নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশজুড়ে গাড়ির বাজারে মন্দা। গত দুই দশকে সবথেকে নিম্নমুখী গাড়ির বিক্রি। গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই মাসে ৩৫.৯৫% কমেছে চার চাকার গাড়ির বিক্রি। চলতি বছরের জুলাই মাসে যাত্রীবাহি গাড়ির বিক্রিও কমেছে ৩০.৯৮%। এই নিয়ে টানা ৯ মাস নিম্নমুখী গাড়ির বিক্রি। প্রায় ১৯ বছর আগে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে দেখা গিয়েছিল এমন মন্দা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

পরিস্থিতি মোকাবিলায় খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাধিক যান প্রস্তুতকারক সংস্থা। বেশ কিছুদিন উত্পাদন কম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মারুতি সুজুকি। একই ছবি দু'চাকা ও তিন চাকার যানের বাজারেও। সেই কারণে চাকরি খোয়ানোর আশঙ্কায় ভুগছেন যান প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্মীরা। এ বিষয়ে নজর দিক সরকার, দাবি তাঁদের। দ্রুত জিএসটি-এর হার না কমালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছে ভারতে গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম (SIAM)।


চলতি বছরের জুলাইয়ে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবথেকে কম বিক্রি হয়েছে দু'চাকা ও চার চাকার যান। গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রায় ১৮.৭১% কম গাড়ি বিক্রি হয়েছে। দু'চাকা, তিন চাকা ও চার চাকার যান মিলিয়ে মোট ১৮,১৫,১৪৮টি গাড়ি বিক্রি হয়েছে ২০১৯-এর জুলাই মাসে। গত বছর জুলাইয়ে এই সংখ্যাটা ছিল ২২,৪৫,২২৩। দৃশ্যতই কমেছে বিক্রি। খরচ কমাতে ইতিমধ্যেই ৬% কর্মী ছাঁটাই করেছে মারুতি সুজুকি। সম্প্রতি নিসানে ১,৭১০ জন কর্মীকে ছাটাই করা হয়েছে।


যানবাহনের বিক্রি কমার কারণ কি?


ভারতে গাড়ির বাজারে মন্দার পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে বলে মত বাজার বিশেষজ্ঞদের। একাংশের মতে,  বর্তমানে বাজারে নগদ টাকার জোগান কম। ফলে, ঋণ নেওয়া থেকে পিছিয়ে আসছেন ক্রেতারা।  তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে গাড়ির বাজারে। সরকার রেপো রেট কমানোর মতো পদক্ষেপ নিলেও মিটছে না সমস্যা। সিয়ামের দাবি, ২৮% জিএসটির কারণেও পিছিয়ে আসছেন ক্রেতারা। সরকার অবিলম্বে জিএসটি-এর হার কমিয়ে ১৮% করুক, দাবি তাঁদের।



আবার সরকারি সিদ্ধান্তকেও পরোক্ষভাবে বিক্রি ও উত্পাদন কমার জন্য দায়ী বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতে শীঘ্রই বিএস সিক্স দূষণবিধি চালু হওয়ার কথা। তার আগে পর্যন্ত গাড়ি উত্পাদন কম রাখতে চাইছে বেশিরভাগ সংস্থা। গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় প্রায় ২৫.৬% কম গাড়ি উত্পাদন করেছে মারুতি সুজুকি। নতুন দূষণবিধি চালু হলে পুরানো উত্পাদনবিধির গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। সেই দিকটি বিচার করেই অল্প সংখ্যক গাড়ি তৈরী করছে সংস্থাগুলি।


পেট্রোল-ডিজেলের দামকেও দায়ী করছেন অনেকে। নীতি আয়োগের অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুত্চালিত গাড়ি প্রচলনের প্রস্তাবের কারণেও দু'চাকা ও তিন চাকার গাড়ির ক্রেতারা পিছিয়ে আসছেন বলে মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: সস্তা হচ্ছে বুলেট, কম দামে নতুন মডেল আনছে Royal Enfield


বাজার সম্পৃক্ত হওয়ার যুক্তিও দিয়েছেন অটোমোবাইল বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এক টানা ২-৩ বছর গাড়ির বাজার উর্দ্ধমুখী থাকার ফলে এখন সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছে গাড়ির বাজার। সেই কারণেই কমছে বিক্রি। সেক্ষেত্রে নতুন ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের গাড়ি তৈরীর ফলে ক্রেতা টানা সম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা। এই নীতি অনুসরণ করে বাজারে মন্দার মধ্যেও সুজুকির বাইকের বিক্রি জুলাইতে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুজুকির Gixxer SF-এর আকর্ষণীয় ডিজাইনই এর জন্য অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করছেন তাঁরা।


তবে, পরিস্থিতি বদলাবে কিনা তা এখনই আন্দাজ করতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। আপাতত উত্সবের মসরুমের বিক্রির দিকেই তাকিয়ে অটোমোবাইল সেক্টর।