরকার। খোদ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিসের সংঘাতে মদত দিচ্ছেন। কমিশনকে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া ব্যহত হবে। এই ঘটনা বাংলার অপমান। 


এদিকে, কোচবিহারের পুলিস সুপার সংবাদমাধ্যমে বলেন, সকাল সাড়ে নটার সময় বুথের সামনে একজন অজ্ঞান হয়ে যায়। তাঁর চিকিত্সা চলছিল। এক সিআইএসএফ জওয়ান তাঁকে দেখতে যান। সেই সময় রটে যায় সিআইএসএফ মারধর করেছে। এতেই গ্রাম থেকে ৩০০-৩৫০ লোক এসে হামলা করে। জওয়ানদের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বুথের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা হয়। তার পরেই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী।


আরও পড়ুন-রাবার আর উষ্ণ জলের মধ্যে দিয়ে Human Touch-এর উষ্ণতা কোভিড রোগীকে  


এদিকে, গুলিচালনা নিয়ে সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিচালনা এবং তাতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। গণতন্ত্রের উৎসবকে রক্তের হোলি দিয়ে কলুষিত করবার এই ঘৃণ্য ‘খেলা’র তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিত সকল গণতন্ত্রপ্রিয়, শান্তিকামী মানুষের। সত্ত্বর এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীও নিজের দায় অস্বীকার করতে পারেন না। তিনি বারংবার নিজের সমর্থকদের হিংসাত্মক করে তুলতে চেয়েছেন, উস্কানি দিয়েছেন। বারবার এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করা সত্ত্বেও তারা এব্যাপারে উদাসীন থেকেছে। দুঃখজনকভাবে, মুখ্যমন্ত্রী বাংলার সমাজের একাংশকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করেন ও তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে গদি বাঁচাতে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা বোধ করেন না। শীতলকুচির এই মর্মান্তিক ঘটনা ভারতের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি কালো দিন।