ভোটের ফল বেরতেই জেলায় জেলায় সংঘর্ষ-ভাঙচুর, নিহত ২ BJP কর্মী
মিনাখাঁ বিধানসভা এলাকায় ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছেন বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভোটের ফল প্রকাশের পরও হিংসা ছড়াল জেলায় জেলায়। এখনও পর্যন্ত ওই হামলায় নিহত হলেন ২ বিজেপি কর্মী।
রবিবার বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগ এল কাঁকুরগাছি, সল্টলেক, সোনারপুর, নানুর, আসানসোল, কান্দি, হরিনঘাটা, দুর্গাপুর, মিনাখাঁ, পটাশপুর, উত্তর দিনাজপুর, নানুর-সহ একাধিক জায়গা থেকে। অধিকাংশ জায়গাতেই আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা। বাড়ি ভাঙচুর থেকে মারধর, বোমাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। কাঁকুরগাছি ও সোনারপুরে ভোট পরবর্তি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। উত্তর দিনাজপুরের চোপরাতেও বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন-আজ মধ্যরাতের মধ্যে দিল্লিতে অক্সিজেন জোগান নিশ্চিত করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলা থানা এলাকায় এক বিজেপির কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। বিশ্বনাথ ধর নামে ওই ব্যক্তির বাড়ির লাগোয়া সিসিটিভি ভেঙে ফেলে হামলা করা হয়।
রানাঘাটে(Ranaghat) বিজেপি প্রার্থী বঙ্কিম ঘোষের বাড়িতে ভাঙচুর, হামলার অভিযোগ উঠল। খাস কলকাতার কাঁকুরগাছিতে এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল। নারকেলডাঙা মেনে রোডের শীতলাতলা লেনের ঘটনা। অভিজিত সরকার নামে এক বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ছেলেকে রক্ষা করতে গিয়ে আক্রান্ত হন বৃদ্ধা মা-ও।
অভিজিতের মা সংবাদমাধ্যমে বলেন, বিধায়ক পরেশ পাল এই পাড়ায় মিটিং করে বলেছিল, আমরা জিতি তার পর দুভাইকে মজা বুঝিয়ে দেব। ছোট ছেলেকে লুকিয়ে রেখেছিলাম। সেখান থেকে টেনে বের করে নিয়ে চলে যায়। অন্যদিকে, এনিয়ে পরেশ পাল বলেন, ওদের চিনিই না। কোথায় থাকে তাও জানি না। গত ১১ বছরে কেউ মানিকতলাতে কোনও গন্ডগোল দেখেছে? ব্যক্তিগত ভাবে কে কোথায় কী করছে কী করে বলব।
আরও পড়ুন-ফের উত্তপ্ত কোচবিহারের শীতলকুচি, সংঘর্ষে মৃত্যু গুলিবিদ্ধ BJP সমর্থকের
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরেও(Sonarpur) হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের মেটিয়ারি এলাকায় মারধরের ফলেই মৃত্যু হয়েছে হারান অধিকারী নামে এক বিজেপি কর্মীর। তার বাড়িতে ঢুকে তাকে মারধর করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। বারুইপুর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
মেদিনীপুরের পটাশপুরে বিজেপির বুথ সভাপতির বাড়িতে চড়াও হয়ে তার বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল। পটাশপুরের সাতশতমাল এলাকার ঘটনা। বাড়ির চালে উঠে তা ভেঙে দেয় জনতা। পাশাপাশি বিজেপি সমর্থকদের বাড়িও ভাঙচুর করা বলে অভিযোগ। এলাকার তৃণমূল নেতাদের দাবি, বিষয়টি তাদের জানা নেই। এনিয়ে পুলিস ব্যবস্থা নেবে।
ভোট মিটতেই সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জলপাইগুড়ি ময়নাগুড়ি ব্লকের রানিরহাট মোড় সংলগ্ন চর চুরাভান্ডার এলাকা৷ এদিন তৃণমুল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা৷ ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন বিজেপি সমর্থক ৷ আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ময়নাগুড়ি হাসপাতালে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। নামানো হয় র্যাফ। নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
মিনাখাঁ বিধানসভা এলাকায় ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছেন বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা। এমনটাই অভিযোগ দুই দলের। মিনাখাঁ বিধানসভার বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চার কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। রবিবার বিকেলে ফল ঘোষণা হওয়ার পরেই মিনাখাঁ বিধানসভার শালিপুর বালিগৌড়ী, ধুতুরদহ, কুমার জোল, ঝিকরা, সহ একাধিক জায়গায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর লুটপাটের অভিযোগ বিজেপির।