রণজয় সিংহ: এবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মালদার মানিকচক কেন্দ্রের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের ছায়াসঙ্গীরা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেস দলে যোগদান করলেন। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে শাসকদলের ভোটের সমীকরণের এ এক বড় ধাক্কা। মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস প্রাক্তন সহ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন সহ তাঁর সহধর্মিনী মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন ও তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আশারুজ্জামান, বিকাশ মণ্ডল সহ প্রায় ৪০০ জন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেস দলে যোগ দিলেন। শুধু তাই নয় কংগ্রেসে যোগদান করেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকী ,তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সীমা বিবি, চৌকি মির্জাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান মোস্তাক আলম সহ মানিকচক ব্লকে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে গত নির্বাচনে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যরা। শাসকদলের অপরিসীম দুর্নীতির দিকে আঙুল তুলে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসের যোগদান করেন একদা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের ছায়াসঙ্গীরা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তবে শাসক দলের নেতৃত্বের দাবি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিট পাবে না। তা জেনেই টিকিটের লোভে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। এই বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোত্তাকীন আলম কটাক্ষ করে বলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যান্সার হয়েছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে সবাই পালাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগী মানিকচকের এনায়েতপুরের বাসিন্দা তথা বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের ছায়াসঙ্গী মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তণ সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতি সামলেছেন দীর্ঘদিন। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। সাবিত্রী মিত্রের অবর্তমানে ভোট প্রচারে অক্লান্ত পরিশ্রমও করেছেন। কেন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান এই প্রশ্নের উত্তরে অভিমানের সুরে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাকে দল তাড়িয়ে দেয়নি বা লিখিতভাবে সাসপেন্ডও করেনি। তবে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি কোনও দল বিরোধী কাজ করিনি। তৃণমূলের রাজ্য কমিটির ঘোষণা মতে মানিকচক ব্লক তৃণমূল কমিটির সভাপতি হন দেবব্রত ঘোষ। আমি সভাপতি দেবব্রত ঘোষের সঙ্গে দলের কাজ পরিচালনা করতে শুরু করি। এতেই আমার দলের নেতাদের গোঁসা হয়। পরবর্তীতে ব্লক সভাপতির পরিবর্তন হয়। আমি সেই সভাপতির সঙ্গেও কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বসিয়ে রাখা হল। পরবর্তীতে তৃণমূলের কংগ্রেস ব্লক কমিটিতে নয় এমনকি অঞ্চল কমিটিতেও আমাকে রাখা হল না। আমার স্ত্রী জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্যা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কোনও পার্টির মিটিং মিছিলে ডাকা হয় না। কোনওরকম কারণ ছাড়াই ষড়যন্ত্র করে আমাদের একপ্রকার পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাই শেষমেষ তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কংগ্রেস দলের নেতৃত্ব চাইলে কংগ্রেসের টিকিটে জেলা পরিষদের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। 


তবে কার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি, এই প্রশ্নের উত্তরে কারও নাম না উল্লেখ করলেও তিনি বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের জামাতা সোমদীপ সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মোয়াজ্জেন হোসেনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বর্তমানে মালদা জেলা পরিষদের সদস্যা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড়সড় ব্যবধানে তার নিকটতম কংগ্রেসের প্রার্থীকে পরাজিত করেছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। যদিও এই দলবদল ও যোগদানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বরা। জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, অনেকে ক্ষমতায় থেকে মানুষের কাজ করেননি। তাঁরা টিকিট পাবেন না এই আশঙ্কা থেকেই দল ত্যাগ করছেন। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। এই বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোত্তাকিন আলম কটাক্ষ করে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস দলটা ভালো মানুষের নয়। তাই যারা ভালো মানুষ তারা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করছেন। তিনি আরো কটাক্ষ করে বলেন, আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যান্সার হয়েছে। তাই সকলে তৃণমূল দল ছেড়ে পালাচ্ছে।


আরও পড়ুন, Panchayat Election 2023: মনোনয়ন জমা ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বড়শুলে, ইটবৃষ্টিতে মাথা ফাটল ওসির



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)