মুখোমুখি NASA ও ভারতের চন্দ্রযান, মহাকাশে অল্পের জন্য এড়ানো গেল দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদন: চাঁদের উত্তর মেরুর কাছে যেই সময় পৌঁছেছে নাসার লুনার রিকনেসেন্স অরবিটার (এলআরও), সেই একই সময় সেখানে উপস্থিত ছিল নাসার যানও। ভয়ঙ্কর এক সংঘর্ষ হতে যাচ্ছিল। যদিও কোনওক্রমে মহাকাশে এড়ানো গেল এক মারাত্মক দুর্ঘটনা। যদিও ঘটনাটি গত মাসের, তবে সোমবার তা প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। অক্টোবরে চন্দ্রযান-২ অরবিটারে লঞ্চ করেছিল ইসরো। 

জানা যায়, ২০ অক্টোবর ভারতীয় সময় সকাল ১১.১৫ মিনিট নাগাদ নাসা ও ভারতের চন্দ্রযানের মধ্যে যেখানে দূরত্ব থাকার কথা ছিল তিন কিলোমিটার। সেখানে কমতে কমতে ১০০ মিটারেরও কম হয়ে যায়। এই ঘটনায় নাসা ও ইসরো দুই সংস্থায় চরম অস্থিরতা তৈরি হয়। ‘কলিশন অ্যাভয়ড্যান্স ম্যানিউভর’ (ক্যাম) পদ্ধতি প্রয়োগ করে সেই সংঘর্ষ এড়ায় ইসরো। 

প্রায় এক মাস পর ইসরোর তরফে বিবৃতি দিয়ে জানান হয়, "দুই সংস্থাই এই সংঘর্ষ এড়াতে সব রকমভাবে চেষ্টা করেছিল। শেষমেশ ক্যাম পদ্ধতির মাধ্যমে এই সংঘর্ষ এড়ানো যায়। নাসা এবং ইসরো পারস্পরিকভাবে সম্মত হয়েছিল যে চন্দ্রযান-২ অরবিটার সিএএম ব্যবহার করবে।" প্রসঙ্গত, এই ক্যাম ডিজাইন করা হয়েছিল এমনই কোনও সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য৷ এর মাধ্যমে রেডিয়াল দূরত্ব বৃদ্ধি করা যায়। 

এই ব্যবস্থাটি চালানোর পর পোস্ট-ম্যানুভ ট্র্যাকিংও শুরু করে। যার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যাতে নতুন কক্ষপথে স অদূর ভবিষ্যতে LRO-এর আর কাছাকাছি আসতে না পারে। চন্দ্রযান-২ এবং নাসার চন্দ্র অরবিটার উভয়ই নিজেদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে করতে চাঁদের চারপাশে ঘুরে উত্তর মেরুতে একে অপরের কাছাকাছি আসে। প্রসঙ্গত, আর্থ অরবিটে স্যাটেলাইটগুলি মহাকাশের ধ্বংসাবশেষ এবং মহাকাশের কোনও বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি কমাতে একাধিক কৌশলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। ইসরো নিয়মিতভাবে এই ধরনের  পন্থা পরীক্ষা নিরীক্ষণ করে।

২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। ৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অরবিটার থেকে বিক্রমের ল্যান্ড করার কথা ছিল৷ কিন্তু অবতরণের শেষ ধাপে চাঁদের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বিক্রম। যদিও অরবিটারটি এখনও প্রদক্ষিণ করে চলেছে।