Mamata Meets Amartya Sen: হাতে মমতার দেওয়া সরকারি নথি, জমি বিতর্কে মুখ খুললেন অমর্ত্য সেন
বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, প্রফেসর অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ির জমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য -যা এই প্রেস কনফারেন্সে তুলে ধরা হল, তা যদি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্বভারতী`র উপাচার্যের উচিত অবিলম্বে প্রফেসর অমর্ত্য সেনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া
সুতপা সেন ও প্রসেনজিত্ মালাকার: অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীয় জমি দখল করে বসে রয়েছেন। এমন অভিযোগে নোবেলজয়ীর কাছে একের পর এক নোটিস পাঠাচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই বিতর্কে আজ বড়সড় সংযোজন, অমর্ত্যের বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে ওই জমির নথি তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই জমি বিতর্ক নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন অমর্ত্য সেন।
আরও পড়ুন- 'শিল্প ধর্ম দ্বারা বিভক্ত নয়!' কঙ্গনা-উর্ফির মধ্যে পাঠান নিয়ে ধুন্ধুমার
ওই বিতর্ক নিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, যারা আমাকে হঠাত্ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছেন তাদের বলব তাদের বোধের উপরে আমরা যে খুব একটা আস্থা রয়েছে তা বলতে পারছি না। তাই এনিয়ে খুব বিশাল একটা ঝড় উঠছে তা বলা যুক্তিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে না। বিষয়টিকে বড় করার কোনও ইচ্ছে আমার নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্য়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন অমর্ত্য সেন। ওই মন্তব্যের পরপরই তাঁকে নিশানা করেছিল বিজেপি। ওই মন্তব্যের জেরেই কি জমি বিতর্ক চাগিয়ে তোলা হল? ইচ্ছেকৃতভাবে অপমান করা হচ্ছে? অমর্ত্য সেন বলেন, এখানে অপমানের কোনও কারণ দেখছি না। আমাকে জমি থেকে উত্খাতের চেষ্টা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনা করলেন, যে জমি নিয়ে ঝগড়া তার ইতিহাসটা কী। সবকিছু দেখে উনি বললেন, উনি রেকর্ডে যা দেখেছেন তাতে ওঁর একটা ধারনা হয়। সেই ধারনাটা হল আমি যা বলার চেষ্টা করছি তার সঙ্গে অনেকটাই মেলে। এনিয়ে তো আমার কিছু বলার নেই।
সরকারি নথি হাতে নিয়ে আজ শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান মমতা বন্দ্যোপাদ্যায়। নেবেল জয়ীর সঙ্গে এনিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, সাল ধরে ধরে জমির নথি বের করে তাঁর যা মনে হয়েছে তা হল অমর্ত্য যা বলছেন সেটাই সঠিক।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্যের উপরে ভিত্তি করে সত্যিটা বলতে চাই। সেই জন্য়ই আমার ছুটে আসা। সম্মানের সঙ্গে জমির কাগজ তুলে দিয়ে গেলাম। আগামিদিনে বিজেপি যেন এভাবে অমর্ত্য সেনকে আর অসম্মান করার চেষ্টা না করে। বিশ্বভারতীকে গৌরীকীকরণের চোখে দেখি না। অশ্রদ্ধা করা কিছু লোকেদের অভ্যাস। জমির ভান্ডার থেকে জমি দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতীকে। ১৯৮৪-এর পরের ল্যান্ড রেভিনিউ রিপোর্ট অনুযায়ী, যে জমিটা লিজে দেওয়া হয়েছিল তার পরিমাণ ১.৩৮ একর। এখন বিশ্বভারতীর দাবি, ১.২৫ একর জমি লিজে রাখার কথা! সেখানে অমর্ত্য সেন আরও ১৩ ডেসিমেল বেশি জমি অধিগ্রহণ করে রেখেছেন!' হিসেব কষে মমতা বুঝিয়ে দেন, বিশ্বভারতীর দাবি ভুল। কারণ রাজ্য সরকারের জমি রাজস্ব দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী-ই অমর্ত্য সেনের নামে ১৩৮ ডেসিমেল জমি রয়েছে।
মমতার ওই বক্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, প্রফেসর অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ির জমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য -যা এই প্রেস কনফারেন্সে তুলে ধরা হল, তা যদি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্বভারতী'র উপাচার্যের উচিত অবিলম্বে প্রফেসর অমর্ত্য সেনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া ! তবে দিদিমণিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার, বিশ্বভারতী একটি স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; বিশ্বভারতী'র উপাচার্য এবং বিজেপি সমার্থক নয়; বিশ্বভারতীতে উপাচার্য যা সিদ্ধান্ত নেবেন বা নিয়ে থাকেন -তার দায় বিজেপি'র নয়।