বিবাহিত `দিদি`র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক `ভাই`-এর! তারপরের ঘটনা ডেকে আনল যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি
জোর করে সুমনকে নিয়ে দীঘায় চলে যান শারিকা। তারপর বেলঘরিয়া ও মহেশতলা বাটায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে সম্পর্ক! সোশ্যাল মিডিয়ায় সেইসব ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করে ব্ল্যাকমেইল করছিল প্রেমিকা। ঘনিষ্ঠ ছবি সামনে আসতেই পরিচিত মহলে যারপরনাই অপমানিত হতে হচ্ছিল যুবককে। শেষমেশ অবসাদে আত্মহত্যার চরম পথ বেছে নিলেন যুবক। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে।
এক বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিষ্ণপুরের বগাখালি নিশিকান্ত পোলের বাসিন্দা বছর ১৯-এর সুমন মণ্ডল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বিশালক্ষী তলায় সুমনের দিদি চম্পা পণ্ডিতের শ্বশুরবাড়ি। দিদির শ্বশুবাড়িতে গিয়েই শারিকা জানা নামে ওই বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে আলাপ হয় সুমনের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে সুমনকে 'ভাই, ভাই' বলেই ডাকতেন শারিকা। কিন্তু ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক অন্য মাত্রা নেয়। ফোন নম্বর চালাচালি হয়। যোগাযোগ বাড়ে। বিবাহিত শারিকার সঙ্গে ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সুমন।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সম্পর্ক গভীর হতেই সুমনের কাছ থেকে দফায় দফায় টাকা চেয়ে চাপ দিতে শুরু করেন শারিকা। একইসঙ্গে বিয়ের জন্যও সুমনকে চাপ দিতে থাকেন ওই যুবতী। কিন্তু বিয়েতে প্রথমে রাজি ছিলেন না সুমন। বিয়েতে তাঁদেরও মত ছিল না। অভিযোগ, বিয়েতে সম্মতি না মিলতেই সুমনকে পুলিসের হাতে তুলে দেবে বলে হুমকি দিতে শুরু করেন শারিকা। এরপরই জোর করে সুমনকে নিয়ে দীঘায় নিয়ে চলে যান শারিকা। সেখান থেকে ফিরে প্রথমে বেলঘরিয়া ও তারপর মহেশতলা বাটায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন, 'কুকথায় ট্যাগ লাইন' অনুব্রতকে নজিরবিহীন আক্রমণ শতাব্দীর
সুমনের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, শারিকার এহেন চাপের মুখে বিয়েতে রাজি হয়ে যান তাঁরা। এদিকে বিয়েতে মত দেওয়ার পর শারিকা আবার সুমনের কাছ থেকে ৫০০০ টাকা চেয়ে বসেন। এবার সেই টাকা দিতে অস্বীকার করেন সুমন। অভিযোগ, সুমন টাকা না দিতেই শুরু হয়ে যায় ব্ল্যাকমেইল করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সুমনের সঙ্গে সমস্ত ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করে দেন শারিকা। বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা সামনে আসতেই আত্মীয়স্বজন, বন্ধুমহলে চূড়ান্ত অপমান, টিটকিরির শিকার হতে হয় সুমন মণ্ডলকে। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, এর জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সুমন। সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের জেরে কয়েকদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি।
এরপরই শনিবার সকালে বাড়ির অদূরে বাগানের মধ্যে উদ্ধার হয় ১৯ বছরের যুবকের ঝুলন্ত দেহ। দেখা যায়, গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সুমন। এই ঘটনায় প্রেমিকা শারিকার বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিস।